এক বৃদ্ধ করোনা দিয়ে গেলেন ২৩ জনকে
প্রকাশিত : ১৯:২৫, ২৭ মার্চ ২০২০ | আপডেট: ১৯:৪৭, ২৭ মার্চ ২০২০
বিদেশ থেকে ফিরেছেন। কিন্তু কোয়ারেন্টাইনে না থেকে সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন। মেলামেশা করেছেন অন্তত একশো জনের সঙ্গে। নোভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে পঞ্জাবে মৃত প্রথম ব্যক্তির সম্পর্কে এমন তথ্যই জানতে পেরেছে প্রদেশটির প্রশাসন।
ভারতীয় গণমাধ্যমকে প্রশাসন জানায়, রাজ্যের ৩৩ জন আক্রান্তের মধ্যে অন্তত ২৩ জনই তার সংস্পর্শে আসার ফলে সংক্রমিত হয়েছেন। ওই বৃদ্ধের সংস্পর্শে কারা কারা এসেছেন, তাদের খোঁজ শুরু করেছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর।
এই ঘটনাকে একটা 'অশনি সঙ্কেত' হিসাবে দেখা উচিত বলে মনে করছেন অনেকে। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বা এতে সংক্রমিত হয়ে মৃতের সংখ্যার নিরিখে বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় ভারতে বা এ রাজ্যেও তুলনামূলক ভাবে আশঙ্কা কম বলে এখনও অনেকেরই ধারণা। তবে পঞ্জাবের এই ঘটনা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে যে, করোনায় আক্রান্ত এক জনের সংস্পর্শেও একাধিক মানুষের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। করোনা-অতিমারী নিয়ে সচেতনতার অভাব এ রাজ্যেও। প্রকাশ্য জমায়েত তেমন না দেখা গেলেও সামাজিক মেলামেশায় রাশ টানেননি অনেকেই। পঞ্জাবের এই উদাহরণ থেকে অন্তত শিক্ষা নেওয়া উচিত বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
করোনাভাইরাসের আক্রান্ত হয়ে গত ১৮ মার্চ মৃত্যু হয় পঞ্জাবের ওই ব্যক্তির। পঞ্জাব প্রশাসন জানিয়েছে, শহিদ ভগৎ সিংহ নগর জেলার বাসিন্দা বছর সত্তরের ওই বৃদ্ধ স্থানীয় একটি গুরুদ্বারের পুরোহিতের কাজ করতেন। পাশের গ্রামের দুই বন্ধুর সঙ্গে দু’সপ্তাহের জন্য জার্মানি ও ইটালিতে গিয়েছিলেন তিনি। বিদেশ সফর সেরে ৬ মার্চ দেশে ফেরেন ওই বৃদ্ধ। দিল্লি বিমানবন্দরে নামার পর সে দিন গাড়িতে করে পঞ্জাবে তাঁর নিজের গ্রামে ফিরে আসেন। তাঁর মৃত্যুর পর নড়েচড়ে বসে রাজ্য প্রশাসন।
প্রশাসন সূত্রে খবর, বিদেশ থেকে ফেরার পর স্বাস্থ্য দফতরের করোনা সংক্রান্ত কোনও নির্দেশিকাই মানেননি তিনি। ওই বৃদ্ধের পাশাপাশি তাঁর দুই বন্ধুও বিদেশ থেকে ফিরে বাধ্যতামূলক ভাবে গৃহ পর্যবেক্ষণে না থেকে এলাকায় অনেকের সঙ্গে মেলামেশা করেছেন। এমনকি, দেশে ফেরার পর ৮ মার্চ থেকে ১০ মার্চ আনন্দপুর সাহিবে একটি অনুষ্ঠানেও যোগদান করেন। সেখানেই অন্তত একশো জন তাঁর সংস্পর্শে এসেছেন। শুধু তা-ই নয়, ওই বৃদ্ধ এবং তাঁর দুই বন্ধুও আশপাশের অন্তত পনেরোটি গ্রামে ঘোরাফেরা করেছেন।
পঞ্জাবের স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, ওই বৃদ্ধের নিজের পরিবারে ১৪ জন করোনাভাইরাসে সংক্রমিত। তার নাতি-নাতনিরাও অজস্র মানুষজনের সঙ্গে মেলামেশা করেছেন। এই তথ্য জানার পর স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকেরা ওই বৃদ্ধের সংস্পর্শে আসা মানুষজনের খোঁজ শুরু করেছেন।
এসি