ঢাকা, শনিবার   ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

পুরান ঢাকার ওয়াসার স্ট্রিট হাইড্রেন্ট ঘিরে সক্রিয় পানি চুরির সিন্ডিকেট

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:৫৬, ১২ মে ২০২৪ | আপডেট: ১৪:০৩, ১২ মে ২০২৪

দিন-রাত সবসময়ই এভাবে কলগুলো থেকে পানি ঝড়ে

দিন-রাত সবসময়ই এভাবে কলগুলো থেকে পানি ঝড়ে

বুড়িগঙ্গার তীরে গড়ে ওঠা ৪শ’ বছরের পুরনো শহর ঢাকা। প্রাচীন এ শহরে নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করতে ঢাকার নবাবদের অনেক উদ্যোগ ছিল। শুধুমাত্র সুপেয় পানি নাগরিকদের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে নবাব আব্দুল গণি ১৮৭৪ সালের দিকে পুরনো ঢাকার অনেক স্থানে স্ট্রিট হাইড্রেন্ট বসিয়েছিলেন। তবে পাইপলাইনে পানি সরবরাহ নিশ্চিত হওয়ায় এখন হাইট্রেন্টের সংখ্যা কমে ২শ’র কাছাকাছি এসে দাঁড়িয়েছে।
 
শহরের লালবাগ, ললিত মহন দাস, হোসানী দালান, চাঁদনী ঘাট, হাজারীবাগ, নবাবপু রোড়সহ পুরান ঢাকার আলিগলিতে কলগুলো সেই ইতিহাসের স্বাক্ষর বহন করে টিকে আছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ না হওয়ায় কলগুলোর এখন দুরাবস্থা। 

কলগুলো পুরোপুরি বন্ধ হয় না, তাই দিন কিংবা রাত সবসময় পানি ঝড়ে। শহরের অন্যান্য অংশে যখন পানির আকাল, এখানে তখন অপচয় হচ্ছে ওয়াসার পানি।

ঢাকা ওয়াসার মডস জোন-২র পানির কলগুলো যুগ যুগ ধরে অভিভাবকহীন। এলাকার সমস্ত দোকান এখান থেকে পানি সংগ্রহ করলেও বাসাবাড়িতে এদের উপযোগিতা নেই বললেই চলে। বড় বড় জারে মটর দিয়ে পানি টেনে মিনারেল ওয়াটার হিসেবে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী এখানকার পানি বিক্রি করছে।

পানি উপচে পড়ে ওই এলাকায় জনগণের চলাচলেও ব্যাপক অসুবিধা তৈরি করছে। নারী, শিশু ও বৃদ্ধদের খুবই ঝুঁকি নিয়ে চলাফেরা করতে হয়। সড়কে দুর্ঘটনা তো হরহামেশাই ঘটছে। বিষয়টি কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় কাউন্সিলরকে জানানো হলেও কোন সুফল মেলেনি।

ওয়াসার মডস জোন-২ নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নজরুল ইসলামের কাছে বার বার অভিযোগ করে কোন সুরাহা হয়নি। কী পরিমাণ পানি এসব কল থেকে অপচয় হয়, জানতে চাইলে তার কাছে এর কোন সঠিক হিসেব নেই বলে জানান।

২১৮, লালবাগ রোড়ের বাসিন্দা সোবহান চৌধুরী বলেন, নিরবচ্ছিনভাবে পানি পড়ায় রাস্তা অনেক পিচ্ছিল হয়ে গেছে। গত ৫ রমজানে সকালে আমি পা পিছলে পড়ে যাই। আমার পায়ের ক্ষতস্থানে ৩টি সেলাই লেগেছে। 

১৯নং ললিত মহনদাস সড়কের সদ্দিক মিয়ার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, চারতলা বাড়ির পানির ট্যাংকি ভরা হচ্ছে রাস্তায় বসানো কল থেকে পাইপের মাধ্যমে পানি নিয়ে। বাড়ির বাসিন্দাদের জিজ্ঞাসা করা হলে তারা বলেন, এখান থেকে ফ্রি পানি পাচ্ছি। তাছাড়া আমাদের পানির বিলও কম দিতে হয়।  

এছাড়া ডুরি আঙ্গুল, হাজারিবাগ, চৌধুরীবাজার মোড়সহ আরো বেশ কিছু জায়গার কলগুলোরও একই চিত্র। বছরের পর বছর এভাবে রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপচয় হচ্ছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যেন কোন মাথাব্যাথা নেই। 

এলাকাবাসীর দাবি, যেহেতু সবার বাড়িতে পাইপলাইনে পানি সরবরাহ নিশ্চিত করেছে ওয়াসা, তাই এসব কলের এখন আর প্রয়োজন নেই। কলগুলো বন্ধ করে দেয়াই উপযুক্ত সমাধান হতে পারে। সরকারি পানির অবৈধ ব্যবসা করে কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠির পকেট ভারি করার সুযোগ রাখার কোন যৌক্তিক কারণ থাকতে পারে না।

এএইচ


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি