ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪

অন্যের উপকার দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়!

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:৫১, ২৬ আগস্ট ২০২০

করোনার হাত থেকে বাঁচতে আমরা নানান রকমের চেষ্টা তদবির চালাচ্ছি। এদিকে নতুন আক্রান্তের খবর যেমন পাওয়া যাচ্ছে তেমনি করোনা থেকে সেরে ওঠার হারও কিন্তু বেশ ভালো। ৪০.৭% (২৫ জুন, ২০২০)।

অন্যদিকে মৃত্যুর হার বেশ কম -১.৩% (২৫ জুন, ২০২০)। বলা হচ্ছে, করোনার কামড়েই এই মৃত্যুগুলো হচ্ছে।

প্রশ্ন হলো- একই ভাইরাস থেকে যেখানে মৃদু সংক্রমণের পর এত মানুষ সুস্থ হচ্ছেন! সেখানে কিছু মানুষ কেন আবার মৃত্যু বা মুমূর্ষু অবস্থায় চলে যাওয়ার মতো মারাত্মক ছোবলের শিকার হচ্ছেন!

এর দুটো উত্তর-

এক, যারা মারা যাচ্ছেন তারা শারীরিকভাবে আগে থেকেই অসুস্থ ছিলেন, যার ফলে করোনার কাছে তাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা হার মেনে যাচ্ছে।

দুই, যারা খুব বেশি আতঙ্কিত হচ্ছেন ও মানসিকভাবে ভেঙে পড়ছেন।

আসলে শুরু থেকেই করোনা নিয়ে যে পরিমাণ আতঙ্ক ছড়ানো হয়েছে, তাতে কারো করোনা ধরা পড়া মানে যেন হয়ে দাঁড়িয়েছে তার মৃত্যুদণ্ডাদেশ! সুস্থ হওয়ার আশা-বিশ্বাস তিরোহিত হয়ে মানুষটি অতি সহজেই হার মানছেন করোনার কাছে।

আসলে মনের শক্তি মানুষকে উজ্জীবিত যেমন করে, তেমনি তা কীভাবে দমিয়েও দেয়, তার এক সত্য ঘটনা বলেন, খ্যাতিমান আত্ম উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ শান্ত শ্রী আশ্রমজি বাপু।

কয়েদীর গল্প

ফাঁসির দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত এক আসামী। আপিলের সবরকম আবেদন শেষেও তা বহাল থাকে। মৃত্যুদণ্ডের দিনক্ষণও ঠিক হয়ে যায়।

এমনি সময় কয়েকজন বিজ্ঞানী তার কাছে গেলেন। উদ্দেশ্য একটি অনুরোধ করা।

তাহলো- মৃত্যুর পর তার দেহকে মানবজাতির কল্যাণার্থে গবেষণায় দান করতে চান কি না তিনি।

কয়েদী রাজী হলেন। বিজ্ঞানীরা আদালত থেকে লিখিত অনুমোদন নিয়ে নিলেন।

ফাঁসি যেদিন হবে, সেদিন মনোবিজ্ঞানী, চিকিৎসকদের একটা পুরো টিম উপস্থিত হলেন। তারা তাকে বললেন, দেখুন আপনার মৃত্যুাদণ্ডাদেশ ফাঁসিতে কার্যকর না করে সাপের কামড়ে করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

আসলে এর মধ্য দিয়ে আমরা দেখতে চাই সাপ কামড় দিলে দেহে বিষ কীভাবে ছড়ায় এবং কীভাবে একজন মানুষ মারা যায়।

যাতে এর মধ্য দিয়ে আমরা সাপের কামড়ের কার্যকর চিকিৎসা উদ্ভাবনের একটা চেষ্টা আমরা করতে পারি।

কয়েদী সম্মত হলেন।

তাকে সাপের কামড়ে একটি ঘোড়ার মৃত্যুর ভিডিও দেখানো হলো। কামড় দেয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে ঘোড়াটি কীভাবে খিচুনি দিয়ে মারা গেল!

এরপর কয়েদীর চোখ বেঁধে দেয়া হলো। তার শরীরের ঊর্ধ্বাংশ ঢেকে দেয়া হলো কালো কাপড়ে যাতে সে কিছুই দেখতে না পায়। তাকে বলা হলো যে, মিনিটখানেকের মধ্যেই একটি বিষধর সাপ তাকে কামড় দেবে।

কিন্তু বিষয় হলো, এ কাজে তারা ব্যবহার করলেন কোনো সাপ নয়, একটি ইঁদুর।

কিন্তু কয়েদী ভাবলেন, তাকে সাপ কামড়েছে এবং ঘোড়াটির যেভাবে মৃত্যু হয়েছে, তার মৃত্যুও সেভাবেই হতে যাচ্ছে।

যেমন ভাবলেন, তেমনই হলো। ইঁদুরের কামড়ের সাথে সাথেই তার দেহে শুরু হলো খিচুনি।

এবং ঠিক যেভাবে ঘোড়াটি মারা গেছে, ঠিক একইভাবে একসময় তিনিও মারা গেলেন।

মৃত্যুর পর তার দেহকে পরীক্ষাগারে নিয়ে গিয়ে বিজ্ঞানীরা বিস্ময়ে হতবাক হয়ে গেলেন যখন তার রক্তে পেলেন সাপের বিষের উপস্থিতি।

অথচ বাস্তবে তাকে তো কোনো সাপ কামড়ায় নি।

তার মানে, মনের শক্তি, চিন্তার শক্তি এতটাই প্রবল যে, বাস্তবে সাপ না কামড়ালেও দেহ সাপের বিষ তৈরি করেছে!

আবার উল্টোটাও হতে পারে। মনের শক্তি, মমতার শক্তি মৃত্যুপথযাত্রী রোগীকেও দীর্ঘদিন বাঁচিয়ে রেখেছে, এমন উদাহরণ হরহামেশাই আমরা পাই।

মানসিক স্বাস্থ্যের সাথে দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার সরাসরি সম্পর্ক

মানসিক বিপর্যস্ততা একজন মানুষের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে অচল করে দেয়। ফলে যে-কোনো ভাইরাসে সে সহজেই কাবু হয়ে যেতে পারে। চিকিৎসাবিজ্ঞানে এর একটা আলাদা টার্মই আছে – সাইকোনিউরোইমিউনলজি (psychoneuroimmunology), যার অর্থ মানসিক স্বাস্থ্যের সাথে দেহের নার্ভ এবং রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার যোগসূত্র।

কোয়রেন্টাইনে থেকে ও মাস্ক পিপিই পড়ে না হয় আপনি দেহকে রক্ষা করলেন। কিন্তু আপনার মানসিক স্বাস্থ্যকে কীভাবে করোনা থেকে সুরক্ষা দেবেন?

এর একটি উপায় হচ্ছে মেডিটেশন বা ধ্যান। 

মন ও দেহের সুরক্ষা দেয় মেডিটেশন

মেডিটেশন নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রচুর গবেষণা রিপোর্ট আছে যে কীভাবে মনের শক্তির সাথে সাথে দেহের শক্তি বাড়ায় মেডিটেশন।

মজার ব্যাপার হচ্ছে যে, মেডিটেশনের এই সুফল লাভ করতে যে এক্সপার্ট লেভেলের মেডিটেটর বা ধ্যানী হতে হবে, সংসার ছেড়ে বনে গিয়ে সাধনা করতে হবে, এমনটা মোটেই নয়।

যেমন, ১৯৯৮ সালে ৩ জন বিজ্ঞানীকে নোবেল প্রাইজ দেয়া হয় সুস্থতার ক্ষেত্রে আমাদের দেহে উৎপাদিত হওয়া নাইট্রিক অক্সাইডের গুরুত্ব আবিষ্কারের জন্যে।

এই নাইট্রিক অক্সাইড ব্লাড প্রেশার ও রক্তের শিরা ধমনীকে সুস্থ ও স্বাভাবিক রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

দেখা গেছে, কেউ যদি মাত্র ২০ মিনিট মেডিটেশন করে, তাহলেই তার দেহে নাইট্রিক অক্সাইডের উৎপাদন অনেক গুণ বেড়ে যায়। আর যারা একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে মেডিটেশন করছেন, তাদের শরীরে নাইট্রিক অক্সাইডের পরিমাণ ২১৩% বেশি।

তাহলে আমরা সহজেই আঁচ করতে পারি যে নিয়মিত দু’বেলা মেডিটেশনের প্রভাব আমাদের দেহের ওপর কতটা পড়ে।

যদি আপনি ইতোমধ্যে মেডিটেশন চর্চা করে থাকেন তো খুব ভালো। না করে থাকলে আরো ভালো। এখন থেকেই আপনি শুরু করে দিতে পারেন।

এক্ষেত্রে আপনার পছন্দমতো মেডিটেশন ডাউনলোড করে চর্চা শুরু করে দিন। সবচেয়ে ভালো হয় শিথিলায়ন মেডিটেশন দিয়ে শুরু করলে। মেডিটেশনগুলোর সময় ৩০ মিনিটের। অডিও প্লে করুন এবং যেভাবে চিন্তা করতে বলা হচ্ছে, চোখ বন্ধ তা করে করে যান। মেডিটেশনের পুরো উপকারই আপনি পাবেন।

অন্যের উপকার করলে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে!

আরেকটি উপায় হচ্ছে অন্যের উপকারে কিছু করা। সেটা অর্থ দিয়ে হতে পারে, কাজ দিয়ে হতে পারে, ভালো কথা দিয়ে হতে পারে, এমন কি মুখের হাসি দিয়েও হতে পারে।

এটাকে ইসলামে বলা হয় সাদাকা। সাদাকা আসলে শুধু মানুষের কল্যাণের জন্যেই নয়, আপনার কল্যাণেও এর প্রয়োজন আছে। নবীজী (স) বলেছেন যে কাউকে আন্তরিক হাসি দেয়াও সাদাকা।

এই সাদাকার বৈজ্ঞানিক গুরুত্ব প্রকাশিত হচ্ছে এখন। সাদাকার মাধ্যমে আপনি গড়ে তুলতে পারেন আপনার সুস্বাস্থ্য, শক্তিশালী করে তুলতে পারেন দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা।

ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব বিহেভরিয়াল মেডিসিনে প্রকাশিত একটি পেপারে ইউনিভার্সিটি অফ শিকাগোর প্রফেসর স্টিফেন জি পোস্ট প্রমাণ করেছেন যে কীভাবে সমমর্মিতা, সমব্যথিতা ও অন্যের সাহায্য ও উপকার করার মনোভাব একজন মানুষের সুস্বাস্থ্য গড়ে তুলতে সরাসরি প্রভাব ফেলে এবং তাকে দীর্ঘায়ু হতে সাহায্য করে।

এর মধ্যে এক দল গবেষক বেশ কয়েকজন বিষণ্ণ ও উদ্বিগ্ন প্রাপ্তবয়স্কদের ওপর একটি এক্সপেরিমেন্ট চালান। এর পুরো ব্যাখ্যা প্রকাশিত হয়েছে ক্লিনিকেল সাইকোলজি জার্নালে।

গবেষকরা ঠিক করেন যে তারা দু’ভাবে চেষ্টা করবেন সেই মানুষদের বিষণ্ণতা ও উদ্বেগ কাটাতে –

১) বিষণ্ণ ও উদ্বিগ্নরা চেষ্টা করবেন অন্যদের কাছে নিজেকে ভালোভাবে উপস্থাপন করতে, যে তাদের মধ্যে কোনো সমস্যা বা দুর্বলতা নেই। তারা অন্যের কাছে নিজেদের একটি ইমেজ দাঁড় করানোর চেষ্টা করবেন।

