ঢাকা, সোমবার   ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

করোনা প্রতিরোধে মানবদেহের সক্ষমতা বেড়েছে

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২১:৩২, ২ জুলাই ২০২০ | আপডেট: ২১:৩৫, ২ জুলাই ২০২০

করোনা ভাইরাস বা কোভিড-১৯ প্রতিরোধে মানবদেহের সক্ষমতা বেড়েছে বলে এক গবেষণায় উঠে এসেছে। এ ভাইরাসে অ্যান্টিবডি পরীক্ষায় নেগেটিভ হওয়া ব্যক্তিদেরও কিছু পরিমাণ ইমিউনিটি থাকতে পারে; নতুন এক সমীক্ষায় এমন সম্ভাবনার কথা উঠে এসেছে।

সুইডেনের কারোলিঙ্কসা ইন্সটিটিউটের গবেষণায় বলা হয়েছে, পূর্বের বিভিন্ন পরীক্ষায় মানুষের শরীরে করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে যতটা প্রতিরোধ ক্ষমতা জন্মেছে বলে ধারণা করা হয়েছিল বাস্তবে তার চেয়েও বেশি মানুষ সুরক্ষিত। খবর বিবিসি’র। 

মানুষের শরীরে অ্যান্টিবডি পাওয়া গেছে, তাদের প্রায় দ্বিগুণ সংখ্যক মানুষের শরীরে ‘টি-সেল’ বা টি কোষ পাওয়া গেছে। এই কোষই করোনায় আক্রান্ত কোষকে চিহ্নিত করে ও ধ্বংস করে। কোভিড-১৯ আক্রান্ত তবে স্বল্পমাত্রার উপসর্গ বা একেবারেই উপসর্গহীন মানুষের শরীরেও এই টি-সেল পাওয়া গেছে।

তবে এই টি-সেল কি শুধু রোগীকে সুরক্ষিত রাখবে, নাকি পাশাপাশি ওই রোগী থেকে অন্যদের শরীরেও সংক্রমণ ঠেকিয়ে দেবে, তা স্পষ্ট নয়। সুইডেনের কারোলিঙ্কসা ইন্সটিটিউটের গবেষকরা ২০০ মানুষের শরীরে অ্যান্টিবডি ও টি-সেল উভয়ের উপস্থিতি শনাক্তের পরীক্ষা চালিয়েছেন।

এতে দেখা গেছে অ্যান্টিবডি না থাকলেও অনেকের শরীরে টি-সেলের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। প্রতি ১ জন অ্যান্টিবডি-সমেত রোগির বিপরীতে দুইজন টি-সেল সমেত ব্যক্তি পাওয়া গেছে। এর অর্থ হলো, অ্যান্টিবডি উপস্থিতির ভিত্তিতে আগের পরীক্ষাগুলোতে যত মানুষের মধ্যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা জন্মেছে বলে উঠে এসেছে, বাস্তবে এই সংখ্যা তার চেয়েও বেশি।

টি-সেল আছে, তবে অ্যান্টিবডি নেই, এই বিষয়টির একটি ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে যে, এসব মানুষের শরীরে হয়তো অ্যান্টিবডি উৎপন্ন হওয়ার প্রয়োজন হয়নি।

অথবা হলেও তা মিইয়ে গেছে কিংবা বর্তমান যেসব পরীক্ষা রয়েছে, সেগুলোর মাধ্যমে এই অ্যান্টিবডি শনাক্তযোগ্য নয়। তবে এই মানুষগুলো যদি দ্বিতীয়বার ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ও, তারপরও তারা সুরক্ষিত থাকবেন। গবেষণার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন সুইডেনের কারোলিনস্কা ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক মার্কাস বুগার্ট। 

তিনি বলেন, এই টি-সেলগুলো ‘জীবাণুনাশক প্রতিরোধ ক্ষমতা’ সরবরাহ করে কিনা তা বুঝতে আরও বিশ্লেষণ করা দরকার। অর্থাৎ, এ কোষগুলো হয় ভাইরাসটিকে পুরোপুরি আটকে দেয় নয়তো অসুস্থ হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করে। তবে এটি ভাইরাস বহন বা সংক্রমণকে থামিয়ে দেয় না। করোনার অনাক্রম্যতা সম্পর্কে বেশিরভাগ আলোচনায় প্রতিষেধক অ্যান্টিবডি এবং ওয়াই-আকারের প্রোটিনের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। এটি ‘লক্ষ্যবস্তুতে ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতের মতো কাজ করে।’ কোষগুলোতে প্রবেশের আগে ভাইরাসকে আবদ্ধ করে এবং এটিকে নিষ্ক্রিয় করে তোলে। অ্যান্টিবডিগুলো ভাইরাসটিকে নিষ্ক্রিয় করতে ব্যর্থ হলে এটি আপনার কোষগুলোকে ভাইরাস তৈরির কারখানায় পরিণত করতে পারে। এদিকে টি-সেলগুলো ইতোমধ্যেই সংক্রমিত কোষগুলোকে লক্ষ্যবস্তু বানায়। এটি সংক্রমিত কোষগুলোর অন্য স্বাস্থ্যকর কোষে ছড়িয়ে পড়ার সুযোগ বন্ধ করে দিয়ে এগুলোকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দেয়।

এর আগে লন্ডনের কিং’স কলেজ, সেইন্ট থমাস হাসপাতাল ও ফ্রান্সিস ক্রিক ইন্সটিটিউটের গবেষকরা এর আগে ৬০ জন গুরুতর অসুস্থ রোগীকে পরীক্ষা করে দেখেছেন, তাদের শরীরে টি-সেলের সংখ্যা ভয়াবহভাবে কমে যাচ্ছে।

তবে সুইডেনের গবেষণায় এমনটা দেখা যায়নি। সেখানে বলা হয়, রোগী যত অসুস্থ ছিল, তাদের শরীরে অ্যান্টিবডি ও টি-সেল উৎপাদনের মাত্রা তত বেশি ছিল।

এমএস/এসি

 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি