করোনা প্রতিরোধে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১৩ টিপস
প্রকাশিত : ০৯:৫৯, ১০ মার্চ ২০২০ | আপডেট: ১০:৪৫, ১৬ মার্চ ২০২০
চীন থেকে ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসে বিশ্বজুড়ে মারা গেছে ৩ হাজার ৮২৮ জন। শুধু চীনেই মৃতের সংখ্যা ৪ হাজার ৯ জন।
চীনের বাইরে বাংলাদেশসহ আরও ১০৭ দেশে ছড়িয়ে পড়েছে এ ভাইরাস। এসব দেশে মারা গেছে আরও ৭০৯ জন। খবর বিবিসি, রয়টার্স ও আলজাজিরার।
এ ভাইরাসে বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ৯ হাজার ৯৭৭ জনে দাঁড়িয়েছে। চীনে আক্রান্তের সংখ্যা ৮০ হাজার ৭৩৫ জন।
করোনা ভাইরাস এমন একটি জুনেটিক রোগ, যার লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে ফ্লু, কাশি, সর্দি, গলাব্যথা, জ্বর, মাথাব্যথা, হাঁচি ও ক্লান্তি। গুরুত্বর ক্ষেত্রে লক্ষণগুলো হলো–নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়া। আর এসবের শেষ পরিণতি মৃত্যু।
এদিকে দ্রুত সংক্রমণশীল করোনা ভাইরাস থেকে সুরক্ষা টিপস দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
টিপসগুলো মানলে প্রাণঘাতী এই ভাইরাস থেকে নিজেকে সুরক্ষা করতে পারেন পাঠকরা–
১. ভ্রমণ এড়ানো
জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কোথাও ভ্রমণ এড়িয়ে চলুন। আর ফ্লুর মতো লক্ষণ দেখা দিলে (কাশি, জ্বর, সর্দি বা হাঁচির মতো সমস্যা থাকলে যতই প্রয়োজন পড়ুক যে কোনো ধরনের ভ্রমণ করা থেকে বিরত থাকুন।
২. জনবহুল এলাকা এড়িয়ে চলুন
এ ভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে জনবহুল এলাকা এড়িয়ে চলাই শ্রেয়। কারণ এমনও হতে পারে–কোনো ব্যক্তির মধ্যে করোনা ভাইরাসের কোনো লক্ষণ নেই, কিন্তু তিনি এই রোগের জীবাণু বহণকারী। কারণ ১৪ দিনের মধ্যে এ ভাইরাসের লক্ষণ প্রকাশ হয় না। তাই জনবহুল জায়গা এড়িয়ে চলাই শ্রেয়। কারণ এই জনবহুলতা থেকেই ভাইরাসটি আপনাকে সংক্রমিত করতে পারে।
৩. শ্বাসকষ্ট হলে রক্ত পরীক্ষা করুন
ফ্লুর লক্ষণ ও শ্বাস নিতে অসুবিধা হলে অবিলম্বে চিকিৎসকের সাহায্য নিন। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী করোনা টেস্ট করান।
৪. দূরত্ব বজায় রাখুন
যাদের ফ্লু বা সর্দির লক্ষণ রয়েছে, তাদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখুন। কোনো ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলার সময় ০.৫ মি থেকে ২ মি দূরত্ব বজায় রেখে কথা বলুন।
৫. হাত পরিষ্কার রাখুন
কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড ধরে সাবান এবং পানি বা অ্যালকোহলভিত্তিক হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে ঘন ঘন হাত ধুয়ে নিন।
৬. ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখুন
প্রতিদিন আপনার বাড়ির চারপাশ, টেবিল, টয়লেট, কম্পিউটার, ল্যাপটপ, সুইচ এবং স্টেশনারি জিনিস পরিষ্কার করার জন্য জীবাণুনাশক ব্যবহার করুন।
৭. চোখ স্পর্শ করবেন না
সংক্রমিত ব্যক্তি মাস্ক ছাড়াই হাঁচি দেয় বা কাশি হয়, তখন প্যাথোজেনগুলো ফোঁটা আকারে বেরিয়ে আসে এবং চেয়ার বা টেবিলের মতো জিনিসগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে। অন্য কোনো ব্যক্তি যখন সেই জিনিসগুলোকে স্পর্শ করেন এবং সেই হাত দিয়ে তার চোখ, নাক বা মুখ স্পর্শ করেন, তখন রোগের জীবাণুগুলো দেহের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে এবং তাকে সংক্রামিত করে। প্যাথোজেন জিনিসগুলোতে প্রায় ৪৮ ঘণ্টা বেঁচে থাকতে পারে।
৮. প্রবীণদের বিশেষ যত্ন নিন
বয়স্কদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল থাকে, যার কারণে বৃদ্ধ এবং পরিবারের অসুস্থ সদস্যদের বিশেষ যত্ন নেয়ার পরামর্শ দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। কারণ করোনা ভাইরাসে প্রবীণরাই বেশি মারা যাচ্ছেন।
৯. মুখ ও নাক ঢেকে রাখুন
আপনার যদি ফ্লুর মতো লক্ষণ থাকে ও কাশি বা ঘন ঘন হাঁচি হয়, তবে সর্বদা টিস্যু ব্যবহার করুন এবং ব্যবহারের সঙ্গে সঙ্গেই এটি ত্যাগ করুন। আর অ্যালকোহলভিত্তিক সাবান ও প্রবহমান পানিতে হাত ধুয়ে নিন।
১০. মাস্ক স্পর্শ করবেন না
আপনি যদি মুখ ও নাক ঢাকতে মাস্ক পরে থাকেন, তবে একবার এটি পরে যাওয়ার পর খালি হাতে এটিকে স্পর্শ করবেন না। মাস্কটি ব্যবহারের পর এটি নিরাপদে সরিয়ে ফেলুন। সঙ্গে সঙ্গে হাত ধুয়ে ফেলুন।
১১. কাঁচা খাবার খাওয়া এড়িয়ে চলুন
কাঁচা, কম সিদ্ধ বা আধাসিদ্ধ রান্না করা খাবার খাবেন না। সঠিকভাবে রান্না খাবার খাবেন। মাংসজাতীয় খাবার এড়ানো উচিত। কাঁচা মাংস বা মৃত প্রাণীর কোনো অংশ স্পর্শ করলে অবিলম্বে হাত ধুয়ে ফেলুন।
১২. যেখানে-সেখানে থুতু ফেলবেন না
জনসাধারণের মাঝে, রাস্তাঘাটে যেখানে-সেখানে থুতু ফেলবেন না। এর মাধ্যমেও কেউ সংক্রামিত হতে পারে।
১৩. প্রাণীদের সংস্পর্শে যাবেন না
প্রাণীদের সংস্পর্শে যাবেন না। খামার বা পশুর বাজারে বা যেখানে পশু কাটা করা হয়, সেখানে যাওয়া এড়িয়ে চলুন। এ ছাড়া জীবিত প্রাণী যারা অসুস্থ তাদের সঙ্গে যোগাযোগ এড়ান। আদর করা, গায়ে হাত দেয়া যাবে না। এমনকি পাশাপাশি দাঁড়িয়ে থাকাও যাবে না।