সম্রাটকে বের করতেই যুবলীগ কর্মীদের বিক্ষোভ, পুলিশের লাঠিচার্জ
প্রকাশিত : ০৯:২১, ৭ অক্টোবর ২০১৯ | আপডেট: ০৯:২৪, ৭ অক্টোবর ২০১৯
বহুল আলোচিত ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি (সদ্য বহিস্কৃত) ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটকে গ্রেফতার করে রাজধানীর কাকরাইলে নিজ কার্যালয়ে আনা হয়। তাকে সঙ্গে রেখেই ঐ কার্যালয়ে অভিযান চালায় র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। প্রায় ৫ ঘণ্টা অভিযান চালানোর পর সন্ধ্যা ৭টার দিকে সম্রাটকে বের করে নিয়ে যাওয়ার সময় তাকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেন প্রায় অর্ধশতাধিক যুবলীগের নেতাকর্মী। তবে লাঠিচার্জ করে তাদের হটিয়ে দিয়েছে পুলিশ।
জানা যায়, গতকাল রোববার ভোররাতে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের সীমান্তবর্তী গ্রাম কুঞ্জুশ্রীপুর থেকে সহযোগী আরমানসহ (যুবলীগের সদ্য বহিষ্কৃত সহ-সভাপতি) সম্রাটকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর সকালেই তাকে ঢাকায় র্যাবের সদর দপ্তরে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে দুপুরে তাকে সঙ্গে নিয়েই কাকরাইলে সম্রাটের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অভিযান চালায় র্যাব। সন্ধ্যা ৭টার দিকে সম্রাটকে তার কার্যালয় থেকে বের করে নিয়ে যাওয়ার সময় তাকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে বিক্ষোভ শুরু করেন তার অর্ধশতাধিক কর্মী সমর্থক।
‘সম্রাট ভাইয়ের গ্রেফতার মানি না মানবো না’সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায় তাদের। তবে র্যাব পরিবেষ্টিত সম্রাটের কাছাকাছি তাদের ভিড়তে দেয়নি রমনা থানা পুলিশ। পুলিশ এসময় লাঠিচার্জ করে তাদের এনবিআর ভবনের দিকে সরিয়ে দেয়।
বিক্ষোভরত এক জনের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, তাদের নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর প্রতিবাদ জানাতে তারা এখানে (কাকরাইলে) এসেছেন। তবে নিজের নাম জানাতে রাজি হননি তিনি। সংগঠনের কোন ইউনিটের কর্মী তাও বলতে চাননি।
কাকরাইলের ওই কার্যালয় থেকে বের করার পর সম্রাটকে কেরানীগঞ্জের কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। ওই অফিসে অস্ত্র, গুলি, ইয়াবা, বিদেশি মদের পাশাপাশি দুটো ক্যাঙ্গারুর চামড়া উদ্ধার হওয়ায় বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে তাৎক্ষণিক সম্রাটকে ৬ মাসের কারাদণ্ড দেন র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত।
এদিকে রোববার সকালে গ্রেফতার হওয়ার পর বিকালেই অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িত থাকা ও দলীয় শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হওয়ার অভিযোগে সম্রাটকে যুবলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়।
উল্লেখ্য, গেল মাসে চলমান ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজিসহ নানা অভিযোগের কারণে যুবলীগ নেতা সম্রাটের নাম আলোচনায় আসে। অভিযানে যুবলীগ, কৃষক লীগ ও আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা র্যাব ও পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন। কিন্তু সম্রাট ছিলেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। অভিযান শুরুর প্রথম তিন দিন তিনি দৃশ্যমান ছিলেন। ফোনও ধরতেন। এরপরই তিনি গা ঢাকা দেন। দেশত্যাগের চেষ্টাও করেন।
১৮ সেপ্টেম্বর থেকে ঢাকায় ক্লাবগুলোতে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু করে র্যাব। প্রথম দিন ফকিরাপুলের ইয়ংমেনস ক্লাবে অভিযান চালায় র্যাব। এরপরই গুলশান থেকে গ্রেপ্তার করা হয় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ক্লাবটির সভাপতি খালেদ হোসেন ভুঁইয়াকে। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও রাজনৈতিক অঙ্গনের লোকেরা মনে করেন, ঢাকায় ক্যাসিনো ব্যবসার অন্যতম নিয়ন্ত্রক সম্রাট।
অভিযান শুরুর পর গত ২২ সেপ্টেম্বর সম্রাটের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞাসংক্রান্ত একটি আদেশ দেশের বিমানবন্দর ও স্থলবন্দরগুলোতে পাঠানো হয়। তাঁর ব্যাংক হিসাবও তলব করা হয়।
এমএস/
আরও পড়ুন