ঢাকা, সোমবার   ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

ঢাবিতেও করোনার জিনোম সিকোয়েন্সিং সম্পন্ন

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২০:৪০, ২৩ মে ২০২০ | আপডেট: ২১:১৬, ২৩ মে ২০২০

পাঁচটি করোনা ভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্সিং সম্পন্ন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চতর বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্রে স্থাপিত কোভিড-১৯ ল্যাবে সংগৃহীত নমুনা থেকে পাঁচটি ভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্সিং করা হয়।

শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়টির করোনা ভাইরাস রেসপন্স টেকনিক্যাল কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. শরীফ আখতারুজ্জামান স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এই সিকোয়েন্স ডাটা ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের আন্তর্জাতিক তথ্যভাণ্ডার ‘গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ অন শেয়ারিং অল ইনফ্লুয়েঞ্জা ডাটা’ কর্তৃক গৃহীত হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জীববিজ্ঞান অনুষদের সংশ্লিষ্ট গবেষক ও বিশেষজ্ঞরা করোনা ভাইরাসের বিস্তৃত জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের যে প্রকল্প হাতে নিয়েছেন তার অংশ হিসেবেই এই সিকোয়েন্সিং সম্পন্ন করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় অর্থসংস্থান সাপেক্ষে ধাপে ধাপে আরও ১০০টি ভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্সিং করা হবে বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন। দ্বিতীয় পর্যায়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিদেরকেও সিকোয়েন্সিংয়ের আওতায় আনা হবে।

এর আগে দেশে করোনা (কোভিড-১৯) ভাইরাসের পূর্ণাঙ্গ জিনোম সিকোয়েন্সিং উন্মোচন করে বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট এবং চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়। গত ৮ মে কৃষি মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়। 

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাকের নির্দেশনায় বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটে বাস্তবায়নাধীন পাটবিষয়ক মৌলিক ও ফলিত গবেষণা প্রকল্প (জুট জিনোম প্রকল্প) এবং চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় যৌথভাবে বাংলাদেশে সংক্রমিত নভেল করোনার ৭টি নমুনা ভাইরাসের পূর্ণাঙ্গ জিনোম সিকোয়েন্সিং সম্পন্ন করে।

জিনোমের তথ্যগুলো জিআইএসএআইডি ডেটাবেসে জমা দেওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটের ওয়েবসাইটেও আপলোড করা হয়েছে। উন্মোচিত জিনোম তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, সিকোয়েন্সগুলোর সঙ্গে সৌদি আরব, রাশিয়া, অস্ট্রেলিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিকোয়েন্সের মিল রয়েছে। উন্মোচিত জিনোম সিকোয়েন্সের একটি জিনোমের ক্ষেত্রে ৭টি স্থানে, ২টিতে ৫টি স্থানে এবং ৪টিতে ৪টি স্থানে মিউটেশন বা পরিবর্তন লক্ষ করা গেছে।

এ ছাড়া বিশেষভাবে উল্লেখ্য, ৫১১ ও ৫১৭ নম্বর নমুনার সিকোয়েন্সে একই স্থানে ৩৪৫ বেইসপেয়ারের ডিলিশন পরিলক্ষিত হয়, যা সিঙ্গাপুরের কিছু জিনোমের ক্ষেত্রে দেখা গেছে। অর্থাৎ ওই দুটি জিনোমে এনএস৮ জিনটির অনুপস্থিতি লক্ষ করা গেছে।

বর্তমানে উন্মোচিত জিনোম সিকোয়েন্সের অধিকতর বিশ্লেষণের কাজ চলমান রয়েছে। উন্মোচিত সিকোয়েন্স তথ্য ডায়াগনস্টিক টেস্টগুলোর ডিজাইন, মূল্যায়ন এবং চলমান প্রাদুর্ভাবটি দমনে সম্ভাব্য বিকল্প পন্থা শনাক্তকরণে সহায়ক হবে বলে আশা করা যায়।

এরপর গত ১২ মে চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশন এক বিজ্ঞপ্তিতে দেশে প্রথমবারের মতো করোনা ভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্স সম্পন্ন হয়েছে বলে জানানো হয়। এটাই দেশে সর্বপ্রথম করোনার জিনোম সিকোয়েন্স উদঘাটন করেছে -এমনটাই দাবি তাদের। এ জিনোম সিকোয়েন্স ভাইরাসটির গতি-প্রকৃতি ও প্রতিরোধের উপায় খুঁজতে সহায়তা করবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।

ড. সমীর সাহার নেতৃত্বাধীন প্রতিষ্ঠানটির পক্ষে সিকোয়েন্সটি জমা দিয়েছেন অনুজীব বিজ্ঞানী ড. সেজুঁতি সাহা। চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশনের ঢাকা ল্যাবে সম্পূর্ণ গবেষণাটি সম্পন্ন হয়েছে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানায় তারা।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গবেষণা সম্পন্নের পর নিয়মানুযায়ী তারা এ জিনোম সিকোয়েন্সটির তথ্য-উপাত্ত গ্লোবাল জিনোম ডাটাবেজ GISAID-এ জমা দিয়েছেন। খুব শিঘ্রই এ জিনোম সিকোয়েন্সটির তথ্য প্রকাশ করা হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সাধারণত ভাইরাসের সিকোয়েন্স করা কিছুটা দুঃসাধ্য। সেখানে করোনাভোইরাসের মতো সংক্রমণশীল ভাইরাসের সিকোয়েন্স করা খুবই কঠিন। চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশন ভাইরাসটিকে নিস্ক্রিয় করে মেটাজিনোমিক সিকোয়েন্সিংয়ের মাধ্যমে সম্পূর্ণ জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আশা করছি, খুব শীঘ্রই বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানের নমুনা থেকে আরও কিছু ভাইরাসের সিকোয়েন্সিং করতে সক্ষম হব। যা আমাদের ভাইরাসটির উৎপত্তি, গতি প্রকৃতি বুঝতে ও প্রতিরোধের উপায় খুঁজতে সহায়তা করবে।

তাদের গবেষণার কাজটি সম্পন্ন করতে স্বাস্থ্য অধিদফতর, আইইডিসিআর, বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন এবং চ্যান জুকারবার্গ বায়োহাব ইনিশিয়েটিভ সার্বিক সহযোগিতা করেছে বলেও জানায় চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশন।

এমএস/এনএস


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি