রাজধানীতে কালবৈশাখী ঝড়ে নিহত ৪
প্রকাশিত : ২১:৫৬, ১৭ মে ২০১৯ | আপডেট: ২৩:৪০, ১৭ মে ২০১৯
রাজধানীর ওপর দিয়ে বয়ে গেলো কালবৈশাখী ঝড়। ইফতারির পর হঠাৎ ৯৩ কিলোমিটার বেগের এ ঝড়ে এ পর্যন্ত ৪ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। এরইমধ্যে প্যান্ডেল ভেঙে বায়তুল মোকাররম মসজিদে মারা গেছেন এক মুসল্লি। বাড্ডায় দেয়াল ধসে মারা গেছেন অন্তত তিনজন। ভেঙে পড়েছে গাছের ডাল। জৈষ্ঠ্য মাসে এমন আরও কালবৈশাখী মাঝে মধ্যে হানা দেবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
শুক্রবার সন্ধ্যায় ইফতারের পরপর হঠাৎ এ কালবৈশাখী ঝড়-বৃষ্টি শুরু হয়। এতে নিহত দুইজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন- বুলবুল বিশ্বাস (২৮) ও তপন (২৭)।
বাড্ডা থানার ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, উত্তর বাড্ডার প্রাণ সেন্টারের পাশে একটি দেয়াল ধসে তিনজন আহত হয়। এর মধ্যে ২ জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ও একজনকে পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয়। তবে তিনজনই নিহত হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়েছে বলে তিনি জানান।
এদিকে ঝড়ে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে তাঁবু ছিঁড়ে খুঁটির আঘাতে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় আরও ২০ থেকে ২২ জন আহত হন। নিহতের নাম শফিকুল ইসলাম (৩৬)। তার বিস্তারিত পরিচয় জানা যায়নি।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া জানান, বায়তুল মোকাররমে হতাহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনার পর চিকিৎসকরা একজনকে মৃত ঘোষণা করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে এসআই বাচ্চু জানান, ইফতারের পরে নামাজ পড়ার জন্য মুসল্লিরা প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এ সময় ঝড়ের কবলে পড়ে হতাহতের এ ঘটনা ঘটে।
ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষে দায়িত্বরত কর্মকর্তা রাসেল সিকদার জানান, সন্ধ্যার তীব্র কালবৈশাখী ঝড়ে বায়তুল মোকারম মসজিদ প্রাঙ্গণের দক্ষিণ অংশে স্থাপিত অস্থায়ী তাঁবু ভেঙে পড়ে হতাহতের ওই ঘটনা ঘটে। এছাড়া ঝড়ে কয়েক জায়গায় গাছ উপড়ে গেছে।
আবহাওয়াবিদ শাহীনুল ইসলাম জানান, সন্ধ্যা ৭টা ২ মিনিটে ঢাকায় ৬৫ কিলোমিটার বেগে কালবৈশাখী বয়ে যায়। তবে সন্ধ্যা ৭টা ৫ মিনিটে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ঝড়ের গতিবেগ ছিল ৯৩ কিলোমিটার, এটাই ছিল ঢাকায় ঝড়ের সর্বোচ্চ গতিবেগ।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, বৈশাখটা যেমন খরতাপে কেটেছে, জৈষ্ঠ্যটাও একইভাবে কাটবে। মাঝে একটু আধটু বৃষ্টিপাত কিছুটা আরাম দিলেও দিনের বেলায় সূর্য তার তেজ নিয়েই হাজির হবে। ফলে তাপমাত্রার তেমন কোনো পরিবর্তন হবে না।
রাজধানীর এ বৃষ্টিপাত বেশিক্ষণ চলবে না। কিছুটা তাপ কমবে। আবার বাড়বে। এভাবেই চলবে। খুলনা ও ঢাকার কিছু কিছু অঞ্চলের ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ চলছে। এটা অব্যাহত থাকবে।
আবহাওয়া অধিদফতর এক পূর্বাভাসে আরও জানিয়েছে, সাগরে লঘুচাপ আছে। সোমবার নাগাদ তাপমাত্রা আরও বাড়বে। তবে আগামী পাঁচদিনে বৃষ্টিপাতের প্রবণতাও কিছুটা বাড়বে। আর শনিবার সন্ধ্যায় ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট অঞ্চলে এবং রংপুর, রাজশাহী বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টির সঙ্গে ঝড়ো অথবা দমকা হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এছাড়া দেশের সর্বত্র আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক ও আকাশ মেঘলা থাকবে। তবে কালবৈশাখী ও ভারী বর্ষণের কোনো সতর্কতা নেই।
শুক্রবার (১৭ মে) দেশে সর্বোচ্চ তাপমাত্র রেকর্ড করা হয়েছে যশোরে, ৩৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি। আর সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে রাজারহাটে, ৩৭ মিলিমিটার।
আরকে//
আরও পড়ুন