স্রেফ লবণ পানির গার্গলেই জব্দ করোনা: গবেষণা
প্রকাশিত : ১৫:৫৬, ৫ জুলাই ২০২০
প্রতিদিনই করোনা আক্রান্ত আর মৃতের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। কোভিড-১৯র দাপট কমার কোনও লক্ষণই নেই। ভাইরাসের গতি-প্রকৃতি নিখুঁতভাবে জেনে ওষুধ ও প্রতিরোধী টিকা আবিষ্কার নিয়ে লড়ে যাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। এরই মধ্যে একটি গবেষণা বলছে, স্রেফ লবণ পানির গার্গল করে করোনার মারাত্মক সংক্রমণ রুখে দেওয়া যেতে পারে।
এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক সম্প্রতি প্রমাণ করেছেন যে, গরম লবণ পানি দিয়ে গার্গল করে কোভিড-১৯র সংক্রমণ ঠেকিয়ে দেওয়া যায়। এই গবেষক দলের প্রধান প্রোফেসর আজিজ শেখ জানিয়েছেন যে, অন্য আরেকটি করোনা গ্রুপের ভাইরাস নিয়ে গবেষণা করার সময় তিনি ও তাঁর সহযোগীরা নিশ্চিত হয়েছেন গরম স্যালাইন ওয়াটারে গার্গল করলে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ আটকে দেওয়া যায়।
গবেষকরা স্টাডি করে দেখা গেছে যে, গরম লবণ পানি শরীরের ইনেট ইমিউনিটি বাড়িয়ে ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়।
এডিনবার্গ ইউনিভার্সিটির প্রোফেসর আজিজ শেখ আরও জানিয়েছেন, যারা ইতিমধ্যে কোভিড-১৯র সংক্রমণে ভুগছেন তাঁদের দিনের মধ্যে বেশ কয়েক বার গরম স্যালাইন ওয়াটারে গার্গল করা দরকার। এর ফলে ভাইরাস লোড অনেকটা কমে যাবে। আর শ্বাসনালী বেশি মাত্রায় ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে না।
গবেষণায় প্রমাণিত শ্বাসনালীর উপরের স্তরের কিছু কোষ স্যালাইন ওয়াটারের লবণ থেকে হাইপোক্লোরাস অ্যাসিড তৈরি করে। এটিই কোভিড-১৯ ভাইরাসের প্রোটিনের আবরণ ধ্বংস করে ভাইরাসের বিস্তার রোধ করতে সাহায্য করে।
এক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ হচ্ছে-
* অফিস থেকে ফিরে গরম লবণ-পানি দিয়ে গার্গল করে নিবেন।
* সম্ভব হলে অফিসে পৌঁছে একবার গার্গল করতে পারলে ভাল হয়।
* গরম পানির পরিবর্তে খাবার পানিতে লবণ মিশিয়েও গার্গল করা যেতে পারে।
* শুধু গার্গল করলে চলবে না। মুখে সঠিক পদ্ধতিতে মাস্ক পরে (নাকের নিচে নয়), চশমা বা জিরো পাওয়ারের গ্লাসে চোখ ঢেকে বাড়ির বাইরে যাওয়া উচিৎ।
* টি-জোন অর্থাৎ চোখ, নাক, মুখে অকারণে হাত দেবেন না। খাবার আগে তো বটেই বাইরে বেরুলে অফিস বা বাড়িতে পৌঁছে সাবান দিয়ে ভাল করে হাত ধুয়ে নিতে হবে।
এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের পরামর্শ, কোভিড আক্রান্তদের স্যালাইন ওয়াটারে একাধিকবার গার্গল করালে রোগের সংক্রমণ কমার সঙ্গে সঙ্গে রোগ ছড়িয়ে পড়াও অনেকটা কমে যায়। বাড়ির বা পাড়ার কেউ করোনায় আক্রান্ত হলে লবণ পানির গার্গল করার পরামর্শ দিন।
ভারতের নাক কান গলা বিশেষজ্ঞ শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, সাবান স্যানিটাইজারের মতই ভূমিকা নেয় লবণ-পানি। গার্গল করলে করোনা ভাইরাসের প্রোটিনের আচ্ছাদন সরে গিয়ে ভাইরাস নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে। করোনাভাইরাস চোখ আর নাক দিয়েও শরীরে প্রবেশ করতে পারে। কিন্তু লাইপোজাইম নামের এক বিশেষ প্রোটিওলাইটিক এনজাইম চোখের পানিতে ও নাকের মধ্যে থাকায় সেখানে ভাইরাস খুব একটা সুবিধা করতে পারে না। এই ভাইরাসটি বেশিরভাগ সংক্রমণ ঘটায় শ্বাসনালীতে। তাই ভাইরাসটিকে আটকাতে গরম লবণ পানির গার্গল করার কোনও বিকল্প নেই। সূত্র: আনন্দবাজার
এএইচ/