ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ১০ অক্টোবর ২০২৪

ঐতিহ্যের ধারক নেত্রকোনার বালিশ মিষ্টি

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৬:২৩, ৪ জানুয়ারি ২০২৩

জাম গোল্লা পেয়ে শশুড় চটে করলো নালিশ, ইচ্ছে ছিলো আনবে জামাই গয়ানাথের বালিশ। কবিতার পঙক্তি শুনেই বুঝতে পারছেন কথা বলছি নেত্রকোনার বিখ্যাত বালিশ মিষ্টি নিয়ে। যে পঙক্তি আজো নেত্রকোনার মানুষের মুখে মুখে ঘুরে বেড়াচ্ছে। 

শত বছর আগে একরকম শখ থেকেই এ মিষ্টি তