করোনাতঙ্কে রাজধানীতে সুনশান নীরবতা
প্রকাশিত : ১৩:২৬, ২১ মার্চ ২০২০ | আপডেট: ১৩:২৯, ২১ মার্চ ২০২০
প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাসে ছেয়ে গেছে বিশ্ব। যার প্রকোপ থেকে রেহাই পায়নি বাংলাদেশ। করোনার প্রভাবে ইতিমধ্যে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। নিষিদ্ধ করা হয়েছে জনসমাগম।
রাজধানীর সঙ্গে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে কয়েকটি জেলার দূরপাল্লার সড়ক যোগাযোগ। লকডাউন করা হয়েছে ঢাকা বিভাগীয় জেলা শরীয়তপুর। সবমিলে দেশব্যাপী চাপা আতঙ্ক বিরাজ করছে।
যার সবচেয়ে প্রভাব পড়েছে রাজধানী ঢাকায়। ব্যস্ততম এই শহরের অন্যান্য ছুটির দিনে বেলা বাড়ার সাথে সাথে গাড়িঘোড়ার সংখ্যা বেড়ে যায়, বাধে যানজট।
সে তুলনায় গত দু’দিনের ছুটিতে রাজধানীজুড়ে সুনশান নীরবতা চলছে। যে রাস্তায় ছুটির দিনেও জ্যামে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হয় বাসে, সেখানে তেমন একটা দেখা নেই গণপরিবহনগুলির।
অন্যান্য ছুটির দিনে পরিবার নিয়ে ঘুরতে বের হলেও করোনার সংক্রমণ এড়াতে বাইরে বের হচ্ছে না মানুষ। ফলে রাজধানীর রাস্তাগুলো এখন অনেকটাই ফাঁকা। যদিও আজকে ঢাকা-১০ আসনের উপ-নির্বাচনের কারণেও রাস্তাঘাট ফাঁকা বলে জানিয়েছে অনেকেই।
বেসরকারি চাকরিজীবীদের যাদের আজ অফিস করতে হচ্ছে, তাদের অনেকেই অফিসের নির্দেশনা অনুযায়ী ঘরে বসেই কাজ করছেন। কেউ বা ছুটি নিয়ে বাড়তি নিরাপত্তার জন্য বাসায় সময় কাটাচ্ছেন। আবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ দেয়ায় গ্রামের বাড়িতে ছুটছেন অনেকে।
রাজধানীর গাবতলী, সায়েদাবাদ, কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন, সদরঘাটে গতকাল শুক্রবারের ন্যায় আজ শনিবারও ভিড় দেখা গেছে। তবে, মফস্বলে যাওয়া লোকদের তুলনায় রাজধানীতে ঢোকার সংখ্যা নিতান্তই কম।
ঢাকার ব্যস্ততম জায়গা গুলিস্তান, ফার্মগেট, যাত্রাবাড়ী, সায়েদাবাদ, গাবতলী, শাহবাগ, মতিঝিল, পল্টন, বাংলামোটর, কাকরাইল এলাকা ঘুরে দেখা যায়, এসব এলাকা অনেকটাই ফাঁকা। কোথাও যানজট নেই। ব্যস্ত মোড়গুলোতে মানুষের জটলাও নেই। যাত্রী সংকটে বাস ও মিনিবাসগুলোকে স্টপেজে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।
অন্যান্য দিনে কাওরান বাজার মোড়ে যানজট নিরসনে হিমশিম খেতে হয়। সেখানে ট্রাফিক পুলিশের তেমন একটা উপস্থিতি আজ চোখে পড়েনি। ফাঁকা রাস্তা হওয়ায় কিছু প্রাইভেটকার ও রিকশা চলতে দেখা যায় বেশি। ফলে বসে থেকে সময় কাটছে দায়িত্বরত এসব ব্যক্তিদের।
জানতে চাইলে কারওয়ান বাজার মোড়ে দায়িত্বরত ট্রাফিক সার্জেন্ট জহিরুল ইসলাম একুশে টিভি অনলাইন বলেন, ‘ছুটির দিনে রাস্তা অনেক সময় ফাঁকা থাকে, তাই বলে এতোটা। করোনাতঙ্কে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ দেয়ায় অনেকে বাড়ি গেছেন, অনেকে ঘর থেকে সহসাই বের হচ্ছেন না। তাই রাস্তাঘাটে গণপরিবহনের সংখ্যা কম। এ অবস্থা আরও বাড়তে পারে।’
তিনি বলেন, ‘করোনার প্রকোপ থেকে রেহাই পেতে আমাদের ওপর কিছু নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। হ্যান্ড স্যানিটাইজার, গ্লাভস দেয়া হয়েছে। জনসাধারণের জন্য রাস্তার পাশে ওয়াসা কর্তৃক পানির বক্স বসানো হয়েছে। সেখানে হাত ধোঁয়ার জন্য সাবানের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।’
বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনার ভাইরাসে আজ শনিবার সকাল পর্যন্ত ২০ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে মারা গেছেন একজন।