বাড়ছে ডেঙ্গু রোগী, মশা নির্মূলে যুক্তরাষ্ট্রকে অনুকরণ (ভিডিও)
প্রকাশিত : ১২:২৮, ১১ মে ২০২৩
এ বছর বর্ষা মৌসুম শুরুর বেশ আগে থেকেই বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা। হাসপাতালগুলোতে গত চার মাসে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১ হাজার। জলবায়ু পরিবর্তনের পাশাপাশি দ্রুত নগরায়নে ডেঙ্গু নির্মূল বেশ চ্যালেঞ্জিং বলছেন বিশেষজ্ঞরা। এদিকে, মশা নির্মূলে যুক্তরাষ্ট্রের অনুকরণে পানিতে বিশেষ ধরনের ব্যাকটেরিয়ার ব্যবহার করতে যাচ্ছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন।
রাজধানীর বাসাবোর কালী মন্দির এলাকা। লাগোয়া কচুরিপানা ভর্তি এই জলাশয় মূলত ডেঙ্গুর হটস্পট। যেখানে প্রতিনিয়তই জমছে নানা ধরনের বর্জ্য, প্লাস্টিক বোতল, ডাব, নারকেলের খোল, খালি কৌটাসহ উচ্ছ্বিষ্ট। মিরপুর, যাত্রাবাড়ি, মুগদা, ধানমন্ডিসহ বিভিন্ন স্থানে রয়েছে ডেঙ্গুর এমন হটস্পট।
মশা নিয়ন্ত্রণে কীটনাশক ছিটানো ও প্রতিটি ওয়ার্ডে ফগিংসহ বিভিন্ন কার্যক্রম চালু থাকলেও তা অপর্যাপ্ত বলছেন বাসিন্দারা। ওষুধের কার্যকারিতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন কেউ কেউ।
স্থানীয়রা জানান, মাঝে মাঝে ওষুধ দিয়ে যায় কিন্তু কোনো কাজ হয় না। কেরাসিনের গন্ধে মশা মরে না। মশার যন্ত্রণায় আমরা থাকতে পারিনা। দিনের বেলায়ও কয়েল জ্বালিয়ে বসতে হয়।
কীটনাশক ও জনবল সংকটের কথা বলছেন জনপ্রতিধিরা।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর চিত্ত রঞ্জন দাস বলেন, “যে পরিমাণ কীটনাশ পাই তা এবং এর প্রয়োগের মেশিনের বৃদ্ধির প্রয়োজন রয়েছে।”
এদিকে অসময়ে রাজধানীর হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর ভীড়। চলতি মাসের প্রথম একসপ্তাহেই মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৯৫ জন। মার্চ-এপ্রিল মাসে ভর্তি হয় ১৪৪ জন রোগী।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাব বলছে, জানুয়ারি থেকে মে’র প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ১ হাজার ৮৯ জন রোগী। এর মধ্যে রাজধানীতেই ৫৯৬ জন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডেঙ্গুর সর্বোচ্চ সংক্রমণ শুরু হয় জুলাই থেকে। কিন্তু এবার জানুয়ারি থেকেই আক্রান্ত রোগীরা হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন।
মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিচালক ডা. মো. নিয়াতুজ্জামান বলেন, “ডেঙ্গু চলে গিয়েছে এটা বলা যাবে না, একটা-দুটা করে হলেও ডেঙ্গু রোগী ছিল। কিন্তু এপ্রিল শেষ সপ্তাহ এবং মার্চে দেখা যাচ্ছে ডেঙ্গু রোগী দ্রুত গতিতে বাড়ছে।”
এদিকে মশা নিধনে এ মাসের মধ্যেই জলাশয়, ড্রেনসহ বিভিন্ন পানির উৎসে প্রয়োগ করা হবে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আনা বিশেষ এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জোবায়দুর রহমান বলেন, “এই ব্যাকটেরিয়াগুলো মশার ডিমকে খেয়ে ফেলবে। এই ব্যাকটেরিয়া প্রয়োগের জন্য ইতিমধ্যে মাঠ পর্যায়ে পরীক্ষা চালানো হয়েছে, ল্যাবরেটরি টেস্ট করেছি। সবগুলোতে শতভাগ কার্যকারিতা পেয়েছি। এখন এটা কেনার প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে।”
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, ২০১৯ সালে সবচেয়ে বেশি মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়। যা ১ লাখের উপর। আর সবচেয়ে বেশি মারা যায় ২০২২ সালে, মোট ২৮১ জন।
এএইচ
আরও পড়ুন