২) আরেক দল বিষণ্ণ ও উদ্বিগ্ন মানুষ অন্যের সাহায্যে কিছু করবেন।

দেখা গেছে যে যারা প্রথম উপায়টি অবলম্বন করেছেন তারা মানসিকভাবে আরও দুর্বল হয়ে গেছেন।

আর যারা দ্বিতীয় উপায় অবলম্বন করেছেন তাদের মধ্যে ডিপ্রেশন উদ্বেগ অনেক কমে গেছে। এবং সেই সাথে তাদের আশেপাশের মানুষদের সাথে সম্পর্কও আরও ভালো হয়েছে যা তাদের দীর্ঘদিন ধরে ভালো থাকতে আরও সাহায্য করবে।

এ ছাড়া বিভিন্ন গবেষণার পর গবেষকরা মোট ৭টি টেকনিক দাঁড় করিয়েছেন যা যে কেউ দৈনন্দিন জীবনে চর্চা করে শারীরিক ও মানসিকভাবে আরও বেশি ভালো থাকতে পারে -

১। একে অপরকে সাপোর্ট করা। অন্যের খুশিতে উচ্ছসিত হওয়া, অন্যের দুঃখে সমব্যথী হওয়া এবং তা প্রকাশ করা।

২। অন্যের ভুলকে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখা। অন্যের ভুল ধরিয়ে না দিয়ে বরং তা চোখে পড়লেও ক্ষমা করে দেয়া।

৩। কারও জীবনে কোনো ইতিবাচক প্রভাব ফেলা। হতে পারে ভালো কথা দিয়ে বা পাশে বসে একটু সময় কাটিয়ে, তার সুখ দুঃখের কথা শুনে।

৪। ইতিবাচক কথা বলে ও গঠনমূলক মন্তব্য করে। কথার শক্তির ব্যাপারে আমরা সবাই সচেতন। একটু ভালো কথা আরেকটা মানুষের ওপর অনেক ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে, তার দৈনন্দিন কাজে আরও উৎসাহ উদ্দীপনা যোগাতে পারে।

হয়তো যিনি আপনার ঘরে প্রতিদিন রান্না করছেন, তার রান্নার প্রশংসা করলেন। তিনি হয়তো প্রশংসা না করলেও আপনার জন্যে রান্নাটা করতেন। কিন্তু আপনার কথার প্রভাবে তার কাছে কাজটা আরও আনন্দদায়ক হতে পারে।

৫। অন্যের ক্ষতি হয় বা কষ্ট পায় এমন কাজ বা কথা থেকে বিরত থাকা।

৬। শুধুমাত্র নিজেকে নিয়ে না ভাবা। নিজের পাশাপাশি আশেপাশের মানুষদেরকেও কীভাবে আরও ভালো রাখা যায়, তা নিয়ে চিন্তা করা।

৭। যতদূর সম্ভব অন্যদের জন্যে জীবনটা সহজ করে দেয়া। এটা খুব ছোট খাটো ব্যাপারেও হতে পারে। যেমন বেসিনে থালা বাসন ফেলে না রাখা, এই ভেবে যে অন্যরা পরিষ্কার করবে। বা কারও কাপড় ইস্ত্রি করে দেয়া, হাতের কাজটা একটু এগিয়ে দেয়া ইত্যাদি।

তার মানে এই সময়টা বাসায় থেকেও আপনি চমৎকার সুযোগ পাচ্ছেন আত্মীয়-পরিবার-বন্ধু বান্ধবদের সাথে আপনার সম্পর্কটাকে আরও সুন্দর আরও মজবুত করার।

আপনার মানসিক স্বাস্থ্যে এর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাবও পড়বে চমৎকার। ফলে শুধু করোনাই না, অনেক ধরনের রোগ থেকে আপনি আপনার স্বাস্থ্যকে অটুট রাখতে পারবেন এবং দীর্ঘজীবী হবেন।

বেঁচে থাকার সাহস ও সাবিত্রীবাই ফুলের আত্মত্যাগ

মানব ইতিহাসে দুর্যোগ সবসময়ই এসেছে। কালে কালে মহামারি, প্রাকৃতিক দুর্যোগ এসেছে এবং মানুষ তা অতিক্রম করতে পেরেছে। দুর্যোগের মুখে কিছু মানুষ ভীত হয়ে মারা গেছেন। আর কিছু মানুষ সাহসের সাথে অন্ধকারে মশাল ধরেছেন।

মারা কিন্তু সবাই-ই গেছেন, কিন্তু তাদের নামই আমরা মনে রাখি যারা সাহস করেছিলেন। ভারত উপমহাদেশে এমন একটি নাম হচ্ছে সাবিত্রীবাই ফুলে।

সাবিত্রীবাই ফুলে ছিলেন ভারতের প্রথম নারী শিক্ষক। ১৮৪৮ সালে স্বামী জ্যোতিরাও ফুলে-কে নিয়ে মহারাষ্ট্রের পুনেতে মেয়েদের এই স্কুলটি খোলেন সাবিত্রীবাই।

প্রথমবার কিছু করা কখনোই সহজ হয় না, সাবিত্রীবাই ফুলের বেলায়ও হয়নি।

স্কুলে যাওয়ার পথে তার দিকে কাদামাটি গোবর ছোঁড়া হতো নিয়মিত। তিনি থেমে থাকেন নি। শিক্ষকতা করে গেছেন। তার কবিতার মাধ্যমে শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা মানুষের কাছে উপস্থাপন করছেন। আধুনিক মারাঠি কবিতার জনক বলা হয় তাকে।

১৮৯৬ সালে ভারতজুড়ে প্লেগ মহামারি শুরু হলে সাবিত্রীবাই তার পালকপুত্র যশোবন্ত ফুলেকে নিয়ে প্লেগ রোগীদের চিকিৎসার জন্যে ক্লিনিক খোলেন পুনেতে। সে ক্লিনিকে জাত ধর্ম গোত্র নির্বিশেষে সবাইকে সেবা দেয়া হতো।

প্লেগ মানে তখন মৃত্যু। চারিদিকে লাখে লাখে মারা যাচ্ছে মানুষ। কিন্তু সাবিত্রীবাই ফুলে তার ছেলেকে নিয়ে মানুষের সেবার ঝাঁপিয়ে পড়তে দ্বিধাবোধ করেন নি। তাদের চিকিৎসায় অনেক রোগী সুস্থ হয়েছেন, প্রাণ ফিরে পেয়েছেন।

সেবা দিতে দিতে সাবিত্রীবাই নিজেও একসময় আক্রান্ত হন এবং মারা যান।

শোনা যায় যে একটি ১০ বছরের বালক প্লেগে আক্রান্ত হলে সাবিত্রী বাই তাকে নিজ কোলে করে ক্লিনিকে নিয়ে আসেন। সেই বালকটি চিকিৎসা পেয়ে সুস্থ হয়ে যায়। কিন্তু এর পরপরই অসুস্থ হয়ে মারা যান সাবিত্রীবাই। এর পরে তার ছেলে যশোবন্তও সেবা দিতে দিতে প্লেগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।

আমরা এখন যে মহামারির সাথে লড়ছি তা হয়তো প্লেগের তুলনায় কিছুই নয়। আমরা দেখছি যে বেশিরভাগ মানুষই সেরে উঠছেন, এমনকি হাসপাতালে যাওয়ারও প্রয়োজন হচ্ছে না। মৃত্যুর হার মাত্র ১.৩%। কিন্তু তারপরও মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আমাদের অনেক অনেক সুযোগ আছে। নিজে সুস্থ থাকার পাশাপাশি অন্যকে সুস্থ রাখতে পারার সুযোগ আছে।

একটু সাহস করলে একটু সচেতন হলে আমরা নিজেরা যেমন সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে পারি, এর পাশাপাশি অন্যের রোগে শোকে অবদান রাখতে পারি। এর ফলে আমাদের বেঁচে থাকাটা শুধু সুস্থই হবে না, সুন্দরও হবে।

এমবি//


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি