প্রাকৃতিকভাবেই সৃষ্টি হয়েছে করোনা: ডব্লিউএইচও
প্রকাশিত : ১১:৫২, ২ মে ২০২০
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)
প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাস বা কোভিড-১৯ কোন গবেষণাগার থেকে সৃষ্টি করা হয়নি। এ ভাইরাস প্রাকৃতিভাবেই সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংষ্থা (ডব্লিএইচও। শুক্রবার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানিয়েছেন সংস্থাটির হেলথ ইমার্জেন্সিস প্রোগ্রামের প্রধান মাইকেল রায়ান। করোনা ভাইরাস মোকাবিলার ক্ষেত্রে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) সময় নষ্ট করেনি বলে দাবি করেন তিনি। তিনি বলেছেন, মহামারি ঠেকানোর জন্য চীন ছাড়া বাকি বিশ্ব পর্যাপ্ত সময় পেয়েছিল।
গেল বছরের শেষে চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহানের একটি বন্যপ্রাণীর বাজার থেকে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। বাদুড় থেকেই এটি মানবদেহে ছড়িয়েছে বলে মনে করছেন গবেষকরা। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পসহ অনেকের দাবি, উহান ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজিতে তৈরি হয়েছে সার্স-কোভ-২, যা থেকে কোভিড-১৯ রোগের সৃষ্টি। তবে এ বিষয়ে মাইকেল রায়ান সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘জাতিসংঘের স্বাস্থ্য সংস্থা ভাইরাসটির সিকোয়েন্স নিয়ে কাজ করা গবেষকদের কাছে বহুবার জানতে চেয়েছে। আমাদের নিশ্চিত করা হয়েছে যে, এই ভাইরাসটি প্রাকৃতিক।’ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, তারা বন্যপ্রাণীর মধ্যে করোনা ভাইরাসের উৎস খুঁজতে চীনের সঙ্গে অনুসন্ধানে যোগ দিতে চায়। এ বিষয়ে রায়ান বলেন, ‘বন্যপ্রাণী থেকে মানবদেহে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ কীভাবে ঘটলো সেটা বোঝা জরুরি। কারণ এর মাধ্যমে একই ঘটনা অন্য কোথাও ঘটা প্রতিরোধ ও জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা যাবে।’
সংবাদ সম্মেলনের আগে শুক্রবারও ডব্লিউএইচও প্রধান টেড্রোস আধানম গ্যাব্রিয়েসুস করোনা মহামারি মোকাবিলায় তার সংস্থার বিরুদ্ধে ট্রাম্পের তোলা ব্যর্থতার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘গত ৩০ জানুয়ারি করোভাইরাসে আক্রান্ত রোগী মাত্র ৮২ জন থাকতে ও কোনও প্রাণহানির আগেই সর্বোচ্চ স্বাস্থ্য সতর্কতাসহ আন্তর্জাতিক উদ্বেগ জানিয়েছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। আমরা মোটেও সময় নষ্ট করিনি। (পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে) হস্তক্ষেপ করার জন্য যথেষ্ট সময় পেয়েছিল বিশ্ব।’
করোনা ভাইরাস মহামারি নিয়ে চীন সরকারের পাশাপাশি ডব্লিউএইচও’র কঠোর সমালোচনা করে যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ভাইরাসটির তীব্রতা অগ্রাহ্য করা এবং চীন- ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠার অভিযোগ এনে কিছুদিন আগে ডব্লিউএইচও’র তহবিল বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। তার এই বক্তব্যের বিরোধীতা করে টেড্রোস বলেন, ‘চীন ছাড়া বাকী বিশ্বের ক্ষেত্রে করোনা মোকাবিলার জন্য পর্যাপ্ত সময় হাতে ছিল।’
উল্লেখ্য, ৩০ জানুয়ারি যখন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা করোনাকে মহামারি ঘোষণা করে তখন চীনের বাইরে মাত্র ৮২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে এবং এদের কেউ মারা যায়নি।
জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটির তথ্যমতে, গত চারমাসে বিশ্বের অন্তত ১৮৫টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে নভেল করোনা ভাইরাস। বিশ্বব্যাপী এতে আক্রান্ত হয়েছেন অন্তত ৩৩ লাখ ৪৩ হাজার ৭৭৭ জন। মারা গেছেন ২ লাখ ৩৮ হাজার ৬৫০ জন। আর সুস্থ হয়েছেন ১০ লাখেরও বেশি করোনা রোগী।
এমএস/