ঢাকা, শনিবার   ১২ অক্টোবর ২০২৪

চাকরি দেওয়ার নামে অর্থ আত্মসাৎ, গ্রেফতার ১ 

নাটোর প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ২০:৫৪, ২৬ নভেম্বর ২০২১

নাটোরে সেনাবাহিনীতে চাকরি দেওয়ার নাম করে ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক প্রতারককে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। আটককৃতের নাম মনিরুল ইসলাম। 

সাতক্ষীরা ও ঠাকুরগাঁও এলাকার দুই যুবকের অভিযোগের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার রাতে অভিযান চালিয়ে ওই প্রতারককে বাগাতিপাড়ার নন্দিকুজা দয়ারামপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

শুক্রবার সকালে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন র‌্যাব-৫ এর নাটোর ক্যাম্পের কোম্পানী অধিনায়ক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ফরহাদ হোসেন। আটক মনিরুল ইসলাম বাগাতিপাড়া উপজেলার নন্দিকুজা এলাকার কফির উদ্দিনের ছেলে। 

র‌্যাব-৫ এর নাটোর ক্যাম্পে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে র‌্যাব-৫ এর উপ-অধিনায়ক সহকারি পুলিশ সুপার মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, সাতক্ষীরা শ্যামনগর গ্রামের মৃত কোবাত আলীর ছেলে শাহিন আলম ও ঠাকুরগাঁও জেলার হরিপুর গ্রামের মো. নাসিম অভিযোগ করেন, তাদের সেনাবাহিনীতে চাকরি দেওয়ার নামে জাল ও জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে প্রতারক মনিরুল ইসলাম প্রায় ৯ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। এই অভিযোগের ভিত্তিতে গত রাতে প্রতারক নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার নন্দিকুজা দয়ারামপুর গ্রামের মনিরুল ইসলামের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে র‌্যাবের একটি দল।

এসময় উদ্ধার করা হয় নগদ ৫৮ হাজার ১০০ বাংলাদেশি ও ৮০০ ভারতীয় রুপি, বিভিন্ন নিয়োগপত্রের সফটকপির দুটি পেইন ড্রাইভ, বিভিন্ন ব্যাংকের ১৬টি চেকবই, ৭টি এটিএম কার্ড ১টি ভুয়াসহ তিনটি এনআইডি কার্ড ,ভুয়া নিয়োগপত্র ২টি, চাকরি দানের ৩টি চুক্তিনামা, ৪টি সিমকার্ডসহ ২টি মোবাইল ফোন, ৮টি অর্থ লেনদেনের রেজিষ্টার ও ১২টি জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প।

র‌্যাব কর্মকর্তা আরও বলেন, প্রতারক মনিরুল নিজেকে চাঁন মন্ডল এবং  ঢাকা সেনাবাহিনীর সিএমএস এর করনিক পরিচয় দিয়ে সেনাবাহিনীতে চাকুরী দেওয়া প্রলোভন দিয়ে বিভিন্নজনের কাছে থেকে কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

র‌্যাব কর্মকর্তা আরও জানান, অভিযুক্ত মো. মনিরুল ইসলাম এইচএসসি পর্যন্ত পড়ালেখা করেছেন। তিনি পেশায় একজন ঔষধ বিক্রেতা হলেও নিজেকে সেনাবাহিনীর সিএমএইচ, ঢাকায় করণিক পদে কর্মরত আছেন বলে পরিচয় দিতেন এবং ওই পরিচয় ব্যবহার করে বিভিন্ন পদ যেমন সৈনিক, অফিস সহায়ক, মেসওয়েটার, স্টোরম্যান পদে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলা হতে ৩য় পক্ষের মাধ্যমে চাকরি প্রত্যাশী যুবকদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিতেন। এক্ষেত্রে প্রতারক মনিরুল জাল জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া নিয়োগপত্র তৈরি করে চাকরি প্রার্থীদের সরলতার সুযোগ নিতেন। চাকরি প্রার্থীগণ নিয়োগপত্রে উল্লেখিত যোগদানের তারিখে সংশ্লিষ্ট অফিসে যোগদানের নিমিত্তে যাওয়ার পর বুঝতে পারতেন যে উক্ত নিয়োগপত্র সঠিক নয় বা ভুয়া। এভাবে প্রতারক মনিরুল ভুয়া নিয়োগপত্র তৈরি করে চাকরি প্রত্যাশীগণের নিকট হতে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। 

এছাড়াও মনিরুল প্রতারণার কাজে জাতীয় পরিচয়পত্রে নিজ নাম পরিবর্তন করে চাঁন মন্ডল পরিচয় ধারণ করেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্থানীয় স্বাক্ষীগণের উপস্থিতিতে প্রতারক মনিরুল অভিযোগকারী মো. শাহিন আলম (২৭) ও মো. নাসিম (২১) এর নিকট ভুয়া নিয়োগপত্র প্রদান ও মোটা অংকের অর্থ গ্রহণসহ জাল জালিয়াতির মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন জেলা হতে প্রায় ৬০ থেকে ৭০ জন চাকরি প্রত্যাশীর নিকট হতে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার কথা স্বীকার করে। তার বিরুদ্ধে ইতোপূর্বে দুটি মামলা রয়েছে। এই প্রতারণার ঘটনায় তার বিরুদ্ধে বাগাতিপাড়া থানায় মামলা হয়েছে।
কেআই//
 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি