ভাইরাস ধ্বংসে দারুচিনির ব্যবহার
প্রকাশিত : ১৩:৩৬, ২০ জুন ২০২০ | আপডেট: ১৩:৫১, ২০ জুন ২০২০
গবেষণায় কিছু ভাইরাসের বিরুদ্ধে দারুচিনি কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে, যেমন- এইচআইভি, অ্যাডিনোভাইরাস ও হার্পিস সিমপ্লেক্স ভাইরাস। এসব ক্ষেত্রে শরীরের প্রদাহ কমিয়ে উপকার করে থাকে দারুচিনি। করোনাভাইরাসও ফুসফুসে প্রদাহ সৃষ্টি করে। তাই আশা করা যায়, দারুচিনি করোনা সংক্রমণের তীব্রতা প্রতিরোধ করতে সক্ষম।
প্রসঙ্গত, ১৯১৮ সালে ইনফ্লুয়েঞ্জা মহামারির সময় যারা দারুচিনির ফ্যাক্টরিতে কাজ করেছেন তাদের মধ্যে ভাইরাসটিতে আক্রান্তের হার কম ছিল। স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তখনকার মহামারিতে (স্প্যানিশ ফ্লু) একটি জনপ্রিয় পথ্য ছিল দারুচিনির গুঁড়া অথবা দুধে দারুচিনি তেলের ব্যবহার।
এছাড়া এশিয়ার ঐতিহ্যবাহী হার্বাল মেডিসিনের অন্যতম অনুষঙ্গ হলো দারুচিনি। বিশেষ করে বুকের অসুস্থতায় দারুচিনি ব্যবহৃত হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, দারুচিনির সিনামালডিহাইড শ্বাসতন্ত্রের রোগ অ্যাডিনোভাইরাসের বিরুদ্ধে কার্যকর। এই কারণেই নিউমোনিয়া, শ্বাসনালির ফোলা, কাশি, গলার কর্কশতা ও শ্বাসপ্রশ্বাসের অসুখে দারুচিনি ব্যবহার হয়ে আসছে। উপরোক্ত লক্ষণগুলোও করোনার সঙ্গে মিল রয়েছে। তাই বলা যায়, করোনাকালে দারুচিনি ব্যবহার করলে উপকার পাওয়া সম্ভব।
জাপানি একটি গবেষণায় দেখা গেছে, সিলন দারুচিনির সিনাজিলানিন বাকুলুভাইরাসের সংখ্যা বৃদ্ধিতে বাঁধা দিয়েছে। বাকুলুভাইরাস পোকামাকড়কে সংক্রমিত করে।
আরেকটি গবেষণায় সিলন দারুচিনির ইউজিওলকে ভাইরাসিডাল হিসেবে পাওয়া গেছে, অর্থাৎ এটি ভাইরাসকে ধ্বংস করতে পারে। এ উপাদানটি হার্পিস সিমপ্লেক্স ভাইরাস-১ ও হার্পিস সিমপ্লেক্স ভাইরাস-২ এর বিরুদ্ধে কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। ইউজিওলের ভালো উৎস হচ্ছে সিলন সিনামন লিফ অয়েল।
ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে কী ভাবে করবেন দারুচিনির ব্যবহার? জেনে নিন তা-
দারুচিনিকে পানিতে সিদ্ধ করে অথবা গরম পানিতে দারুচিনির গুঁড়া মিশিয়ে পান করতে পারেন। এতে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট পলিফেনল ও প্রোঅ্যান্থোসায়ানাইডিন আপনার ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে তুলবে। দারুচিনির অ্যান্টিভাইরাল, অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিফাঙ্গাল প্রপার্টি বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি কমাতে পারে, যেমন- শ্বাসতন্ত্রের রোগ ও হার্টের রোগ।
এছাড়া গরম দুধের সঙ্গেও দারুচিনি মিশিয়ে খেতে পারেন। এ দুটি উপাদানেই রয়েছে বহু পুষ্টিকর। তাই দুধের সঙ্গে দারুচিনি মেশালে শক্তি আরও কয়েক গুণ বৃদ্ধি পায়। এক কাপ দুধে এক থেকে দুই চামচ দারুচিনি পাউডার দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিয়ে খেতে পারেন।
মনে রাখবেন, চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া সিনামন বার্ক অয়েল অথবা সিনামল লিফ অয়েল ব্যবহার করতে যাবেন না। এরা এত বেশি শক্তিশালী যে এক বা দুই ফোঁটার বেশি খেলে শরীরের ভেতরের অংশ পুড়ে যেতে পারে। এছাড়া ক্যাসিয়া দারুচিনিতে উচ্চ মাত্রায় কৌমারিন থাকে যা লিভার ও কিডনিকে ড্যামেজ করতে পারে। তাই বেশি পরিমাণে ক্যাসিয়া দারুচিনি খাবেন না।
এএইচিএমবি