স্বাভাবিকভাবেই করোনা প্রতিরোধী ক্ষমতা গড়ে উঠবে, এ ধারণা ভুল : হু
প্রকাশিত : ১১:৪৩, ১৯ মে ২০২০
করোনাভাইরাসে গোটা বিশ্বে এখন পর্যন্ত ৩ লাখেরও বেশি মানুষ মারা গেলেও ভাইরাসের প্রকোপ কাটিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন প্রায় ১৯ লাখ মানুষ। আর এ থেকেই সাধারণ মানুষের মনে একটা ধারণা ক্রমশ বদ্ধমূল হয়ে উঠছে যে, ধীরে ধীরে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে উঠবে মানুষের শরীরে। অন্যান্য ফ্লু বা ভাইরাস সংক্রমণের মতো এ ক্ষেত্রেও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে হয়তো এমনিতেই সেরে উঠবে মানুষ! কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) জানিয়েছে, এই ধারণা অত্যন্ত বিপজ্জনক! করোনা থেকে বাঁচতে এখনই আরও সতর্ক হওয়া জরুরি।
সম্প্রতি হু’র জরুরি স্বাস্থ্য কর্মসূচির নির্বাহী পরিচালক ড. মাইকেল রায়ান জানান, বিশ্বের করোনা আক্রান্ত দেশগুলোর মানুষের মধ্যে স্বাভাবিকভাবেই এই ভাইরাস প্রতিরোধী ক্ষমতা গড়ে উঠবে, এ ধারণা সম্পূর্ণ ভুল! কোনও ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচতে একটা দেশের সমস্ত নাগরিককে টিকা দেওয়া সম্ভব নয়। সে ক্ষেত্রে বিবেচনা করে দেখা হয়, কাদের টিকা দেওয়া হলে দেশের বেশির ভাগ মানুষকে মহামারির হাত থেকে রক্ষা করা সম্ভব। এ ক্ষেত্রে বিস্তর জটিল গাণিতিক বিশ্লেষণের প্রয়োজন হয়। করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রে ‘হার্ড ইমিউনিটি’র ধারণা আদৌ কার্যকর কিনা, সে বিষয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে।
যখন কোনও দেশের বেশির ভাগ মানুষের শরীরে কোন ভাইরাস বা ব্যাধির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে ওঠে তখন ওই ভাইরাস বা ব্যাধির বিস্তার বা সংক্রমিত হওয়ার গতি স্বাভাবিকভাবেই ধীরে ধীরে কমে আসে এবং একটা সময়ের পর বন্ধ হয়ে যায়। একেই ‘হার্ড ইমিউনিটি’ বলা হয়। করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রে এমনটা না-ও হতে পারে। তাই অন্যান্য ফ্লু বা ভাইরাস সংক্রমণের মতো করোনার ক্ষেত্রেও মানুষ হয়তো নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে এমনিতেই সেরে উঠবে, এ ধারণা অত্যন্ত বিপজ্জনক বলেই মত ড. রায়ানের!
কোভিড-১৯ থেকে সেরে ওঠা ব্যক্তিদের নিয়ে একাধিক সুসংগঠিত গবেষণা ও সমীক্ষা থেকে পাওয়া তথ্য হাতে না পাওয়া পর্যন্ত ‘হার্ড ইমিউনিটি’র সম্পর্কে কোনও স্পষ্ট ধারণা করা সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেন ড. রায়ান। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ, এই ধারণা এখনই ঝেড়ে ফেলতে না পারলে করোনা সংক্রমণের গতি আরও বাড়বে, আক্রান্ত হবেন আরও লাখ লাখ মানুষ। বাড়বে গোষ্ঠী সংক্রমণের ঘটনাও।
এএইচ/