ব্রাজিলে প্রাণহানি ৩৫ হাজার, আক্রান্ত সাড়ে ৬ লাখ
প্রকাশিত : ০৯:২৪, ৬ জুন ২০২০
করোনায় দিশেহারা লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল। যেখানে প্রতিনিয়ত ভয়ানক রূপ নিচ্ছে ভাইরাসটি। সময়ের সাথে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমণ, ভারি হচ্ছে স্বজন হারাদের মিছিল।
আক্রান্তে দ্বিতীয সর্বোচ্চ দেশটি একদিন আগেই প্রাণহানিতে মৃত্যুপুরী ইতালিকেও ছাড়িয়ে গেছে। কার্যকরি ভ্যাকসিন বা টিকা এখন পর্যন্ত হাতে না পাওয়ায় চরম বিপর্যয়ে পড়েছে বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম দেশ ব্রাজিল। এতে ভেঙে পড়েছে দেশটির চিকিৎসা ব্যবস্থা। যাতে হুমকির মুখে পড়েছে লাতিন আমেরিকার অন্যান্য অঞ্চল ও দেশগুলোকে।
অন্যদিকে, জেঁকে বসা ভাইরাসটির এমন ভয়াবহ চিত্রে কঠোর সমালোচনার মুখে পড়েছেন প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারো। এর জন্য গণমাধ্যমকে দায়ী করেছেন তিনি।
এদিকে, ব্রাজিলের এই করুণাবস্থা চরম সংকটে ফেলেছে সহগোত্রীয় দেশগুলোকে। বিশেষ করে মেক্সিকো, পেরুতে হু হু করে বাড়ছে আক্রান্ত, দীর্ঘ হচ্ছে লাশের সারি। চিলি, এল সালভেদর, গুয়েতেমালা ও নিকারগুয়া, আর্জেন্টিনা ও পানামার মতো দেশগুলাতেও সংখ্যাটা কম নয়।
ব্রাজিলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে বিশ্বখ্যাত জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড ৩০ হাজার ১৩৬ জনের দেহে মিলেছে করোনা সংক্রমণ। এতে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ৬ লাখ ৪৬ হাজার ৬ জনে দাঁড়িয়েছে। নতুন করে প্রাণ গেছে ১ হাজার ৮ জনের। এ নিয়ে দেশটিতে মৃতের সংখ্যা ৩৫ হাজার ৪৭ জনে ঠেকেছে।
সময়ের সাথে আক্রান্তের হার পাল্লা দিয়ে বাড়লেও সে তুলনায় কম সুস্থতার সংখ্যা। তারপরও লাতিন আমেরিকার দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৩ লাখের বেশি মানুষ করোনা থেকে পুনরুদ্ধার হয়েছেন।
আক্রান্ত ও প্রাণহানির এমন হারে বিশ্ব সাস্থ্য সংস্থার আশঙ্কার চেয়ে জটিল অবস্থা দেখছে ব্রাজিল। সংস্থাটি গতমাসের শেষের দিকে বলেছিল, ‘চলমান অবস্থা অব্যাহত থাকলে আগামী আগস্টের মধ্যে লাতিন আমেরিকার দেশটিতে মৃতের সংখ্যা সোয়া লাখ ছাড়িয়ে যেতে পারে। শুধু তাই নয়, এ অঞ্চলের অন্যান্য দেশেও ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে করোনা।’
কিন্তু বাস্তবচিত্র আরও ভয়াবহ। আগামী আগস্ট মাস আসতে আসতে প্রাণহানি দেড় লাখ ছাড়িয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন দেশটির বিশেষজ্ঞরা।
এদিকে, লাতিন আমেরিকার আরেক দেশ পেরুতে আক্রান্ত ১ লাখ প্রায় ৮৭ হাজার ছাড়িয়েছে। যেখানে প্রাণহানি হয়েচে ৫ হাজার ১৬২ জনের। চিলিতে সংক্রমিতের সংখ্যা ১ লাখ সাড়ে সাড়ে ২২ হাজার, সেখানে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৩৭০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
লাতিন আমেরিকার দেশগুলোর মধ্যে ব্রাজিলের পরেই সর্বোচ্চ মৃত্যুর দেশ এখন মেক্সিকো। যেখানে আক্রান্ত ১ লাখ সাড়ে ১০ হাজার ছাড়িয়েছে, প্রাণ গেছে এখন পর্যন্ত ১৩ হাজারের বেশি মানুষের। ইতিমধ্যেই দেশটি প্রাণহানির হারে যুক্তরাষ্ট্রকেও ছাড়িয়ে গেছে।
ইকুয়েডরে আক্রান্ত সাড়ে ৪১ হাজারের ছাড়িয়েছে। প্রাণ গেছে সেখানে সাড়ে ৩ হাজারের বেশি মানুষের।
আর্জেন্টিনায় ২১ পেরিয়েছে আক্রান্ত, মারা গেছে সেখানে ৬৩২ জন। এছাড়াও পানামায় আক্রান্ত প্রায় ১৫ হাজার, দেশটির ৩৭০ জন মানুষের প্রাণ কেড়েছে করোনা।
এআই//