ঢাকা, রবিবার   ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

লকডাউন শিথিলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ৬ শর্ত

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৯:১২, ৮ মে ২০২০

করোনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশ যুক্তরাষ্ট্র। এমন ভয়াবহ পরিস্থিতিতেও লকডাউন তুলে নেয়ার চিন্তা করছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। একই পথে হাঁটছে জার্মানি, চীনসহ বিশ্বের আরও কয়েকটি দেশ। এমন অবস্থায় লকডাউন শিথিল করা হলে ভয়াবহ পরিণতি ভোগ করতে হতে পারে বলে হুশিয়ারি দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

লকডাউন প্রত্যাহার বা শিথিল করার আগে ছয়টি শর্ত পূরণের তাগিদ দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। 

সেগুলো হল-১. রোগের সংক্রমণ পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা। ২. দেশের স্বাস্থ্য বিভাগ প্রত্যেক রোগীকে শনাক্ত, পরীক্ষা, আইসোলেশন, চিকিৎসা এবং সংস্পর্শে আসা প্রত্যেককে শনাক্ত করতে সক্ষম। ৩. হাসপাতাল, নার্সিংহোম, সেবাকেন্দ্রগুলোর মতো নাজুক স্থানগুলোয় ঝুঁকি নিম্নতম পর্যায়ে নামিয়ে আনা। ৪. স্কুল-কলেজ, অফিস-আদালত ও অন্যসব দরকারি স্থানে সুরক্ষামূলক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা। ৫. বাইরে থেকে আসা নতুন রোগীদের সামলানো। ৬. সমাজের বাসিন্দারা পুরোপুরি সচেতন, সতর্ক ও নতুন জীবনযাপনের ব্যাপারে অঙ্গীকারবদ্ধ।

িএদিকে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে আরোপিত লকডাউন তড়িঘড়ি করে না তোলার ব্যাপারে হুশিয়ারি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

সংস্থাটির মহাপরিচালক তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস বলেছেন, কিছু দেশে নতুন সংক্রমণ ও মৃত্যু কমছে। কিন্তু অন্য দেশগুলোয় এ সংখ্যা বাড়ছে।

তাই এখনই লকডাউন শিথিল করা যাবে না। লকডাউন তুললে খারাপ পরিণতি ভোগ করতে হবে। এছাড়া হাত ধোয়া, সামাজিক দূরত্বের নিয়ম-কানুন মেনে চলা শিথিল করা যাবে না।

লকডাউন প্রত্যাহার বা শিথিল করার আগে তিনি ছয়টি শর্ত পূরণেরও তাগিদ দিয়েছেন। তিনি বলেন, বিশ্বজুড়ে করোনা মহামারীর অব্যাহত বিস্তার একটা জিনিসই দাবি করে-সেটা হল শিক্ষা। এ গ্রহের প্রত্যেক মানুষকেই এ রোগ থেকে সুরক্ষিত হতে হবে। স্বাস্থ্যসেবায় আরও বিনিয়োগে বিশ্বনেতাদের প্রতি তিনি আহ্বানও জানান। খবর টিভিএনজেড ও রয়টার্সের।

মহাপরিচালক তেদরোস আধানোম বলেন, কিছু দেশ এখন তথাকথিত লকডাউন ও ঘরে থাকার নির্দেশ শিথিল করতে শুরু করেছে। কিন্তু পদক্ষেপগুলো (রোগীর সন্ধান, পৃথকীকরণ, পরীক্ষা ও সব রোগীর চিকিৎসা) শিথিল করা যাবে না।

লকডাউন তুললে মহামারী আরও ভয়াবহরূপে ফিরে আসতে পারে। আমরা এখনও মহামারীটির প্রথম ধাপে রয়েছি। আমাদের সর্বদা সচেতন থাকতে হবে।

তিনি বলেন, সুরক্ষিত থাকার খুব সাধারণ একটি কৌশলই এখন সেরা কৌশল। সেটা হল, হাত পরিষ্কার করা। হাত ধোয়ার এ অভ্যাস জীবন-মৃত্যুর পার্থক্য গড়ে দিতে পারে।

তিনি বলেন, করোনা হুমকি মোকাবেলায় পুরো বিশ্বের একজোট হয়ে লড়াই করার এটাই সুযোগ। শুধু তা-ই নয়, এ পরিস্থিতি সবার জন্য অভিন্ন এক ভবিষ্যতেরও হাতছানি দিচ্ছে, যেখানে সব মানুষই সর্বোচ্চ মানদণ্ডের স্বাস্থ্যসেবা পাবে। তিনি বলেন, এ ভাইরাস আমাদের সঙ্গে দীর্ঘদিন থাকবে এবং একে পরাজিত করতে আমাদের একজোট হয়ে উপকরণ তৈরি ও বণ্টন করতে হবে।

করোনাভাইরাসের টিকা নিয়ে গবেষণা, টিকা তৈরি ও চিকিৎসায় বিশ্বনেতাদের সম্মিলিত উদ্যোগের প্রশংসা করেন আধানোম। তবে তিনি বলেন, আমরা কত দ্রুত ও কত কার্যকর এ ব্যবস্থা করতে পারব, সেটা বিষয় নয়।

বিষয় হল, কতটা সুষমভাবে আমরা তা বণ্টন করতে পারব। আমরা কেউ এমন পৃথিবী মেনে নিতে পারি না, যেখানে কিছু মানুষ সুরক্ষিত, সবাই নয়।

সবাই সুরক্ষিত না হলে কেউই নিরাপদ নয়। সোমবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে মহাপরিচালক তেদরোস আধানোম বলেন, করোনা শনাক্তকরণ পদ্ধতি, চিকিৎসা ও প্রতিষেধক উদ্ভাবনে সহায়তা দিতে ও সমহারে বিতরণ নিশ্চিত করতে ৪০টি দেশের নেতারা যুক্ত হয়েছেন।

করোনার প্রতিষেধক, শনাক্তকরণ পদ্ধতি ও চিকিৎসা পদ্ধতি উদ্ভাবনের গবেষণায় এখন পর্যন্ত ৭৪০ কোটি ইউরো তহবিলের প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে। এটি বৈশ্বিক সংহতির একটি শক্তিশালী ও অনুপ্রেরণাদায়ী প্রদর্শন।

এমবি//


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি