ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ১৪ নভেম্বর ২০২৪

যে কোন উদ্ভুত পরিস্থিতি মোকাবেলায় সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে র‌্যাব : কমান্ডার আরাফাত ইসলাম

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৬:০৫, ১৪ জুন ২০২৪ | আপডেট: ১৬:০৭, ১৪ জুন ২০২৪

যে কোন উদ্ভুত পরিস্থিতি মোকাবেলায় র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে  বলে মন্তব্য  করেছেন সংস্হাটির লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার আরাফাত ইসলাম। তিনি বলেন, কুরবানি পশুর হাট কেন্দ্রিক  চাঁদাবাজি ঠেকাতে র‌্যাবের গোয়েন্দা নজরদারি ও টহল বৃদ্বি সহ সার্বিক  নিরাপত্তা ব্যবস্হা আগের চেয়ে অনেকাংশে জোরদার করা হয়েছে।

একই সাথে পশুর হাট কেন্দ্রিক বিভিন্ন ধরণের চাঁদাবাজি ঠেকাতে র‌্যাবের গোয়েন্দা নজরদারি ও টহল অব্যাহত আছে বলে জানিয়েছেন কমান্ডার আরাফাত ইসলাম । শুক্রবার দুপুরে পবিত্র ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষে রাজধানীর গাবতলির কোরবানির পশুর হাটের নিরাপত্তা ব্যবস্হা পরিদর্শন ও সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে   (র‌্যাব)'র আইন ও গণমাধ্যম শাখার  পরিচালক কমান্ডার আরাফাত ইসলাম এসব কথা বলেন। 

এসময় র‌্যাবের অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত  ছিলেন। পশু ব্যবসায়ী ও ইজারাদারদের উদ্দেশে তিনি বলেন, কোরবানির এক হাটের গরু অন্য হাটে নেওয়া যাবে না। এটা আইনবিরোধী। এ ধরনের কোনও অভিযোগ পেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রতিটি হাটে সবাইকে সতর্ক করা হয়েছে, কেউ এক হাটের গরু অন্য হাটে নিতে পারবে না।

কমান্ডার আরাফাত ইসলাম বলেন, র‌্যাব অপরাধ দমনের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ করে জনসাধারণের পাশে থেকে বিভিন্ন সেবামূলক কাজের মাধ্যমে সর্বস্তরের মানুষের মনের আস্থা অর্জন করেছে। দেশের যেকোন দূর্যোগ মুহূর্তে র‌্যাব সবসময় বন্ধু হয়ে জনসাধারণের পাশে দাঁড়িয়েছে। 

র‌্যাবের আইনও গণমাধ্যম শাখার মূখপাত্র  কমান্ডার আরাফাত ইসলাম বলেন, পবিত্র ঈদ-উল-আযহা ইসলাম ধর্মাবল্বীদের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও উৎসবমুখর ধর্মীয় অনুষ্ঠান। এই উৎসবকে কেন্দ্র করে পশুর হাট, কোরবানী, ঈদের জামায়াত, চামড়া বেচা-কেনাসহ বেশ কিছু কার্যক্রম পরিচালিত হয়। এক্ষেত্রে যে কোন ধরণের অপতৎপরতা রুখতে সচেষ্ট রয়েছে এলিট ফোর্স র‌্যাব।

জাল টাকা ব্যবসায়ী   ও অসাধু চক্রের  সদস্যদের হুশিয়ারি  দিয়ে তিনি আরো বলেন, 
 কোরবানীর হাটে পশু ক্রয়/বিক্রয়ে প্রচুর আর্থিক লেনদেন হয়। এক্ষেত্রে অসাধু চক্রের মাধ্যমে জাল টাকার ছড়াছড়ির আশংকা থাকে। জাল টাকা তৈরি ও সরবরাহের সাথে জড়িত চক্রের বিরুদ্ধে  আমাদের গোয়েন্দা নজরদারি রয়েছে। 

তিনি বলেন, হাটগুলোতে জাল টাকা সনাক্তে হাটে স্থাপিত র‌্যাব ফোর্সেস এর কন্ট্রোল রুমে জাল নোট সনাক্তের মেশিন স্থাপন করে সহায়তা করছে। সবাইকে র‌্যাবের এই সেবা গ্রহণ করতে অনুরোধ করা হলো। 

অপরাধীদের হুশিয়ারি দিয়ে  তিনি আরাফাত ইসলাম বলেন, কোরবানির হাট কেন্দ্রিক ও মার্কেটে চুরি-ডাকাতি, ছিনতাই, প্রতারক চক্র, দালাল, মলম পার্টি এবং অজ্ঞান পার্টির তৎপরতা বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এসব অনাকাঙ্খিত ঘটনা রুখতে র‌্যাবের গোয়েন্দা নজরদারি ও টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে। 

পশু ব্যবসায়ী ও পাইকারদের উদ্দেশ্য কমান্ডার আরাফাত ইসলাম বলেন, কোরবানির পশুর হাটে অসুস্থ গবাদি পশু, কৃত্রিম উপায়ে রাসায়নিক দ্রব্য অথবা ইনজেকশন ব্যবহার করে দ্রুত সময়ে মোটাতাজা করা ও অস্বাস্থ্যকর গবাদি পশু শনাক্তকরণে র‌্যাবের নজদারি রয়েছে।

