যেসব জিনিসে ২৮ দিন বেঁচে থাকে করোনা
প্রকাশিত : ১৫:৩৪, ১২ অক্টোবর ২০২০
বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস ১০ মাস ধরে বিশ্বকে বিধ্বস্ত করে চলছে। এই ভাইরাসটি ব্যাংক নোট, মোবাইল ফোনের স্ক্রিন এবং স্টেইনলেস স্টিলের মতো মসৃণ পৃষ্ঠগুলোতে ২৮ দিন পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে। এমন তথ্য উঠে এসেছে অস্ট্রেলিয়ার ন্যাশনাল সায়েন্স এজেন্সির এক গবেষণায়। খবর বিবিসি’র।
গবেষণায় বলা হয়েছে যে, এসব পৃষ্ঠে সার্স-কোভ-২ আগের ধারণার চাইতেও অনেক বেশি সময় বেঁচে থাকতে পারে। তবে বাস্তব জীবনে এইসব জিনিসের পৃষ্ঠ থেকে মানুষের মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণ হয় কিনা, সেটা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞদের কেউ কেউ।
করোনাভাইরাস বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সংক্রমণ হয় লোকজনের কাশি, হাঁচি বা আলাপ করার মাধ্যমে। আবার যেসব কণা বাতাসে ভেসে বেড়ায় সেখান থেকেও ছড়াতে পারে কোভিড-১৯, এমন প্রমাণও পাওয়া গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র, সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল এর তথ্য অনুযায়ী ধাতব পদার্থ ও প্লাস্টিকের মতো বস্তু থেকে কোভিড-১৯ ছড়াতে পারে। যদিও এটা সচরাচর হয় না।
গবেষণা কী বলছে?
এর আগে ল্যাব পরীক্ষায় দেখা গেছে যে, সার্স-কোভ-২ টাকা এবং গ্লাসে দুই থেকে তিন দিন এবং প্লাস্টিক এবং স্টেইনলেস স্টিলে ছয় দিন পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে। তবে অস্ট্রেলিয়ান সংস্থা সিএসআইআরও-এর গবেষণায় দেখা গেছে যে মোবাইল ফোনের স্ক্রিনে থাকা গ্লাস, প্লাস্টিক এবং কাগজের নোটের মতো মসৃণ পৃষ্ঠে এই ভাইরাস ২৮ দিন পর্যন্ত থাকে। সে তুলনায়, ফ্লু ভাইরাস একই পরিস্থিতিতে ১৭ দিন পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে।
এছাড়া ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা ৬৮ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রায় অর্থাৎ ঘরের তাপমাত্রায় এবং অন্ধকারেও ‘অত্যন্ত শক্তিশালী’ থাকে করোনাভাইরাস।
ভাইরোলজি জার্নালে প্রকাশিত এই সমীক্ষায় আরও পাওয়া গেছে যে, শীতল তাপমাত্রার চেয়ে গরম তাপমাত্রায় সার্স-কোভ-২ কম সময় বাঁচে। একই পৃষ্ঠে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ভাইরাসটি ২৪ ঘণ্টার বেশি টিকতে পারে না।
এটি কাপড়ের মতো ছিদ্রযুক্ত উপাদানের চেয়ে মসৃণ পৃষ্ঠের ওপর দীর্ঘকাল অবস্থান করতে পারে। এটি ছাড়া আর কোন সংক্রামক ভাইরাস কাপড়ে এতদিন থাকে না।
কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক পরিচালক কমন কোল্ড সেন্টার প্রফেসর রন ইকলিস এই সমীক্ষার সমালোচনা করে বলেছেন যে, ভাইরাসটি ২৮ দিনের জন্য বেঁচে থাকতে পারে এই তথ্য জনসাধারণের মধ্যে অযথা ভয় ছড়িয়ে দিচ্ছে।
তবে সিএসআইআরও-এর প্রধান নির্বাহী ডঃ ল্যারি মার্শাল বলেছেন, ‘কোন পৃষ্ঠে এই ভাইরাস কতক্ষণ টিকে থাকে সেটা নিশ্চিত হওয়া গেলে এর ছড়িয়ে পড়ার ব্যাপারে আরও সঠিক তথ্য দেয়া যাবে এবং সে অনুযায়ী এর ছড়িয়ে পড়া ঠেকানোও যাবে। যা মানুষকে রক্ষায় কাজে আসবে।
এএইচ/এমবি