র্যাবকে স্মার্ট বাহিনী হিসেবে আত্মপ্রকাশে ৫ দফা কর্মপন্থা ঘোষণা
প্রকাশিত : ১৮:৩৯, ২৩ জুন ২০২৪
২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ হিসেবে রূপান্তরের অংশ হিসেবে র্যাব ফোর্সেসও একটি আধুনিক, যুগোপযোগী ও প্রযুক্তিনির্ভর ‘‘স্মার্ট বাহিনী’’ হিসেবে আত্মপ্রকাশে দৃঢ় প্রত্যয়ে রুপান্তরিত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) অতিরিক্ত আইজিপি ব্যারিস্টার মো: হারুন অর রশীদ।
রোববার দুপুর সাড়ে ১২ টায় র্যাব ফোর্সেস সদর দপ্তর কুর্মিটোলায় অধিনায়ক সম্মেলনে উগ্র জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস নির্মূল, অবৈধ অস্ত্র, মাদক উদ্ধার এবং কিশোর গ্যাং প্রতিরোধে বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করে নবাগত র্যাব মহাপরিচালক ৫ দফা দিক নির্দেশনা ও কর্মপন্থা ঘোষণা এবং সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে র্যাবের নবাগত মহাপরিচালক অতিরিক্ত আইজিপি ব্যারিস্টার মো: হারুন অর রশীদ এসব কথা বলেন। অধিনায়ক সম্মেলনে র্যাবের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা সহ অন্যান্যরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে স্মার্ট র্যাব বাহিনীর কর্মপরিধি বৃদ্ধিকরণ প্রসঙ্গে অতিরিক্ত আইজিপি ব্যারিস্টার মো: হারুন অর রশীদ বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিক প্রচেষ্টায় র্যাব বাহিনীর সক্ষমতা বহুলাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিগত দিনগুলোতে র্যাব ফোর্সেস এর কারিগরী, প্রযুক্তিগত ও অবকাঠামোগত ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। এর ফলে এই বাহিনীর আভিযানিক ও প্রশাসনিক দক্ষতা বৃদ্ধি পেয়েছে। অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা বজায় রাখা বিষয় উল্লেখ করে র্যাব মহাপরিচালক বলেন, বাহিনীর অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সকলকে সচেষ্ট থাকার কথা উল্লেখ করে বলেন। র্যাব এর পবিত্র পোশাকের সম্মানহানি হয় এমন কাজ করা থেকে বিরত থেকে SOP অনুযায়ী তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করার আহবান জানান তিনি।
সংস্থাটির প্রধান বলেন, র্যাব ফোর্সেস এর প্রতিটি সদস্যের পোশাক-পরিচ্ছেদ, চলাফেরাসহ সকল ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ শৃঙ্খলা বজায় রাখা, চেইন অব কমান্ড অনুসরণ এবং শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজ হতে বিরত থাকার বিষয়ে নির্দেশনা প্রদান করেন। দেশের প্রচলিত আইন ও মানবাধিকার সমুন্নত রেখে নিষ্ঠার সাথে কাজ করার আহবান জানিয়ে র্যাব মহাপরিচালক অতিরিক্ত আইজিপি ব্যারিস্টার মো: হারুন অর রশীদ জানান, বাংলাদেশের সংবিধান ও মানবাধিকার সমূহ সমুন্নত রাখতে সংশ্লিষ্ট সকলকে সচেষ্ট থেকে বাংলাদেশের সংবিধান, আইন, বিধি ও উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনার ভিত্তিতে আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করার আহবান জানান তিনি।
হারুন অর রশীদ জানান, এ ব্যাপারে পুরোপুরি সচেতন থেকে মানবাধিকার, জেন্ডার সংবেদনশীলতা ইত্যাদি বিষয়কে সমুন্নত রেখে আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করার উপর গুরুত্বরোপ করেন। এ থেকে ন্যূনতম বিচ্যুতি কিংবা ব্যত্যয় যাতে না হয় সে বিষয়ে সর্তক করেন। সকল কার্যক্রমে আইনের যথাযথ প্রয়োগ করা হচেছ দাবি করে র্যাবের এ দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, রাষ্ট্রীয় শৃংখলা, জননিরাপত্তা এবং অপরাধ দমন ও নিয়ন্ত্রণসহ সকল আভিযানিক কার্যক্রমে আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করার উপর র্যাব মহাপরিচালক গুরুত্বারোপ করেন।
আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা, জননিরাপত্তা ও জনশৃঙ্খলা, অপরাধ দমন ও নিয়ন্ত্রনের সমসাময়িক চ্যালেঞ্জগুলোর কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সমাজে মাদক, জঙ্গি, সন্ত্রাস, কিশোর গ্যাং, Financial Crime, Online প্রতারনা, সাইবার ক্রাইম এর মত বিভিন্ন ধরণের অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে। র্যাব এবং অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো দীর্ঘদিন ধরেই এই অপরাধ সমূহের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে আসছে। তিনি র্যাব ফোর্সেস এর সকল সদস্যকে আইনানুযায়ী নিয়মতান্ত্রিকভাবে অভিযান জোরদার করার বিষয়ে সুস্পষ্ট দিকদির্দেশনা প্রদান করেন। দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স উল্লেখ করে র্যাব মহাপরিচালক বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুর্নীতি দমন ও প্রতিরোধের মাধ্যমে দেশের প্রকৃত আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য একটি সুশাসন ভিত্তিক রাষ্ট্রীয় কাঠামো প্রতিষ্ঠার জন্য দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতির ঘোষণা দিয়েছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী র্যাব মহাপরিচালক দুর্নীতির বিরুদ্ধে র্যাবের দৃঢ় অবস্থান পুনঃব্যক্ত করেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অভ্যন্তরীণ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ২০০৪ সালে
প্রতিষ্ঠা লাভ করে। র্যাব প্রতিষ্টালগ্ন থেকে শুরু করে অদ্যাবধি পর্যন্ত প্রায় ১ লক্ষ ৪৮ হাজারের অধিক মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে এসেছে এবং প্রায় ৬ হাজার ৮ কোটি ২৬ লক্ষ টাকার অধিক মূল্যমানের মাদকদ্রব্য উদ্ধার করেছে।
আরও পড়ুন