র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার মূখপাত্র  বলেন,  পশু চিকিৎসকের সহায়তায় এসকল গবাদি পশু শনাক্ত করে বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে র‌্যাবের ম্যাজিস্ট্রেটগণ ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। পশুর হাটগুলোর হাসিল ঘরে সিটি কর্পোরেশন/স্থানীয় সরকার কর্তৃক নির্ধারিত হাসিল তালিকা আকারে প্রদর্শিত থাকতে হবে। নির্ধারিত হারের বেশি হাসিল নেয়া প্রতিরোধে র‌্যাবের নজরদারি থাকবে। কেউ নির্ধারিত হারের বেশি হাসিল আদায় করলে/করতে চাইলে র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ কর্তৃক ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

পশুর হাট কেন্দ্রিক বিভিন্ন ধরণের চাঁদাবাজি ঠেকাতে র‌্যাবের গোয়েন্দা নজরদারি ও টহল কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে জানিয়ে আরাফাত ইসলাম বলেন, ঢাকামুখী পশু বহণে চাঁদাবাজী রুখতে র‌্যাবের গোয়েন্দা নজরদারি ও নিয়মিত টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে। সড়কপথে নিরাপত্তা বিধানে র‌্যাবের মোবাইল টহল পরিচালিত হচ্ছে ।

 এ বছর অনলাইনে প্রচুর কোরবানীর পশু ক্রয়-বিক্রয় হচ্ছে জানিয়ে র‌্যাবের এ কর্মকর্তা  জানান, এ ক্ষেত্রে অনিয়ম ও প্রতারণা প্রতিরোধে র‌্যাব সাইবার মনিটরিং সেল সার্বক্ষণিক ভার্চুয়াল জগতে নজরদারী করছে। অনলাইনে পশু কেনা বেচার লেনদেনের ক্ষেত্রে সর্তকতা অবলম্বনের জন্য র‌্যাব ফোর্সেস সকল পরামর্শ দিচ্ছে। 

তিনি আরো বলেন, এ বিষয়ে  কোন অভিযোগ থাকলে র‌্যাব কন্ট্রোল রুমে অভিযোগ করা জন্য অনুরোধ করা হলো। কোরবানির পশুর চামড়ার বাজার ধস নামাতে মুনাফালোভী সিন্ডিকেটের কারসাজির বিরুদ্ধে র‌্যাবের গোয়েন্দা নজরদারী  রয়েছে। 

কোরবানির পশুর হাটে আগত মহিলাদের উত্যক্ত/ইভটিজিং/যৌন হয়রানি রোধকল্পে মোবাইলকোর্টসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে জানিয়ে র‌্যাবের  লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক  হুশিয়ারি দিয়ে বলেন, 
কেউ কোন ধরণের হেনস্থার শিকার হলে অবশ্যই র‌্যাব কন্ট্রোল রুম ও র‌্যাব টহল দলকে জানানোর জন্য অনুরোধ করা হলো। এক্ষেত্রে র‌্যাব ফোর্সেস কঠোর হস্তে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে জানাম তিনি। 

পশুর হাটে নিরাপত্তা ব্যবস্হা জোরদার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এছাড়া পশুর হাট/তৎসংলগ্ন এলাকায় র‌্যাবের নিয়মিত টহলের পাশাপাশি যে কোন অনাকাঙ্খিত ঘটনা রোধকল্পে আশে পাশের এলাকায় র‌্যাবের গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে এবং সাদা পোশাকে বিভিন্ন জনবহুল ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানসমূহে গোয়েন্দা কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। 

চামড়া সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উল্লেখ করে র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার আরাফাত ইসলাম বলেন, এবারের ঈদে চামড়া ব্যবসা নিয়ে কোনো সিন্ডিকেটকে র‍্যাব বরদাস্ত করবে না। চামড়ার মৌসুমি ব্যবসায়ীদের সতর্ক করেছেন তিনি।। 

কমান্ডার আরাফাত বলেন, ঈদুল আজহায় কোরবানি পশুর চামড়া বেচাকেনা নিয়ে কোনো সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য বরদাশত করা হবে না। 
 চামড়ার ব্যবসা নিয়ে যাতে কোনো এলাকার মধ্যে কোনো গোলমালের সৃষ্টি না হয়। সে ব্যাপারে আমাদের গোয়েন্দা কার্যক্রম চলবে।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে র‍্যাবের মুখপাত্র বলেন, নিয়ম অনুযায়ী গরুর হাট ইজারা দেওয়া হয়েছে। রাস্তার ওপরে বা হাটের সীমানার বাইরে গরু নিয়ে বসেছে কি না সেটি নিয়ে ইজারাদারদের সঙ্গে কথা বলবো। যাতে ব্যাপারীরা কোনো অসুবিধায় না পড়েন।

এক হাটের পশু অন্য হাটে নেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে র‍্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, কেউ যদি এরকম কার্যক্রম করে থাকে, যা আইন বিরোধী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সবাইকে সতর্ক করা হয়েছে কেউ এক হাটের পশু অন্য হাটে নিতে পারবে না। এ ব্যাপারে গরু বিক্রেতারা অভিযোগ জানালে অবশ্যই যথাযথ পদক্ষেপে নেওয়া হবে।

সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে র‌্যাব সতর্ক অবস্হানে রয়েছে জানিয়ে কমান্ডার আরাফাত ইসলাম বলেন, দেশের সকলের ঈদ-উল-আযহা নির্বিঘ্নে উদ্যাপন ও সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণসহ যে কোন উদ্ভুত পরিস্থিতি মোকাবেলায় সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে র‌্যাব। যে কোন জরুরী প্রয়োজনে পশু ব্যবসায়ীসহ দেশের সকল জনগণকে র‌্যাবের হটলাইন নাম্বার ০২৫৫৬৬৯৯৯৯, ০১৭৭৭৭২০০২৯ এর মাধ্যমে  যোগাযোগ করার জন্য পরামর্শ ও অনুরোধ করা হলো।
 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি