চট্টগ্রামে করোনা সংক্রমণে ঊর্ধ্বগতি
প্রকাশিত : ১২:৩২, ২৯ মার্চ ২০২১
চট্টগ্রামে করোনাভাইরাস সংক্রমণের আবার ঊর্ধ্বগতি প্রবণতা শুরু হয়েছে। রোববার আক্রান্তের সংখ্যা কিছুটা কম পাওয়া গেলেও গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ২৭৬ জন জীবাণুবাহক শনাক্ত হন। সংক্রমণ হার ৯ দশমিক ৯২ শতাংশ। এ সময় এক করোনা রোগীর মৃত্যু হয়।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সর্বশেষ রিপোর্টে বলা হয়, রোববার নগরীর সাতটি ল্যাবে চট্টগ্রামের ২ হাজার ৭৮৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। নতুন ২৭৬ ভাইরাসবাহকের মধ্যে শহরের বাসিন্দা ২১৬ জন এবং চৌদ্দ উপজেলার ৬০ জন। জেলায় এ পর্যন্ত মোট আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা ৩৯ হাজার ৪৯৪ জন। সংক্রমিতদের মধ্যে শহরের ৩১ হাজার ৩৫৩ জন ও গ্রামের ৮ হাজার ১৪১ জন।
রোববার চট্টগ্রামের সব উপজেলায় করোনা রোগী পাওয়া গেছে। এর মধ্যে হাটহাজারী ও রাউজানে ৯ জন করে, ফটিকছড়িতে ৮ জন, পটিয়া ও আনোয়ারায় ৭ জন করে, বোয়ালখালীতে ৪ জন, রাঙ্গুনিয়া ও চন্দনাইশে ৩ জন করে, সীতাকুণ্ড, মিরসরাই, লোহাগাড়া ও সাতকানিয়ায় ২ জন করে এবং বাঁশখালী ও সন্দ্বীপে ১ জন করে রয়েছেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় একজনের মৃত্যু হয়। ফলে জেলায় মোট মৃতের সংখ্যা এখন ৩৮৫ জন। এর মধ্যে ২৮২ জন শহরের ও ১০৩ জন গ্রামের। সুস্থ্যতার ছাড়পত্র দেয়া হয় ৫৩ জনকে। মোট আরোগ্যলাভকারীর সংখ্যা ৩৩ হাজার ৮৯৫ জনে উন্নীত হলো। এর মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থেকে সুস্থ্য হন ৪ হাজার ৫৯০ জন এবং বাসায় আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসায় আরোগ্য লাভ করেন ২৯ হাজার ৩০৫ জন। হোম আইসোলেশন বা কোয়ারেন্টাইনে নতুন যুক্ত হন ৩০ জন ও ছাড়পত্র নেন ১০ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে আছেন ১ হাজার ১৬৪ জন।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রামে এ মাসে গতকালসহ ৮ দিন দুই শতাধিক এবং ২৬ মার্চ রেকর্ড ৩৫৩ জনের দেহে সংক্রমণ শনাক্ত হয়। গতকাল ছিল এ মাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ এবং ২৬ মার্চ নয় মাসের সর্বোচ্চ। এছাড়া, করোনার সংক্রমণ এখন গ্রামেও ছড়িয়ে পড়ছে। রোববার চট্টগ্রামের ১৪ উপজেলার সবগুলোতেই রোগী পাওয়া যায়, যা আগে কখনো হয়নি।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ল্যাবে গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি ১ হাজার ৫০ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এখানে ১৩ জন শহরের বাসিন্দার নমুনায় জীবাণু ধরা পড়ে। ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস ল্যাবে ৬৪৯টি নমুনায় ১৪টির রেজাল্ট পজিটিভ আসে। এরা সবাই শহরের বাসিন্দা। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ১৬৬টি নমুনার মধ্যে শহরের ২১ ও গ্রামের ১৯টিতে করোনাভাইরাস পাওয়া যায়। ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ২০৮ জনের নমুনায় গ্রামের ১১ জনসহ ৫৩ জন আক্রান্ত শনাক্ত হন। নগরীর বিশেষায়িত কোভিড চিকিৎসা কেন্দ্র আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের রিজিওনাল টিবি রেফারেল ল্যাবরেটরিতে ৩৭ জনের নমুনা পরীক্ষার জন্য দেয়া হয়। এর মধ্যে শহরের ১০ জন ও গ্রামের ৬ জন জীবাণুবাহক চিহ্নিত হন।
বেসরকারি তিন ল্যাবরেটরির মধ্যে শেভরনে ৬৪২ এবং মা ও শিশু হাসপাতালে ৩১টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। শেভরণে গ্রামের ২২ জনসহ ১০৪ জন এবং মা ও শিশু’তে গ্রামের ২ জনসহ ১৭ জনের শরীরে ভাইরাস থাকার প্রমাণ মিলে। ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল ও কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে কোনো নমুনা পরীক্ষা হয়নি।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্ট বিশ্লেষণে চমেকে ১ দশমিক ২৪ শতাংশ, বিআইটিআইডি’তে ৫ দশমিক ০৮, চবি’তে ২৪ দশমিক ১০, সিভাসু’তে ২৫ দশমিক ৪৮, আরটিআরএলে ৪৩ দশমিক ২৪, শেভরনে ১৬ দশমিক ১৯ শতাংশ এবং মা ও শিশুতে ৫৪ দশমিক ৮৪ শতাংশ সংক্রমণ হার নির্ণিত হয়।
সূত্র : বাসস
এসএ/