ঢাকা, সোমবার   ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

করোনা মোকাবেলায় চীনই এখন মডেল

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৫:৪৯, ২২ মার্চ ২০২০

চীনের একটি কারখানায় করোনা চিকিৎসায় ব্যবহৃত সামগ্রী প্রস্তুত করা হচ্ছে। ছবি: সংগৃহীত

চীনের একটি কারখানায় করোনা চিকিৎসায় ব্যবহৃত সামগ্রী প্রস্তুত করা হচ্ছে। ছবি: সংগৃহীত

করোনা ভাইরাসের উৎপত্তি চীনে। প্রাণঘাতী ভাইরাসটির আক্রমণে বিশ্বের জনবহুল দেশটি যায় কেঁপে। স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা ক্রমশ লড়তে থাকে নতুন ধরনের এই ভাইরাসটির সঙ্গে। এরই মধ্যে দেশটিতে প্রাণ হারায় ৩ হাজার ২৬১ জন। এত লোক হারিয়েও দেশটি থমকে যায়নি, প্রায় আড়াই মাস লড়াই শেষে ভাইরাসটিকে নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়ে। তাই বিশ্বের কাছে চীন এখন ‘করোনা মোকাবেলায় মডেল’।

চীনের হুবেই প্রদেশে গত তিন দিনে করোনায় নতুন করে কেউ আক্রান্ত হয়নি। চিকিৎসকদের একাগ্র প্রচেষ্টায় পুরোপুরি সফল তারা। করোনা প্রতিরোধে চীনই এখন বিশ্বের কাছে ভরসা। ইতিমধ্যে চিকিৎসা সরঞ্জাম, পরামর্শ চেয়ে চীনের দ্বারস্থ অনেক করোনা আক্রান্ত দেশ। চীনও সাহায্যের হাত প্রসারিত করছে স্বতফূর্তভাবে। 

মেডিকেল সরঞ্জামের পাশাপাশি করোনা বিশেষজ্ঞ পাঠিয়ে সহায়তা করছে চীন। গত এক সপ্তাহে ইতালি, ফিলিপাইন, পাকিস্তান, কম্বোডিয়া, ফ্রান্স, স্পেন ও ভ্যাটিক্যান সিটিতে কয়েক কোটি সার্জিক্যাল মাস্ক, টেস্ট কিট, ভেন্টিলেটর পাঠিয়েছে চীন। এমনকি ইরাক ও ইরানে করোনা বিশেষজ্ঞ টিম পাঠিয়েছে তারা। দেশটির অর্থনীতি বিপর্যয়ের মধ্যেও শ্রীলংকাকে ৫০ কোটি ডলার আর্থিক সহায়তা দিয়েছে করোনা মোকাবেলার জন্য।

এছাড়া চীনের শীর্ষ ধনী জ্যাক মা’র পক্ষ থেকে ইউরোপের দেশগুলোকে ২০ লাখ মাস্ক প্রদানের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে বেলজিয়াম, স্পেন ও ইতালিতে জাহাজে করে সেসব পণ্য পৌঁছে গেছে। গত বুধবার ফ্রান্সকে আরও ১০ লাখ মাস্ক পাঠিয়েছে চীন। যুক্তরাষ্ট্রকে পাঁচ লাখ টেস্ট কিট ও ১০ লাখ ফেস মাস্ক দান করেছেন আলিবাবার প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক। 

গত ২ মার্চ জাপানকে ১০ লাখ, ৬ মার্চ ইরানকে ১০ লাখ মাস্ক পাঠিয়েছেন এ ধনকুবের। এছাড়া এশিয়ার দেশগুলোকে ১৮ লাখ মাস্ক ও দুই লাখ ১০ হাজার করোনা টেস্ট কিট পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। শুক্রবার এক টুইট বার্তায় জ্যাক জানান, আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, কম্বোডিয়া, লাওস, মালদ্বীপ, মঙ্গোলিয়া, মিয়ানমার, নেপাল, পাকিস্তান ও শ্রীলংকাকে সুরক্ষামূলক পোশাক, ভেন্টিলেটর, থার্মোমিটার ও মাস্ক পাঠানো হবে।

চীনের বিপদে জানুয়ারিতে মাস্ক পাঠিয়ে সহায়তা করেছিল ভ্যাটিক্যান সিটি। এবার তাদেরকেই ২৪ হাজার মাস্ক পাঠিয়ে সহায়তা করেছে বেইজিং। সার্বিয়ার প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার ভুসিকের অনুরোধে তাদেরও মেডিকেল সরঞ্জাম পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছে চীন। ফিলিপাইনকে এক লাখ টেস্ট কিটসহ অন্যান্য মেডিকেল সরঞ্জাম দান করার ঘোষণা দিয়েছে বেইজিং। 

মহামারী এই ভাইরাসটি নিয়ন্ত্রণে আনতে নানামুখী পদক্ষেপ নেয় চীন। করোনায় আক্রান্ত শনাক্ত হওয়ার কয়েক দিনের মধ্যেই উহান শহর লকডাউন করে দেয় চীন। আক্রান্ত বাড়তে শুরু করলেই হুবেই প্রদেশও লকডাউন করা হয়। খাদ্য ও ওষুধ ছাড়া সব দোকান, শপিংমল সবই ছিল বন্ধ। গণপরিবহন, স্কুল-কলেজও বন্ধ রাখা হয়। কোন কোন ক্ষেত্রে কুরিয়ারের মাধ্যমে খাবার পৌঁছে দেয়া হয়।

এরপরে ঘরে ঘরে গিয়ে নাগরিকদের পরীক্ষা করেছেন দেশটির চিকিৎসকরা। করোনা আক্রান্ত শনাক্ত হলেই তাকে আইসোলেশনে পাঠিয়েছেন। সেখানে নিবির পরিচর্যায় রেখে চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করা হয়েছে আক্রান্তদের।

চীনে এ পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৮১ হাজার ৫৪ জন। এর মধ্যে থেকে ইতিমধ্যে ৭২ হাজার ৪৪০ জন সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরেছেন।

এএইচ/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি