যুক্তরাষ্ট্রে ভয়াবহ পিপিই সঙ্কটে মৃত্যুর মুখে মার্কিন চিকিৎসকরা
প্রকাশিত : ০৮:২৫, ২৭ মার্চ ২০২০
করোনায় ভালো নেই বিশ্ব। ভালো নেই যুক্তরাষ্ট্র। ভালো নেই চিকিৎসকরা। করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে নিরলসভাবে কাজ করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে মারা যাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্যকর্মীরা। গত সপ্তাহে পরীক্ষার পর করোনা ধরা পড়ে মিসোরি রাজ্যের সেন্ট লুইসের সেন্ট ম্যারি হসপিটালের নার্স জুডি উইলসন গ্রিফফিনের। পরে তিনি মারা গেছেন।
জর্জিয়ায় দু’জন স্বাস্থ্যসেবাকর্মী দায়িত্ব পালনকালে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর মারা গেছেন। তাদের মধ্যে ৪৮ বছর বয়সী নারী কাজ করতেন ডোনালসলভিলে হসপিটালে এবং ৪২ বছর বয়সী অপর একজন পেডমন্ট নিউনান হসপিটালে কর্মরত ছিলেন।
স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ম্যানহাটনে ৪৮ বছর বয়সী একজন নার্স করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। কয়েকদিন আগে করোনা ভাইরাস ধরা পড়ার পর গত মঙ্গলবার তিনি মারা যান।
যুক্তরাষ্ট্রের চিকিৎসক, নার্স এবং হাসপাতালে কর্মরত অন্যরা বেশ কিছুদিন থেকেই ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রীর (পিপিই) অভাবের কথা বলে আসছেন। সুরক্ষা স্যুট, মাস্ক, গ্লোভস, হেড কভার প্রয়োজনের তুলনায় পাচ্ছেন না তারা। সে কারণে অনেক বেশি ঝুঁকির মধ্যে কাজ করতে হচ্ছে তাদের।
সিটলের একটি হাসপাতালের নার্স ডন আলদিনজার বলেন, আমাদের হাসপাতালের প্রত্যেকেই নিজের অবস্থান থেকে সর্বোচ্চটা দিয়ে কাজ করছে। আমাদের বিশ্বাস, এই সঙ্কট আমরা কাটিয়ে উঠতে পারবো।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চিকিৎসকদের পিপিই সরবরাহ করা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। কারণ, তারা সুস্থ না থাকলে অন্যদের সেবা দেওয়া বাধাগ্রস্ত হবে।
এরই মধ্যে অবশ্য চিকিৎসক এবং নার্সদের মধ্যে কেউ করোনায় আক্রান্তের শঙ্কা তৈরি হলে জরুরি ভিত্তিতে কিছু রাজ্যে পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
জানা গেছে, ক্যালিফোর্নিয়ায় অন্তত ৩৫ জন ডাক্তার এবং নার্স করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন। তবে অন্যান্য রাজ্যে বেশি পরিমাণে এটি পরীক্ষা করা হলে সেই সংখ্যা বাড়ার শঙ্কা রয়েছে।
ওয়াশিংটনেও চিকিৎসক এবং নার্সদের অনেকেই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তবে সঙ্গত কিছু কারণে সেই সংখ্যা প্রকাশ করা হয়নি। স্বাস্থ্যকর্মীরা আক্রান্ত এবং মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে, ইলিনইস, নিউ জার্সি, নিউইয়র্কসহ অন্যান্য রাজ্যেও। করোনা পরীক্ষার কিট এবং পিপিই সঙ্কট আরো প্রকট হচ্ছে।
এদিকে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের তালিকায় চীন-ইতালিকে ছাড়িয়ে সবার ওপর যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে এখন মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৮৩ হাজার ১১৩ জন, যা গোটা বিশ্বের মধ্যেই সর্বোচ্চ। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছেন প্রায় ১৫ হাজার।
যুক্তরাষ্ট্রে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৭১ জন। এ নিয়ে সেখানে মোট প্রাণহানির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ১৯৮ জন।
যুক্তরাষ্ট্রে করোনা আক্রান্তদের প্রায় অর্ধেকই নিউ ইয়র্কে। অঙ্গরাজ্যটি প্রায় ৪০ হাজার মানুষের শরীরে প্রাণঘাতী এই ভাইরাস ধরা পড়েছে।
এসএ/