‘পয়লা বৈশাখ বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ’
প্রকাশিত : ১৪:৫৬, ১৪ এপ্রিল ২০২৩
পয়লা বৈশাখ বাঙালির হাজার বছরের জাতীয়তাবাদী চেতনা আর অসাম্প্রদায়িক সাংস্কৃতিক ইতিহাস-ঐতিহ্যকে তুলে ধরে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উন্নত সমৃদ্ধ মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ ও বাঙালি জাতি গড়ে তুলতে এ চেতনার লালন-পালন ও বিকাশ সাধন করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্টজনেরা।
শিশু-কিশোরদের নিয়ে খেলাঘর ঢাকা মহানগরী কমিটির বাংলা নববর্ষ ১৪৩০ বরণ উৎসবে এসে এসব কথা বলেন তারা।
দেশের সবচেয়ে বড় শিশু-কিশোর সংগঠনটির ঐতিহ্যবাহী এ আয়োজনে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় নতুন প্রজন্মকে গড়ে তুলতে বাংলার সংস্কৃতিমনা মানুষকে মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশ নেওয়াসহ স্বত:স্ফূর্তভাবে আনন্দ-উচ্ছ্বাসে বাংলা নববর্ষ বরণে এগিয়ে আসারও আহ্বান জানান আলোচকরা।
জাতীয় সঙ্গীত এবং এসো হে বৈশাখ গানে বাংলা নতুন বছরকে আবাহনের মধ্য দিয়ে উৎসবের সূচনা করে খেলাঘরের ভাই-বোনেরা।
প্রধান অতিথি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আমরা স্বাধীন না হলে অন্ধকারে নিমজ্জিতই থাকতাম। এখন বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাঙ্খিত স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার আলোর অভিযাত্রায় আছি আমরা। এ পথে আমাদের এগিয়ে নেবে বাঙালি সংস্কৃতি এবং ইতিহাস-ঐতিহ্য।
বিশেষ অতিথি দৈনিক সমকালের সম্পাদক মোজাম্মেল হোসেন বলেন, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বাঙালি জাতির দুটি নিজস্ব দিন রয়েছে, যা অসাম্প্রদায়িক সর্বজনীন দিবস হিসেবে উদযাপিত হয়। একুশে ফেব্রুয়ারি ও পয়লা বৈশাখ- এ দিন দুটি পুরো জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে। এই বাংলা নববর্ষ উদযাপন করা না গেলে বা হাজার বছরের বাঙালি সংস্কৃতি বাদ দিলে জীবন বাঁচবে না। তাই পয়লা বৈশাখ ও মঙ্গল শোভাযাত্রা আয়োজনে বাধা দিতে সাম্প্রদায়িক অপশক্তির আস্ফালন রুখে দেয়ার আহ্বান জানান তিনি।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শহীদুল্লাহ মনে করেন, বাঙালির পয়লা বৈশাখ বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। হাজার বছরের এই অর্জন বিশ্ব দরবারে আমাদের পরিচিত করে একটি মানবিক ও অসাম্প্রদায়িক জাতি হিসেবে। তাই সব বাধা নির্মূল করে এগিয়ে যেতে হবে সামনের দিকে। উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার সেই শক্তি অর্জনের প্রেরণাও দেয় নববর্ষ বরণ উৎসব বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
নিগৃহীত বিজ্ঞান শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডল বলেন, মঙ্গল শোভাযাত্রা না করা গেলে মঙ্গল বারতা থাকতে দেবে না মৌলবাদীরা। দেশ-জাতিকে পশ্চাৎপদ রেখে স্বার্থসিদ্ধির ষড়যন্ত্রে লিপ্ত তারা। সর্বজনীন উৎসবগুলোতে বর্ণাঢ্য ঝলমলে আয়োজনসহ বিজ্ঞান চিন্তা-চেতনার প্রসারই পারবে এ ষড়যন্ত্রের দাঁতভাঙা জবাব দিতে।
উৎসবে সভাপতিত্ব করেন খেলাঘর ঢাকা মহানগরী কমিটির সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুর রহমান শহীদ।
শুভেচ্ছা জানিয়ে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরো সদস্য কামরুল হাসান ও বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল ইসলাম গোলাপ। সংগঠনের পক্ষে ছিলেন খেলাঘর কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রণয় সাহা, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অধ্যক্ষ শরীফ আহমেদ, হান্নান চৌধুরী ও হাসান তারেক, সহ সাধারণ সম্পাদক সুনীল কুমার সরকার মিন্টু, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অশোকেশ রায়, হাফিজুর রহমান মিন্টু, গোবিন্দ বাগচী, অনিকেত আচার্য, শামীম আহমেদ ও সুজন মজুমদার, সদস্য সুবর্ণা আরফিন, রেজাউল করিম, সামিনা জাহান, শামীম সিকদারসহ ঢাকা মহানগরী কমিটি ও বিভিন্ন শাখা আসরের সংগঠকরা।
উৎসবে গান, কবিতা, নাচসহ বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানমালা পরিবেশন করে মহানগরীর বিভিন্ন শাখা আসরের ভাই- বোনেরা।
এএইচ
আরও পড়ুন