এই সময়ে শিশুর জ্বর হলে কী করবেন?
প্রকাশিত : ১৫:৪০, ২৫ জুন ২০২০
করোনাভাইরাসের অনেকগুলো লক্ষণের মধ্যে জ্বর অন্যতম। তাই কারোর শরীরে জ্বর দেখা দিলে আতঙ্কে ভোগেন পুরো পরিবার। চিকিৎসকদের মতে, শুধু করোনার কারণেই যে জ্বর হচ্ছে তা কিন্তু নয়। বর্ষাকাল এসে গেছে। কখনও ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি, আবার ভ্যাপসা গরম। এই সময় ছোটদের জ্বরের ঝুঁকি অনেকটাই বেড়ে যায়। তাই জ্বর হলেই কোভিড-১৯ মনে করার কোনও কারণ নেই। বরং নজর দিন শিশুর যত্নের প্রতি।
জ্বর কিন্তু আদৌ কোনও রোগ নয়, রোগের উপসর্গ মাত্র। জীবাণুর সংক্রমণ বা অন্যান্য কারণে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা শরীরের তাপমাত্রা বাড়িয়ে দিয়ে ভাইরাসকে শরীর থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করে, তাই জ্বর হয়।
শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, “বেশির ভাগ জ্বরের নেপথ্যেই শ্বাসনালী, গলা, পেট-সহ কোনও না কোনও সংক্রমণ আছে। কোভিড-১৯ ভাইরাস ছাড়াও এই সময়টায় বৃষ্টি ও তাপমাত্রার পরিবর্তনের কারণে জ্বর হতে পারে। তবে ইদানীং শিশুদের বেশির ভাগেরই ভাইরাল ফিভার।
সন্তানের জ্বর হলে যেসবের প্রতি দৃষ্টি দিতে হবে
* করোনা যেহেতু হাঁচি-কাশির মাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এমনকি কথা বলার সময়েও এই জীবানুরা বাতাসে মিশে রোগ ছড়াতে পারে। তাই শিশুদের মাস্ক পরিয়ে রাখা ও ভিড় এড়িয়ে চলার পাশাপাশি হ্যান্ড হাইজিন মেনে চলার অভ্যাসও গড়ে তুলতে হবে।
* বাচ্চার জ্বর হলে ভয় পেয়ে অনেক অভিভাবক শিশুকে তড়িঘড়ি অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু চিকিৎসকদের মতে, শিশুর জ্বর হলে অবশ্যই চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে রাখবেন, কিন্তু নিজে নিজে চিকিৎসা করে বিপদ বাড়াবেন না। জ্বর খুব বেশি হলে মাথায় জলপট্টি দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে উষ্ণ পানি দিয়ে বাচ্চার শরীর স্পঞ্জ করিয়ে দিতে হবে।
* বয়স ও ওজন অনুযায়ী প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ খাওয়াতে হবে। জ্বরের পাশাপাশি বাচ্চার অন্যান্য উপসর্গের দিকেও লক্ষ্য রেখে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
* জ্বর হলে শিশুরা খেতে চায় না, বমি করতে পারে ও পেটে ব্যথা কিংবা ডায়ারিয়াও হতে পারে। এর সঙ্গে মাথা ও হাত-পা ব্যথা করতে পারে। অনেকে দ্রুত জ্বর কমাতে আইব্রুফেন জাতীয় ওষুধ খাইয়ে দেন। ভুলেও এই ওষুধ দেবেন না। বরং মাথা ধুয়ে দিয়ে অল্প গরম পানিতে পুরো শরীর স্পঞ্জ করিয়ে দিলে ভাল হয়।
* জ্বরের সঙ্গে ডায়রিয়া হলে ডিহাইড্রেশনের ঝুঁকি বাড়ে। তাই জ্বরের সময় বাচ্চা খাবার খেতে আপত্তি করলেও বারে বারে পানি, স্যুপ, শরবত জাতীয় খাবার দেওয়া জরুরি।
* জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে বাচ্চা ঝিমিয়ে পড়লে বা জ্ঞান হারালে বাড়িতে রেখে চিকিৎসার বদলে চিকিৎসকের নির্দেশ মেনে হাসপাতালে ভর্তি করা দরকার হতে পারে।
* বাচ্চাদের জ্বর হলেই রক্ত পরীক্ষা করার দরকার নেই। যদি সাধারণ ভাইরাল ফিভারের সঙ্গে গলা ব্যথা, শ্বাসকষ্ট বা ডায়রিয়া এবং বাচ্চা যদি নেতিয়ে পরে তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তবেই রক্ত পরীক্ষা করানো উচিত।
এই পরিস্থিতিতে শিশুকে সুস্থ রাখতে অকারণে বাইরে নিয়ে যাবেন না। বাড়ির পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রেখে মশা মাছির হাত থেকে শিশুদের রক্ষা করে সুস্থ রাখুন।