ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪

করোনা রোগী কী খাবেন, কী খাবেন না

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:২২, ১০ জুন ২০২০

বর্তমান পৃথিবীতে বড় আতঙ্কের নাম করোনা ভাইরাস। করোনা ভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত না হয়ে নিজে ও জনগণকে কিভাবে সচেতন করা যায়, সে বিষয়ে আমাদের চেষ্টা করতে হবে। আমি, আপনি কেউ কিন্তু এই ভাইরাস থেকে নিরাপদ নই।

তাছাড়া বিশ্বব্যাপী ছড়ানো এই ভাইরাসের প্রতিষেধক এখনো আবিষ্কৃত হয়নি। কিন্তু কিছু বেসিক বিষয় আছে, সেগুলো মেনে চলে এই প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। তার মধ্যে খুবই গুরুত্বপূর্ণ হলো খাদ্যাভ্যাস। কারণ এর মাধ্যমেই আমরা সঠিক রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সক্ষমতা বাড়াতে পারি।

যাদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কম বা অন্যান্য বড় অসুখ ভুগছেন। যেমন- ডায়বেটিক, হৃদরোগ, অ্যাজমা রোগীরা এই ভাইরাসের আক্রান্ত হওয়া বেশি ঝুঁকির মধ্যে আছেন। এক্ষেত্রে আমরা আমাদের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে যা আছে তা দিয়ে প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় যোগ করতে পারি।

আসুন আমরা জেনে নেই একজন করোনা রোগীর জন্য উপযুক্ত খাবারগুলো কী কী?

১. খেতে হবে পর্যাপ্ত টাটকা ও পুষ্টিকর খাবার, প্রচুর তাজা ফলমূল ও শাক-সবজি।

২. এ সময়ে ভিটামিন-ডি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়াটা জরুরী, কারণ ভিটামিন-ডি ভাইরাস ও ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া নির্মূলে শক্তিশালী ভূমিকা রাখে।

৩. দুধ, ডিম, গরুর কলিজা, কর্ড লিভার অয়েল, দই, পনির, মাখন, টুনা মাছ, মাশরুম ইত্যাদি খাবারে পাওয়া যাবে ভিটামিন-ডি। এছাড়া সূর্যের রোদও এই ভিটামিনের ভালো উৎস।

৪. ফ্লু-র বিরুদ্ধে কার্যকরী ভূমিকা রাখে ভিটামিন-সি। তাই মৌসুমি টক ফল, ক্যাপসিকাম, পেঁপে, ব্রকোলি, পালং শাক, টক দইসহ ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ অন্যান্য খাবার পর্যাপ্ত পরিমাণে খাবেন।

তবে এই ভিটামিন যেহেতু শরীরে মজুদ থাকে না, তাই খাবারগুলো পর্যাপ্ত পরিমাণে রোজই খেতে হবে।

৫. সেই সাথে প্রচুর পানি (দিনে দুই থেকে তিন লিটার) ও তরল পান করুন।

৬. চিনি ও চিনিযুক্ত খাবার বর্জন করুন; কারণ যে-কোনো প্যাথোজেন (রোগ সংক্রামক জীবাণু) সুগারের কারণে বৃদ্ধি পায়।

৭. ফাস্টফুড, প্রসেসড ফুড ও কেমিক্যালযুক্ত খাবার এবং আইসক্রিমসহ কোন ধরণের ঠাণ্ডাজাতীয় খাবার বা পানীয়, এমনকি ঠাণ্ডা পানিও এ সময়ে খাবেন না।

৮. ধূমপান, মাদক ও তামাক সেবনও পুরোপুরি বর্জনীয়।

৯. নিয়মিত কালোজিরা-মধুর মিশ্রণ খান। কালোজিরা বেটে এক চামচ মধুর সাথে মিশিয়ে খাবেন দিনে দুবেলা করে।

মধু প্রসঙ্গে সূরা আন-নহলের আয়াত ৬৯-এ বলা হয়েছে, ‘মৌমাছির উদর থেকে নিঃসৃত হয় বর্ণিল পানীয়। এতে মানুষের জন্যে রয়েছে নিরাময়’।

আর হাদিসে এসেছে, ‘তোমরা এই কালোজিরা ব্যবহার করবে। কেননা এতে মৃত্যু ছাড়া সব রোগের প্রতিষেধক রয়েছে।’ (তিরমিযী)।

করোনা রোগ নিরাময়ে কালোজিরা-মধু যুগলের কার্যকারিতার বাস্তব প্রমাণ নাইজেরিয়ার ওয়ো (Oyo) রাজ্যের গভর্নর সেয়ি ম্যাকেন্দি। করোনায় আক্রান্ত হলে তিনি চিকিৎসকের পরামর্শে কালোজিরা এবং মধুর মিশ্রণ সেবন করে ১৫ দিনে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠেন।

দেশের প্রখ্যাত অণুজীববিজ্ঞানী ড. বিজন শীলের মতে, সাধারণত খুসখুসে কাশি দিয়ে শুরু হয় করোনা রোগ। সংক্রমণের একটা পর্যায়ে গিয়ে আক্রান্ত করে ফুসফুসকে।

ড. বিজন শীলের পরামর্শ হলো, সংক্রমণের প্রথম পর্যায়, অর্থাৎ যে-কোন ধরনের গলা খুসখুস বা কাশি দেখা দিলেই ব্যবস্থা নিতে হবে।

করোনা, না করোনা নয়- এ নিয়ে চিন্তা করারও কোনো দরকার নেই। এক্ষেত্রে তিনি কিছু ভেষজ পদ্ধতির কথা বলেছেন।

আদা ও লবঙ্গ একসঙ্গে পিষে সেটাকে গরম পানিতে সিদ্ধ করে তার সঙ্গে কিছুটা চা দিয়ে ওটা এক কাপ মতো নিয়ে গার্গল করে খান দিনে অন্তত তিন-চার বার।

এতে গলার ভেতরের কোষগুলোতে রক্ত সঞ্চালন বাড়বে। কোষগুলো শক্তিশালী হবে এবং সমর্থ হবে করোনাভাইরাস যদি আক্রমণ করে, তাকে প্রতিরোধ করতে।

যাদের গলা খুস খুস করে না বা কোন কাশিও দেখা দেয় নি, তারাও এটা নিয়মিত দিনে দুইবার অন্তত দু'কাপ খাবেন।

পাশাপাশি যাদের সুযোগ আছে তারা এখন নিমপাতা খেতে পারেন।

নিমপাতা একটু পানি দিয়ে পিষতে হবে। যে সবুজ রঙের রস বের হবে সেটার সঙ্গে গরম পানি মিশিয়ে তা গরগরা করে খেতে হবে। এর ফলে গলার কোষগুলোর ইমিউনিটি বাড়বে।

এমবি//


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি