‘বাবা আর কখনও ফোন রিসিভ করবে না’
প্রকাশিত : ১৮:৪৪, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
আনোয়ার হোসেন হন্য হয়ে ছুটছেন। একবার মর্গের সামনে যাচ্ছেন। আরেকবার যাচ্ছেন পুলিশ কন্ট্রোল রুমে। আবার যাচ্ছেন মেডিকেলের গেটে যেখানে লাশ এন্ট্রি করা হচ্ছে সেখানে। কিন্তু না। কোথাও নেই। কোথাও ভাইকে ভাইকে খুঁজে পাচ্ছেন না তিনি। ভাই আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছেন তা বুঝেছেন গতরাতেই। কিন্তু সেই ছাই হওয়া লাশটা তো পাবেন।
আনোয়ার হোসেনরা দুই ভাই। গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে। আনোয়ার হোসেন ও তার ভাই আহসান হোসেন পুরানো ঢাকার চকবাজারে ব্যাগের কারখানায় কাজ করছেন গত ১০ বছর।
আনোয়ার জানান, আহসান সব সময় হাসিখুশী। গতকাল সন্ধ্যায় তিন বছর বয়সী মেয়ের সঙ্গে অনেক্ষণ কথা বলেছে। এর পর দুই ভাই এক সঙ্গে নাস্তা করেছে।
সিলিন্ডার বিস্ফোরণের পর থেকে আর ভাইকে খুঁজে পায়নি আনোয়ার হোসেন। সকাল থেকে তার তিন বছর বয়সী মেয়েটি বাবার সঙ্গে কথা বলার জন্য তিনবার ফোন করেছে। প্রতিবার মেয়েকে বলা হয়েছে, তোমার আব্বু ব্যস্ত। কাজ সেরে তোমাকে ফোন করবে।
কেঁদে কেঁদে আনোয়ার হোসেন বলেন, আমি এই মেয়েকে কী বলে সান্ত্বনা দেব। কীভাবে বলব, তার বাবা আর কখনো ফোন রিসিভ করবে না।
বুধবার রাত ১০টা ১০ মিনিটে নন্দ কুমার দত্ত সড়কের শেষ মাথায় মসজিদের পাশে ৬৪ নম্বর হোল্ডিংয়ের ওয়াহিদ ম্যানসনে আগুনের সূত্রপাত হয়। পরে তা আশপাশের ভবনেও ছড়িয়ে পড়ে।
খবর পেয়ে অগ্নি নির্বাপক বাহিনীর ৩৭টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। পরে হেলিকপ্টারে করে পানি ছিটিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হয়।
অবশেষে ১০ ঘণ্টার চেষ্টায় বৃহস্পতিবার সকালে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এখন পর্যন্ত ৮১ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। লাশের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
আ আ//এসএইচ/
আরও পড়ুন