ঢাকা, সোমবার   ৩১ মার্চ ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

ইকোনমিস্টের দাবি ঢাকাতেই করোনা আক্রান্ত সাড়ে ৭ লাখের বেশি

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:৩২, ৬ জুন ২০২০

Ekushey Television Ltd.

বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানে করোনা ভাইরাস ঠেকাতে আরোপিত লকডাউন শিথিল করা হয়েছে। ফলে এই ছোঁয়াচে ভাইরাস খুব দ্রুতই ছড়িয়ে পড়ছে দক্ষিণ এশিয়ায়। শুধুমাত্র রাজধানী ঢাকাতে আক্রান্তের সংখ্যা সাড়ে সাত লাখ ছাড়িয়েছে বলে দাবি করেছে ব্রিটেনের প্রভাবশালী সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্ট। 

শুক্রবার আইসিডিডিআর,বির বরাত দিয়ে বাংলাদেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা নিয়ে এক প্রতিবেদনে এ দাবি করেছে লন্ডনের এই সাময়িকী।

এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে সরকারিভাবে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের যে সংখ্যা জানানো হচ্ছে প্রকৃত সংখ্যা তার চেয়েও অনেক বেশি। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশ ভারত, পাকিস্তানেও করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা সরকারের প্রকাশিত পরিসংখ্যানের চেয়ে বেশি।

‘বাংলাদেশ, ভারত এবং পাকিস্তানে দ্রুত বাড়ছে সংক্রমণ’- শিরোনামের প্রতিবেদনে ইকোনমিস্ট বলছে, কম পরীক্ষার অর্থই হচ্ছে- প্রকৃত চিত্র আরও বেশি খারাপ হতে পারে।

ইকোনমিস্ট বলছে, আইসিডিডিআর,বির কর্মকর্তা জন ক্লেমেনসের অনুমান, বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতেই করোনা সংক্রমণের সংখ্যা ইতোমধ্যে সাড়ে সাত লাখ ছাড়িয়ে থাকতে পারে। তবে সরকারের তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার পর্যন্ত বাংলাদেশে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৬০ হাজার ৩৯১ জন; যাদের প্রায় অর্ধেকই ঢাকার।

ব্রিটিশ এই সাময়িকী বলছে, করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে জারিকৃত লকডাউনের বিধি-নিষেধের বেশিরভাগই গত সপ্তাহ থেকে তুলে নিতে শুরু করেছে বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং ভারত। ১৭০ কোটি মানুষকে মুক্ত করে দেয়ায় বিপর্যস্ত অর্থনীতির এই অঞ্চলের এক পঞ্চমাংশ স্বস্তিতে ফিরবে। কিন্তু লকডাউন প্রত্যাহার করে নেয়ায় সংক্রমণ আবারও দ্রুতগতিতে বাড়তে পারে।

ইকোনমিস্ট বলছে, তিন দেশে সরকারিভাবে প্রকাশিত সাড়ে ৩ লাখের বেশি আক্রান্ত এবং প্রায় ৯ হাজার মানুষের মৃত্যু নিয়ে পরিসংখ্যানকে অপেক্ষাকৃত পরিমিত দেখাচ্ছে। তবে এখনও অনেক মানুষ আক্রান্ত হলেও গণনার বাইরে রয়েছেন; লকডাউন প্রত্যাহারের আগে থেকেই তা নিয়ে ভয় ছিল। এখন সেই ভয় আরও বাড়ছে।

‘বর্তমান ধারায় প্রতি দুই সপ্তাহে আক্রান্তের সংখ্যা দ্বিগুণ হচ্ছে। তবে কিছু মডেলে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে, এই অঞ্চলে করোনা সর্বোচ্চ চূড়ায় পৌঁছাবে আগামী জুলাইয়ের শেষের দিকে। শুধু তাই নয়, সেই সময়ে সরকারি পরিসংখ্যানেও আক্রান্ত ৫০ লাখে পৌঁছাতে পারে এবং মৃত্যু ছাড়াতে পারে দেড় লাখ।’

ঢাকার বেসরকারি একটি হাসপাতালের একজন চিকিৎসক ইকোনমিস্টকে বলেছেন, একটু বেশি হাঁচি হলেই ধনীরা থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর অথবা ভারতে চিকিৎসার জন্য যেতেন। কিন্তু বর্তমানে কোভিড-১৯ বা অন্যান্য অসুস্থতা নিয়েও দেশের অভিজাত হাসপাতালগুলোতেও তাদের ভর্তি হওয়া প্রায় অসম্ভব।

মর্গে, কবর স্থানে এবং শ্মশানঘাটে জায়গা খুঁজে পাওয়াও চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ঢাকার উপকণ্ঠে নারায়ণগঞ্জের একটি পৌরসভার কবরস্থানে স্বাভাবিক সময়ে আড়াইশর মতো মানুষকে দাফন করা হয়। কিন্তু গত মাসে এই কবরস্থানে ৫৭৫ জনকে দাফন করা হয়েছে; যাদের মধ্যে মাত্র ৭০ জন করোনা পজিটিভ ছিলেন বলে সরকারি হিসেবে বলা হয়েছে।

বন্দরনগরী চট্টগ্রামে কবর খনন কাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ফরিদ উদ্দিন বলেন, কারণ যাই হোক না কেন, ক্ষতি যা হওয়ার তা হয়ে গেছে। অশ্রুসজল চোখে তিনি বলেন, গত চারদিন ধরে তিনি এবং তার দলের সদস্যরা ঘুমানোর সময় পাচ্ছেন না। 

ফরিদ বলেন, অনেক বেশি মৃত্যু। আমাদের ওপর প্রচণ্ড চাপ তৈরি হয়েছে। দয়া করে আমাদের জন্য প্রার্থনা করুন যেন সৃষ্টিকর্তা আমাদের ক্ষমা করে দেন এবং রোগটিকে তুলে নেন।
এসএ


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি