ঢাকা, সোমবার   ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

করোনাতঙ্কে রোহিঙ্গারা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:৩৪, ২৮ মার্চ ২০২০

করোনা ভাইরাস সম্পর্কে রোহিঙ্গারা পর্যাপ্ত তথ্য পাচ্ছেন না। ছবি: ডয়চে ভেলে

করোনা ভাইরাস সম্পর্কে রোহিঙ্গারা পর্যাপ্ত তথ্য পাচ্ছেন না। ছবি: ডয়চে ভেলে

কক্সবাজারের বিভিন্ন শিবিরে বাস করা রোহিঙ্গাদের মধ্যে করোনা ভাইরাসের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঐ এলাকায় ইন্টারনেট সেবা চালুর আহবান জানিয়েছে জাতিসংঘ। খবর ডয়চে ভেলে’র। 

গত বছরের শেষ দিকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেয়া হয়। ফলে করোনা ভাইরাস সম্পর্কে রোহিঙ্গারা পর্যাপ্ত তথ্য পাচ্ছেন না বলে জানান রোহিঙ্গা নেতারা।

সৈয়দ উল্লাহ এএফপিকে বলেন, ‘আমাদের অনেকেই জানেন না এই ভাইরাসটা কী, এর মাধ্যমে কী রোগ ছড়ায়? মানুষ শুধু শুনেছে এর কারণে অনেক মানুষ মারা যাচ্ছেন। ইন্টারনেট না থাকায় কী ঘটছে, আমরা জানতে পারছি না। আমরা আল্লাহর দয়ার উপর ভরসা করছি।’ ইন্টারনেট না থাকায় অনেক ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়ছে বলে মনে করেন তিনি। 

বিদেশে বাস করা রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে অনেকে ইতোমধ্যে টেলিফোনে করোনা ভাইরাস সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। 

এ ছাড়া গত সপ্তাহে ভারত থেকে ফেরা চার সদস্য়ের একটি রোহিঙ্গা পরিবারকে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে কোয়ারান্টিনে নেয়ার খবরে রোহিঙ্গাদের মধ্যে করোনা নিয়ে আতঙ্ক তৈরি হয়। এরপর কক্সবাজারে এক নারীর করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবর এই আতঙ্ক আরও বাড়িয়ে দেয়। 

রোহিঙ্গা নেতা মোহাম্মদ জুবায়ের বলেন, ‘আমরা খুবই আতঙ্কিত। ভাইরাস যদি এখানে আসে তাহলে দাবানলের মতো তা ছড়িয়ে পড়তে পারে। অনেক ত্রাণকর্মী ও স্থানীয় কমিউনিটি কর্মী প্রতিদিন ক্যাম্পে ঢোকেন। অভিবাসী কয়েকজন রোহিঙ্গাও সম্প্রতি এখানে ফিরে এসেছেন। তারা হয়ত ভাইরাসটা বহন করছেন।’

ক্যাম্পে বাস করা আরেক রোহিঙ্গা লোকমান হাকিম ক্যাম্পগুলোতে করোনা প্রতিরোধে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না নেয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের শুধু সাবান দেয়া হয়েছে এবং হাত ধুতে বলা হয়েছে।’

টেকনাফের কুতুপালং শরণার্থী শিবিরের বেশিরভাগ রাস্তার প্রস্থ দুই মিটারের মতো। করোনার বিস্তার কমাতে বিভিন্ন দেশ তাদের নাগরিকদের এক অপরের চেয়ে এই পরিমাণ দূরত্ব বজায় রাখার পরামর্শ দিচ্ছে। এছাড়া ক্যাম্পগুলোর ১০ বর্গমিটার আকারের একেকটি ঘরে সর্বোচ্চ ১২ জন করে থাকেন। এক ত্রাণকর্মী বলেন, ‘পাশের ঘর থেকে প্রতিবেশীর শ্বাস নেয়ার শব্দ শোনা যায়।’ ডক্টর উইদাউট বর্ডারের বাংলাদেশ প্রধান পল ব্রোকম্যান বলেন, ‘রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা আসলে অসম্ভব।’

ইতোমধ্যে ক্যাম্পগুলোতে হাত ধোয়া ও হাইজিন ক্যাম্পেন চালু করেছে জাতিসংঘ। এছাড়া ক্যাম্পগুলোতে স্বাভাবিক ইন্টারনেট সেবা চালু করতে বাংলাদেশ সরকারকে আহবান জানিয়েছে তারা। জীবন বাঁচানো কর্মসূচির সফলতার জন্য দ্রুত ও কার্যকর যোগাযোগ প্রয়োজন বলে জানান ক্যাম্পে কাজ করা জাতিসংঘের মুখপাত্র লুইস ডনোভান। তবে ক্যাম্পে ইন্টারনেট সেবা চালুর বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চায়নি বাংলাদেশের শরণার্থী বিষয়ক কমিশনারের কার্যালয়। ক্যাম্পগুলোতে বাইরের যোগাযোগ কমানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কমিশনার কার্যালয়ের কর্মকর্তা বিমল চাকমা বলেন, ‘আমরা ক্যাম্পে ত্রাণ কার্যক্রম কমিয়েছি৷ শুধুমাত্র খাবার, স্বাস্থ্য ও আইন সংক্রান্ত কাজ চলবে।’

এমএস/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি