ধুকছে লাতিন আমেরিকা, ব্রাজিলেই প্রাণহানি ৩৬ হাজার
প্রকাশিত : ১০:০৮, ৭ জুন ২০২০
প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাস এবার কঠিনভাবে ভোগাচ্ছে লাতিন আমেরিকার দেশগুলোকে। ব্রাজিল, পেরু, চিলি আর মেক্সিকোর মতো দেশগুলোতে ভয়াবহ তাণ্ডব চালাচ্ছে ভাইরাসটি।
মহাদেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনার শিকার প্রায় ১৪ লাখ মানুষ। যেখানে প্রাণ ঝরেছে ষাট হাজারের বেশি মানুষের। এর মধ্যে সবচেয়ে সংকটাবস্থা মহাদেশটির সবচেয়ে বৃহৎ দেশ ব্রাজিলে। যেখানে করোনায় প্রায় ৩৬ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। ভাইরাসটির ভুক্তভোগী দেশটির পৌনে সাত লাখ মানুষ।
আর এতে করে কঠোর সমালোচনার মুখে পড়েছেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারো। এর জন্য গণমাধ্যমকে দায়ী করেছেন তিনি।
ব্রাজিলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে বিশ্বখ্যাত জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় ২৭ হাজার ৫৮১ জনের দেহে মিলেছে করোনা সংক্রমণ। এতে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ৬ লাখ ৭৩ হাজার ৫৮৭ জনে দাঁড়িয়েছে। নতুন করে প্রাণ গেছে ৯১০ জনের। এ নিয়ে দেশটিতে মৃতের সংখ্যা ৩৫ হাজার ৯৫৭ জনে ঠেকেছে।
সময়ের সাথে আক্রান্তের হার পাল্লা দিয়ে বাড়লেও সে তুলনায় কম সুস্থতার সংখ্যা। তারপরও লাতিন আমেরিকার দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৩ লাখের বেশি মানুষ করোনা থেকে পুনরুদ্ধার হয়েছেন।
আক্রান্ত ও প্রাণহানির এমন হারে বিশ্ব সাস্থ্য সংস্থার আশঙ্কার চেয়ে জটিল অবস্থা দেখছে ব্রাজিল। সংস্থাটি গতমাসের শেষের দিকে বলেছিল, ‘চলমান অবস্থা অব্যাহত থাকলে আগামী আগস্টের মধ্যে লাতিন আমেরিকার দেশটিতে মৃতের সংখ্যা সোয়া লাখ ছাড়িয়ে যেতে পারে। শুধু তাই নয়, এ অঞ্চলের অন্যান্য দেশেও ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে করোনা।’
কিন্তু বাস্তবচিত্র আরও ভয়াবহ। আগামী আগস্ট মাস আসতে আসতে প্রাণহানি দেড় লাখ ছাড়িয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন দেশটির বিশেষজ্ঞরা।
এদিকে, লাতিন আমেরিকার আরেক দেশ পেরু আক্রান্তের শীর্ষ আটে উঠেছে। দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১ লাখ প্রায় ৯২ হাজার মানুষের দেহে মিলেছে করোনার সংক্রমণ। যেখানে প্রাণহানি হয়েছে ৫ হাজার ৩০১ জনের।
চিলিতে সংক্রমিতের সংখ্যা সোয়া লাখ ছাড়িয়েছে। সেখানে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৫৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
লাতিন আমেরিকার দেশগুলোর মধ্যে ব্রাজিলের পরেই সর্বোচ্চ মৃত্যুর দেশ এখন মেক্সিকো। যেখানে আক্রান্ত ১ লাখ সাড়ে ১৩ হাজার ছাড়িয়েছে, প্রাণ গেছে এখন পর্যন্ত সাড়ে ১৩ হাজারের বেশি মানুষের। ইতিমধ্যেই দেশটি প্রাণহানির হারে যুক্তরাষ্ট্রকেও ছাড়িয়ে গেছে।
ইকুয়েডরে আক্রান্ত সাড়ে ৪১ হাজার ছাড়িয়েছে। প্রাণ গেছে সেখানে সাড়ে ৩ হাজারের বেশি মানুষের। বর্তমানে সেখানে কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে।
আর্জেন্টিনায় ২২ পেরিয়েছে আক্রান্ত, মারা গেছে সেখানে ৬৪৮ জন। এছাড়াও পানামায় আক্রান্ত প্রায় ১৬ হাজার ছাড়িয়েছে, দেশটির ৩৮৬ জন মানুষের প্রাণ কেড়েছে করোনা।
এমন অবস্থায় লাতিন আমেরিকার দেশগুলো কার্যকরি ভ্যাকসিনের অপেক্ষায় দিনগুনছি। যে হারে সংক্রমণ বাড়ছে, তাতে অবস্থা আরও সংটময় হতে পারে।
এআই//