করোনাতঙ্কে পাল্টে গেছে রাজধানী ঢাকার চিত্র
প্রকাশিত : ১২:২৩, ১৮ মার্চ ২০২০
করোনাভাইরাসের আতঙ্কে পাল্টে গেছে রাজধানী ঢাকার চিত্র। সড়কে যানজট কম, কর্মস্থলে বাড়তি সচেতনতা, মানুষ মধ্যে দেখা গেছে অতিরিক্ত সতর্কতা। সেই সঙ্গে সারাদেশের স্কুল কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করায় রাজধানী ছেড়েছে এখানকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ুয়া অধিকাংশ শিক্ষার্থী। বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া হলে অবস্থান করা শিক্ষার্থীরা। ছুটি ঘোষণার পর থেকেই তারা গ্রামমুখী হয়েছেন।
বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলোনায় বাংলাদেশে আক্রান্তের সংখ্যা কম হলেও ঝুঁকিতে পিছিয়ে নেই। চীন থেকে ছড়িয়ে পড়া ভাইরাসটি বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে প্রবাসীদের মাধ্যমেই। বিদেশ ফেরত প্রবাসীদের থেকে সংক্রামিত হয়েছেন কেউ কেউ।
গত কয়েকদিনে ১০ রোগী শনাক্ত হওয়ার পর সারাদেশের পাশাপাশি প্রভাব পড়তে শুরু করেছে ঢাকার পথে-ঘাটে। কর্মব্যস্ত দিন হলেও প্রয়োজন ছাড়া পথে নামছেন না নগরবাসী। যাত্রী না পাওয়ায় নগরীতে গণপরিবহনের সংখ্যাও কমে গেছে। এতে দিনের বেলাও রাজধানীর ব্যস্ততম সড়কগুলো মোটামুটি ফাঁকাই থাকছে। চিরাচরিত যানজটের নগরী ঢাকার চিত্র অনেকটাই পাল্টে গেছে। ট্রেন ও লঞ্চে যাত্রী সংখ্যা কমে গেছে। গত দুইদিন বায়ুমান সূচকে ঢাকার অবস্থান শীর্ষ ১০-এর নিচে। অথচ করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার আগে বায়ুদূষণের সূচকে শীর্ষ ছিল ঢাকা।
এছাড়াও করোনা ভাইরাস আক্রান্ত দেশগুলোতে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি থাকায় ক্রমেই ছোট হয়ে আসছে এয়ারলাইনসগুলোর রুট। এর প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশেও। ইরোপের দেশগুলোর সঙ্গে বিমান পথে যোগাযোগ এক প্রকার বন্ধ রয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের কাতার, সৌদি আরব ও কুয়েত করোনাভাইরাসের কারণে বিমান চলাচল স্থগিত রাখায় এই রুটে ফ্লাইট বন্ধ হয়ে গেছে। কলকাতা, দিল্লি চেন্নাই, তথা ভারতের সঙ্গে বিমান পথের সব রুটই বন্ধ।
অপরদিকে, করোনা আতঙ্কে ক্রেতা সংকটে পড়েছে ঢাকার বিপনী বিতানগুলো। অতি প্রয়োজন ছাড়া বিপনীবিতানে যাচ্ছেন না ক্রেতা-দর্শনার্থীরা। এতে বেচাকেনা কমেছে প্রায় ৫০ শতাংশ। আটকে গেছে ব্যবসায়ীদের বিপুল বিনিয়োগ।
সংক্রমণ এড়াতে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও নেয়া হয়েছে সর্তকতামূলক ব্যবস্থা। বিপনী বিতান কিংবা জনসমাগমস্থল এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
বিনোদন পার্ক, সিনেমাহল সহ জনসমাগমস্থল আপাদত এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
অপরদিকে, সংক্রমণ রোধে স্থগিত করা হয়েছে দেশের অভ্যন্তরের সব ধরনের ক্রীড়া ইভেন্ট (খেলাধুলা)। আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত ঘরোয়া ও ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত আন্তর্জাতিক সব খেলা স্থগিত করা হয়েছে। ফলে রাজধানী ছেড়েছেন খেলোয়াড়রাও।
বিদেশ থেকে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা থাকায় আবাসিক হোটেলগুলোতেও বোডারদের উপস্থিতি কম।
যারা রাজধানীতে রয়েছেন তাদের মধ্যে দেখা গেছে অতিরিক্ত সতর্কতা। পথে বাহির হলে মুখে মাস্ক ছাড়া কেউ ই বের হচ্ছেন না। তবে ভাইরাসটি থেকে রক্ষা পেতে হলে এ সতর্কতা পর্যাপ্ত নয়। বিশ্বের অধিকাংশ দেশ এর চেয়েও বাড়তি সতর্কতা নিয়েছে।
চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞদের মত এখন থেকেই আরও সতর্ক হওয়া জরুরী।
এসএ/
আরও পড়ুন