১৯১৮র স্প্যানিশ ফ্লু আর এখন করোনায় লড়ে জয়ী হলেন বৃদ্ধ
প্রকাশিত : ২১:৪৭, ৭ জুলাই ২০২০
বুড়োর হাড়ে রয়েছে ব্যাপক তেজ। সত্যিই কলজের জোর আছে বলতে হবে, সেইজন্যেই বোধহয় ১০৬ বছরের এক অশীতিপর বৃদ্ধের জীবনযুদ্ধের কাছে হার মানতে বাধ্য হলো করোনা ভাইরাসের মতো মারণ দৈত্যও।
সম্প্রতি এই রোগীকে রাজীব গান্ধি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল থেকে বাড়ি পাঠানো হয়েছে। জানলে আরও অবাক হবেন যে, ১৯১৮ সালে মাত্র ৪ বছর বয়সে আরেক প্রাণঘাতী রোগ স্প্যানিশ ফ্লুয়ের কবলে পড়েন দিল্লির ওই বাসিন্দা। সেই সময়েও ওই রোগকে পরাজিত হতে হয় তাঁর কাছে। শুধু ওই বৃদ্ধই নন, এবার করোনার কবলে পড়েন তাঁর পরিবারের অন্য সদস্যরাও। সকলেই এখন সুস্থ হয়ে গেছেন বলে জানা গেছে।খবর এনডিটিভির
তবে চিকিৎসকরাও স্যালুট করছেন ১০৬ বছরের ওই বৃদ্ধের মন ও শরীরের জোরকে। একজন চিকিৎসক জানিয়েছেন, ওই বৃদ্ধ করোনা আক্রান্ত তাঁর ৭০ বছরের ছেলের থেকেও তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে ওঠেন। রাজীব গান্ধি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের এক চিকিৎসকের কথায়, "সম্ভবত, তিনি দিল্লির এমন এক বাসিন্দা যিনি ১৯১৮ সালে মহামারীর আকার নেওয়া স্প্যানিশ ফ্লুয়ের সঙ্গেও যুদ্ধ করেছেন এবং এবার কোভিড -১৯ এর মতো ভয়ঙ্কর রোগের সঙ্গে লড়ে জিতে গেলেন। সবচেয়ে বড় কথা, নিজের বৃদ্ধ ছেলের থেকেও দ্রুতগতিতে কোভিডের সঙ্গে লড়ে সুস্থ হয়েছেন তিনি" ।
আজ থেকে ১০২ বছর আগে মহামারী আকারে দেখা দিয়েছিল স্প্যানিশ ফ্লু, সেই সময় সারা বিশ্বের এক তৃতীয়াংশের মানুষ এই রোগের কবলে পড়েছিলেন।
"১৯১৮ সালে এই ইনফ্লুয়েঞ্জা জাতীয় রোগটি মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়েছিল এবং সেই সময়ের ইতিহাসে সবচেয়ে মারাত্মক মহামারী ছিল সেটি। এটির উৎসও এইচ১ এন১ ভাইরাস। যদিও এই ভাইরাসটির উদ্ভব কোথায় হয়েছিল সে সম্পর্কে নিশ্চিতভাবে সেই সময় কিছুই জানা যায়নি। ১৯১৮-১৯১৯ সালে এই রোগ সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে", জানিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র সিডিসি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্প্যানিশ ফ্লু নামে পরিচিত রোগটি ১৯১৮-১৯ সালে মহামারী রূপে দেখা দিয়ে মারাত্মক আকার ধারণ করে এবং গোটা বিশ্বের আনুমানিক ৪০ মিলিয়ন মানুষের প্রাণ যায় এই রোগে। তবে স্প্যানিশ ফ্লুতে ভারতে হতাহতের সংখ্যা বিশ্বের মোট মৃত্যুর প্রায় এক-পঞ্চমাংশ বলে জানা যায়, যদিও ভারতে মৃত্যুর এই পরিসংখ্যান নিয়ে নানা বিতর্ক আছে।
তবে চিকিৎসকরা ১০৬ বছরের বৃদ্ধের বাঁচার ইচ্ছা দেখে অবাক না হয়ে পারেননি। এক প্রবীণ চিকিৎসক বলেন, "আমরা জানি না যে তিনি স্প্যানিশ ফ্লুতে আক্রান্ত ছিলেন কি না। কেননা সেই সময় দিল্লিতে খুবই কম হাসপাতাল ছিল, তাই এই সম্পর্কে নির্দিষ্ট পরিসংখ্যান আমাদের পক্ষে জানা সম্ভব হয়নি। তবে আমরা এটা দেখে খুবই আশ্চর্য হয়েছিলাম যে, ১০৬ বছরেও ওই বৃদ্ধের কতটা জীবনীশক্তি রয়েছে"।
এসি