ঢাকা, মঙ্গলবার   ০১ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

শিশুদের করোনামুক্ত রাখতে যা করবেন

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৮:২৩, ২৯ জুন ২০২০

ডা. নাজমুল ইসলাম

ডা. নাজমুল ইসলাম

Ekushey Television Ltd.

দেশে করোনা রোগীর সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে জনমনে আতঙ্ক। মৃত্যুর মিছিল এবং প্রতিনিয়ত স্বজন হারানোর শোক আমাদের স্থবির করে দিয়েছে অনুভূতির জগতে৷ পরিবারের অন্য সদস্য অপেক্ষা এ সময় শিশুদের নিয়ে বাবা-মা’র মনে দুশ্চিন্তার শেষ নেই। তাদের নিয়ে উদ্বেগ উৎকণ্ঠায় সুস্থ পৃথিবীর প্রহর গুনছেন সকল পিতা-মাতা। করোনার এই ভয়ানক থাবার মাঝে আশার বাণী শোনাচ্ছেন খোদ শিশু বিশেষজ্ঞরা৷ তাদের মতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় খেয়াল রেখে শিশুদের নিয়মিত পরিচর্যা করলে ভয়ের কিছু নেই৷  

শিশুদের ঘরোয়াভাবে যত্ন নেওয়ার কৌশল এবং শারীরিক ও মানসিক সমৃদ্ধির নানা প্রসঙ্গ নিয়ে একুশে টেলিভিশনের সঙ্গে কথা বলেছেন ঢাকা শিশু হাসপাতালের শিশু সার্জারি বিভাগের রেজিস্ট্রার এবং শিশু বিশেষজ্ঞ  ডা. নাজমুল ইসলাম। তথ্য সংগ্রহে ছিলেন-মুছা মল্লিক৷ 

করোনার এই ভয়ানক পরিস্থিতিতে বিশেষ  কিছু নিয়মের সাথে আপনার শিশুর পরিচর্যা নিলে শিশুর শারিরীক এবং মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখা সম্ভব৷ 

•প্রথমেই আপনার শিশুকে সঠিক ধারণা দিন-  এ সময় করোনাভাইরাস সম্পর্কে শিশুকে সঠিক ধারণা দিন। তাকে বুঝিয়ে বলুন, এটি একটি ভাইরাস; ছোঁয়াচে রোগ, যা একজন থেকে আরেকজনের দেহে ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় কেন আমাদের সবাইকে ঘরে থাকতে হবে? বাইরে গেলে কী ধরনের সমস্যা হতে পারে—এসব বিষয়ে শিশুকে পরিষ্কার ধারণা দিতে হবে।

•শেখাতে হবে সঠিকভাবে- পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা সম্পর্কেও শিশুকে ধারণা দিতে হবে। কীভাবে, কত সময় নিয়ে হাত ধুতে হবে, হাঁচি-কাশির সময় শিষ্টাচার মেনে চলা, হাঁচি-কাশির পর কীভাবে টিস্যু ব্যবহার করতে হবে, টিস্যু ব্যবহারের পর ডাস্টবিনে কেন ফেলে দিতে হবে শিশুকে বুঝিয়ে বলতে হবে। মনে রাখতে হবে, এই সময় শিশুর মনে যদি করোনাভাইরাস নিয়ে কোনো প্রশ্ন আসে, সেগুলো এড়িয়ে না গিয়ে উত্তর দিতে হবে। লিফট ব্যবহার করলে লিফটের বাটন, ঘরের দরজার নব, সুইচ কীভাবে চাপতে হবে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে দাঁড়ানো মানে কী, কীভাবে দাঁড়াতে হবে— এগুলোর সঠিক ধারণা দিন। বার বার হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। নাক, মুখ এবং চোখে কেন হাত দেয়া যাবে না বলতে হবে।

•বাড়িতে কেউ অসুস্থ হয়ে গেলে করণীয়- শিশুদের অবশ্যই অসুস্থ ব্যক্তির থেকে দূরে রাখতে হবে। তবে তার আগে তাকে কেন দূরে রাখা হচ্ছে বুঝিয়ে বলতে হবে। জোর করে কিছু করা উচিত হবে না।  

•শিশুর খাবার- এই সময় শিশুর খাবারের প্রতি রাখতে হবে বিশেষ খেয়াল। একই ধরনের খাবার প্রতিদিন না-খাওয়ানোই ভালো। খাবারের ভিন্নতা আনতে হবে। শিশুকে পরিমিত খেতে শেখান। বেশি বেশি ভিটামিন-সি, জিঙ্ক ও আয়রনযুক্ত খাবার খেতে দিতে হবে। ফাস্টফুড জাতীয় খাবার, কোমল পানীয় এড়িয়ে চলতে হবে।

•আপনি হয়ে উঠুন তার বিশ্বস্ত সঙ্গী- শিশুকে পর্যাপ্ত সময় দিতে হবে। এ সময় মা-বাবা সন্তানের পড়াগুলো দেখিয়ে দিতে পারেন। পড়াশোনার রুটিন করে দিতে পারেন। প্রতিদিন অল্প করে পড়ার টার্গেট করে দিতে পারেন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পড়া শেষ করতে পারলে তাকে পুরস্কার দেবেন এভাবে পড়াশোনার প্রতি উৎসাহিত করতে পারেন। তাতে সে ব্যস্ত থাকবে।

•আপনার শিশুর বিনোদন- শিশুকে নিয়ে টেলিভিশনে শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান, কার্টুন দেখতে পারেন। শিশুকে গল্প বা কবিতা শোনাতে পারেন। কিছু ইনডোর গেমস আছে সেগুলো খেলতে পারেন। তবে বেশি সময় নিয়ে টেলিভিশন দেখানো যাবে না। টেলিভিশন দেখার সময় বাচ্চাদের ছোট ছোট প্রশ্নের উওর দিন।

•শিশুকে গঠনমূলক কাজের ধারণা দিন- বাসার ছোট ছোট কাজগুলো করাতে পারেন। মা-বাবা যখন ঘরের কাজ করবেন তখন তার সহযোগিতা চাইবেন। কাজের লোক যখন থাকবে না তখন কীভাবে চলতে হয় সেই শিক্ষা দিন।

•টেলিমেডিসিন সেবা- শিশু অসুস্থ হলে চিকিৎসকের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করুন। এখন অনেক চিকিৎসকই ফোনে (টেলিমেডিসিন) চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন। প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পরও যদি ভালো না হয়, যদি ডাক্তার সরাসরি দেখতে চান অথবা অতি প্রয়োজন হলেই কেবল ডাক্তারের শরণাপন্ন হোন বা হাসপাতালে নিয়ে যাবেন।

এছাড়া প্রয়োজন ছাড়া শিশুকে বাড়ির বাহিরে না নেওয়া ভালো৷ জরুরি প্রয়োজনে অবশ্যই মাস্ক এবং হ্যান্ড স্যানেটাইজার ব্যাবহার নিশ্চিত করুন৷

এমবি//


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি