ঢাকার সাত হাসপাতলে হবে চীনা ভ্যাকসিনের ট্রায়াল (ভিডিও)
প্রকাশিত : ১২:১৫, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২০
দেশে করোনা ভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক প্রয়োগের প্রায় সব প্রস্তুতিই শেষ করে এনেছে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র। সাতটি হাসপাতাল নির্ধারণ, মাঠ পর্যায়ে গবেষক নিয়োগ, মনিটরিং করার কাজ শেষ হয়েছে।
আইসিডিডিআরবির টিকা বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, প্রাথমিকভাবে স্বেচ্ছায় আসা স্বাস্থ্যকর্মীদের তালিকা করার কাজ চলবে দুই মাস ধরে। তৃতীয় পর্যায়ের এই গবেষণায় শারীরিক ক্ষতির কোনো শংকা নেই। তারপরও সব ধরনের চিকিৎসা গবেষণা প্রকল্পের আওতায় থাকবে।
ঢাকার সাত হাসপাতলে হবে চীনের সিনোভ্যাক বায়োটেকের করোনা ভ্যাকসিনের ট্রায়াল। হাসপাতালগুলো হলো- কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মহানগর হাসপাতাল, মুগদা জেনারেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতাল বার্ন ইউনিট-১, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বার্ন ইউনিট-২।
ট্রায়ালের সাথে যুক্ত বিজ্ঞানীরা বলছেন, প্রথম দুই মাসে স্বেচ্ছাসেবক সংগ্রহ ও টিকা প্রদান এক সাথেই চলবে। স্বেচ্ছায় আসা ৪ হাজার ২শ’ চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মী ট্রায়ালে অংশ নিতে পারবে। এ প্রক্রিয়ায় ২ হাজার ১শ’ জনের শরীরে করোনা টিকা দেয়া হবে। বাকী ২ হাজার ১শ’ জনের শরীরে দেয়া হবে টিকা সাদৃশ্য ক্ষতিকারক নয়, এমন ওষুধ।
কে টিকা পাচ্ছে আর কে পাচ্ছে না, তা গোপনে লিখে রাখা হবে। তা জানার সুযোগ থাকবে শুধু গবেষণা সংশ্লিষ্টদের। এরপর টিকা পাওয়া আর না পাওয়া দুই দলের মধ্যে ফলাফল পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ করে টিকার কার্যকারিতা নিশ্চিত হবেন বিজ্ঞানীরা।
টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগের মুখ্য গবেষক ও আইসিডিডিআরবি সিনিয়র সায়েন্টিস্ট ড. কে জামান বলেন, আশা করছি দুই মাসের মধ্যে এই ৪২শ’ জনকে অন্তর্ভুক্ত করতে পারবো এবং তারা কোভিডে আক্রান্ত হচ্ছে কি হচ্ছে না তা দেখার জন্য পরবর্তী ৬ মাস আমরা ফলোআপ করবো। যারা পূর্বে করোনায় আক্রান্ত হনটি তারা করোনার অর্ধেক ভ্যাকসিন পাবে, আর অর্ধেক ভ্যাকসিন সাদৃশ্য বস্তু পাবে। কিন্তু এটা কোন বাংলাদেশী জানতে পারবে না, এটা সম্পূর্ণ লটারীর মাধ্যমে নির্ধারণ হবে।
টিকা পাওয়ার পর ছয় মাস স্বাস্থ্য কর্মীদের সাথে নিবিড় যোগাযোগ রাখবেন মাঠ গবেষকরা। এই প্রক্রিয়ার মধ্যে কেউ অসুস্থ হলে, প্রতিকারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে এই প্রকল্পে।
আইসিডিডিআরবি সিনিয়র সায়েন্টিস্ট ড. কে জামান জানান, এটা ইনঅ্যাকটিভেটেড ভ্যাকসিন, এটার সাইড এফেক্ট খুব একটা বেশি হবে না। ভ্যাকসিন দেওয়ার পর ৩০ মিনিট পর্যবেক্ষণ করা হবে, কোন কিছুর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হচ্ছে না। এরপর ৭ দিন ধরে তাদের নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে। পরবর্তীতে প্রতি সপ্তাহে পুরো স্টাডি চলাকালীন সময়ে তাদের পর্যবেক্ষণ করবো। যদি কোন অসুস্থতা হয় তাহলে তাদের ট্রান্সপোর্ট, যদি হসপিটালে ভর্তি হতে হয়, যদি ওষুধ লাগে এগুলো আমরা গবেষণা থেকে বহন করবো।
মাঠ পর্যায়ে আড়াইশ’ গবেষকের প্রশিক্ষণ এবং তাদের ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী সংগ্রহের কাজ শেষ করে আনা হয়েছে বলেও জানালেন আইসিডিডিআরবি’র এই বিজ্ঞানী।
ড. কে জামান জানান, গবেষণার জন্য যতগুলো লজিস্টিক লাগবে সেই লজিস্টিকের অ্যারেজমেন্ট আমরা করেছি।
এএইচ/এমবি