করোনার বিরুদ্ধে দ্রুত শক্তি হারাচ্ছে অ্যান্টিবডি!
প্রকাশিত : ২০:৫০, ২৪ জুন ২০২০
মহামারি করোনা রোধে গবেষণার শেষ নেই। বিজ্ঞানীরা প্লাজমা বা রক্তরস ব্যবহার করে করোনা সংক্রমণ থেকে সেরে ওঠা মানুষের অ্যান্টিবডি কাজে লাগিয়ে ভাইরাসকে প্রতিহত করার চেষ্টা করছেন। করোনা রুখতে সক্ষম, এমন অ্যান্টিবডি আবিষ্কারের প্রায় দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে বিজ্ঞানীরা। এরই মধ্যে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এল সাম্প্রতিক একটি গবেষণায়। ওই গবেষণার রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, ভাইরাসের সংক্রমণ কাটিয়ে সুস্থ হয়ে ওঠা মানুষের শরীরে করোনা-রোধী অ্যান্টিবডির প্রতিরোধ ক্ষমতা দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে।
সম্প্রতি আয়ারল্যাণ্ডের রাজধানী শহর ডাবলিনের ট্রিনিটি কলেজের একদল গবেষক এবং নেক্সু সায়েন্স কমিউনিকেশন এর যৌথ উদ্যোগে চালানো একটি গবেষণায় জানা গিয়েছে, করোনা সংক্রমণ কাটিয়ে সুস্থ হয়ে ওঠা মানুষের শরীরের অ্যান্টিবডির প্রতিরোধ ক্ষমতা এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে মাত্র ২-৩ মাসের মধ্যেই দুর্বল হয়ে পড়ছে।
বিজ্ঞানীরা জানান, করোনা সংক্রমণ কাটিয়ে সুস্থ হয়ে ওঠার দু’-তিন মাসের মধ্যেই প্রায় ৭০ শতাংশ আক্রান্তের শরীরে অ্যান্টিবডির প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকটাই হ্রাস প্রায়।
সম্প্রতি ‘নেচার’ পত্রিকায় একদল চিনা বিজ্ঞানী একটি সমীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করেছেন। ওই প্রতিবেদনে ২৭ থেকে ৬৬ বছর বয়সী ৩৭ জন উপসর্গহীন করোনা আক্রান্তকে পর্যবেক্ষণ করে তাঁরা দেখেন, এঁদের শরীরে অ্যান্টিবডির প্রতিরোধ ক্ষমতা করোনার বিরুদ্ধে বড়জোড় দুই থেকে তিন মাস পর্যন্ত কার্যকর থাকে। এই সমীক্ষায় বিজ্ঞানীরা দেখেন, উপসর্গহীন করোনা আক্রান্তদের অ্যান্টিবডি সাধারণ উপসর্গযুক্ত রোগীদের তুলনায় অনেকটাই দুর্বল হয়।
বিজ্ঞানীরা ওই ৩৭ জন উপসর্গহীন করোনা আক্রান্তকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়ার পর আরও ৮ সপ্তাহ পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করে দেখেন। বিজ্ঞানীরা জানান, ৮১ শতাংশ উপসর্গহীন করোনা আক্রান্তদের অ্যান্টিবডির প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে। সেই তুলনায় ৬২ শতাংশ উপসর্গযুক্ত করোনা রোগীদের মধ্যে অ্যান্টিবডির প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে বলে জানান বিজ্ঞানীরা।
বিজ্ঞানীদের দাবি, করোনা সংক্রমণ কাটিয়ে সুস্থ হয়ে ওঠার ১২ মাসের মধ্যেই ৭৫ শতাংশ আক্রান্তের অ্যান্টিবডির প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পায়। সব মিলিয়ে অ্যান্টিবডির প্রতিরোধ ক্ষমতা দ্রুত হ্রাস পাওয়ার ঘটনা চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে বিজ্ঞানীদের কপালে।
এসি