ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪

যেভাবে করোনা রুখে দিল শ্রীলংকা

মঈন বকুল

প্রকাশিত : ১৬:১৫, ২ এপ্রিল ২০২০ | আপডেট: ১৬:২২, ২ এপ্রিল ২০২০

ভারত ও পাকিস্তানের মতো অত্যধিক জনগোষ্ঠীর দেশগুলোতে করোনা ভাইরাস প্রতিনিয়ত সংক্রমণ বৃদ্ধি পেলেও এই ভাইরাসকে রুখে দিয়েছে আরেক প্রতিবেশি দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলংকা। করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এরই মধ্যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে দেশটি।

শ্রীলংকার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা বিশ্বজুড়ে সমাদৃত। এ ব্যবস্থায় তারা হাজারো যোগ্যতাসম্পন্ন স্বাস্থ্য সুরক্ষা কর্মী গড়ে তুলতে পেরেছে। এমনকি দেশটির প্রাইভেট স্বাস্থ্য ব্যবস্থাও বেশ কড়া নিয়মের মধ্য দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে। এ শক্তিশালী ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে তারা জনগণের সুস্বাস্থ্যের বিষয়টিও নিশ্চিত করেছে, যা করোনা নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। 

সবশেষ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, শ্রীলঙ্কায় করোনা ভাইরাসে ৩ জন মারা গেছে ও অন্তত ১২৪ জন মানুষের শরীরে এই ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এছাড়া কোয়ারান্টাইনে আছে অন্তত ২৫১ জন এবং সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে ২১ জন।

সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্বব্যাপী করোনা যখন হুমকি হয়ে সামনে আসতে শুরু করে, তখনই শ্রীলংকা সরকার তাত্ক্ষণিকভাবে সতর্ক ব্যবস্থা নেয়া শুরু করে। সরকার বিমানবন্দর ও সীমান্তগুলোতেও নিজেদের নিয়ন্ত্রণ বাড়ানোর পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ পর্যটকদেরও হুমকিস্বরূপ বিবেচনায় নিতে থাকে।

শ্রীলঙ্কার এরকম সাফল্যের রহস্যর বিষয়ে বার্তা সংস্থা এএফপির বিশ্লেষণে জানা যায়, জানুয়ারির ২৬ তারিখ শ্রীলঙ্কায় করোনা ভাইরাসের প্রথম ব্যক্তি শনাক্ত হওয়ার পর থেকেই পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তুতি শুরু করে দেশটি। সাধারণ ছুটির নামে ১৪ মার্চ থেকে প্রথম ধাপে লকডাউনের দুই সপ্তাহ আগে কূটনীতিকদের নিয়ে ব্রিফিং করেন শ্রীলঙ্কার পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীনেশ গুনাবর্ধানে। 

করোনা ভাইরাসের ফলে সৃষ্ট পরিস্থিতি সামাল দিতে শ্রীলঙ্কার সেনাবাহিনীর প্রধানকে প্রধান সমন্বয়কারী করা হলেও সেনাবাহিনী মূলত সমন্বয়ের কাজটি করেছে। তবে লোকজনের ঘর থেকে বের হওয়া প্রতিহত করাসহ সব ধরনের নজরদারি ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে থেকেছে পুলিশ এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী অন্যান্য বাহিনী। ১৫ মার্চ সাধারণ ছুটির মেয়াদ কয়েক দফা বাড়ানো হয়। ২৫ মার্চ প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে অনির্দিষ্টকালের জন্য লকডাউন ঘোষণা করেন।

এ বিষয়ে কলম্বোতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার এম রিয়াজ হামিদুল্লাহ বলেন, শ্রীলঙ্কা বিদেশফেরত লোকজনকে যথাযথভাবে কোয়ারেন্টিনে নিতে পুলিশকে কার্যকরভাবে কাজে লাগিয়েছে। মার্চের ১ থেকে ১৫ তারিখ পর্যন্ত চীন, ইতালি, দক্ষিণ কোরিয়াফেরত লোকজনকে বাড়িতে কোয়ারেন্টিনে যাওয়ার পাশাপাশি নাম-ঠিকানা দিয়ে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে বলে শ্রীলঙ্কার পুলিশ। ওই ঘোষণার পরও বিদেশফেরত লোকজনের সবাই পুলিশের কাছে নিবন্ধন না করায় পরে আরেকটি নির্দেশ জারি করে পুলিশ। 

ওই নির্দেশে বলা হয়, যাঁরা পুলিশের কাছে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নিবন্ধন করছেন না, তাঁদের ব্যক্তিগত সম্পত্তি ক্রোক করা হবে। এর পরই বাকি লোকজন পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে নাম-ঠিকানা দিয়ে কোয়ারেন্টিনে গেছেন।
 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি