করোনারোগী শনাক্ত ৫২ জেলায়, শীর্ষে ঢাকা
প্রকাশিত : ১৫:৫৮, ১৯ এপ্রিল ২০২০
করোনা ভাইরাসের পরিসংখ্যান
দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা করা হয় ২ হাজার ৬৩৪ জনের। প্রাপ্ত রিপোর্ট অনুযায়ী, নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছেন আরও ৩১২ জন। যাতে মোট আক্রান্ত শনাক্ত হলেন ২ হাজার ৪৫৬ জন। ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে আরও ৭ জনের। এ নিয়ে দেশে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ৯১-এ। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন আরও ৯ জন। অর্থাৎ মোট সুস্থের সংখ্যা ৭৫।
রোববার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়। অনলাইনে বুলেটিন উপস্থাপন করেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা, তার সঙ্গে ছিলেন অধিদফতরের এমআইএস পরিচালক ডা. হাবিবুর রহমান খান। নিজের বাসা থেকে এতে সংযুক্ত হয়ে কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
মন্ত্রী জানান, করোনা ভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় দুই হাজার ৬৩৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। সব মিলিয়ে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ২৩ হাজার ৮২৫ জনের। নতুন যাদের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে, তাদের মধ্যে আরও ৩১২ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। ফলে করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ৪৫৬ জনে। আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে মারা গেছেন আরও সাতজন। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ৯১ জনে। এছাড়া সুস্থ হয়ে উঠেছেন আরও নয়জন। ফলে মোট সুস্থ রোগীর সংখ্যা ৭৫ জন।
জাহিদ মালেক বলেন, করোনায় আক্রান্ত হয়ে যারা ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) ভেন্টিলেটর মেশিনে চিকিৎসা নিয়েছেন, এমন নয়জন রোগীর মধ্যে আটজনই মারা গেছেন। সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউতে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়নি। তবে অক্সিজেন সিলিন্ডার ব্যবহারে ভালো ফলাফল পাওয়া যাচ্ছে। ইতোমধ্যে সাড়ে তিন হাজার অক্সিজেন সিলিন্ডার কিনতে আদেশ দেয়া হয়েছে। সারাদেশে ১০ হাজার অক্সিজেন সিলিন্ডার মজুদ রয়েছে।
করোনার ঝুঁকি এড়াতে সামাজিক দূরত্ব বজায়ের নির্দেশনা থাকলেও তা পালন হচ্ছে না জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, লকডাউন সঠিকভাবে পালন হচ্ছে না। আক্রান্ত লোকজন নতুন নতুন এলাকায় যাচ্ছেন। ফলে ওইসব এলাকার লোকজনও আক্রান্ত হচ্ছেন। এতে কমিউনিটি ট্রান্সমিশন বেড়ে যাচ্ছে।
বুলেটিন উপস্থাপনকালে করোনার বিস্তাররোধে সবাইকে বাড়িতে থাকার এবং স্বাস্থ্য বিভাগের পরামর্শ মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়।
এদিকে, জেলাভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ঢাকা শহরে, যা শতকরা ৩২ ভাগ। এরপর আছে গাজীপুর। গাজীপুরে নতুন শনাক্ত হয়েছে। এর আগে যারা শনাক্ত হয়েছিলেন তারা বেশির ভাগই নারায়ণগঞ্জ থেকে গেছেন। গাজীপুরের পরই নতুন সংক্রমণ দেখা যাচ্ছে নরসিংদী ও কিশোরগঞ্জ।
এখন পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ২১ হাজার ১৯১টি। গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে আছেন ৬৬ জন। আর মোট আইসোলেশনে আছেন ৫৯৯ জন। ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে মুক্ত হয়েছেন ৩২ জন। সব মিলিয়ে মোট মুক্ত হয়েছেন ৫১২ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন ৩ হাজার ৬৪১ জন। এখন পর্যন্ত হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন ১ লাখ ১৪ হাজার ৯২৫ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে আছেন ১৭৪ জন। এখন পর্যন্ত প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে আছেন ৪ হাজার ৮৩৪ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় মোট কোয়ারেন্টিনে নেয়া হয়েছে ৩ হাজার ৮১৫ জনকে। এখন পর্যন্ত ১ লাখ ১৯ হাজার ৭৬৪ জনকে কোয়ারেন্টিনে নেওয়া হয়েছে। কোয়ারেন্টিন থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় ছাড় পেয়েছেন ৪ হাজার ২৬ জন। মোট ছাড় পেয়েছেন ৭১ হাজার ৩৯৩ জন। বর্তমানে হোম কোয়ারেন্টিনে ৪৪ হাজার ২২৭ জন এবং ৪ হাজার ৮৪ জন প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে আছেন। এখন পর্যন্ত মোট কোয়ারেন্টিনে আছেন ৪৮ হাজার ৩৭১ জন।
গত ডিসেম্বরের শেষে চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস এখন গোটা বিশ্বে তাণ্ডব চালাচ্ছে। চীন পরিস্থিতি কিছুটা সামাল দিয়ে উঠলেও এখন ভুগছে ইউরোপ-আমেরিকা-এশিয়াসহ বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চল। এ ভাইরাসে বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের সাড়ে ২৩ লাখ ৩৩ হাজারেরও বেশি। মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে এক লাখ ৬০ হাজার। তবে ছয় লক্ষাধিক রোগী ইতোমধ্যে সুস্থ হয়েছেন।
এনএস/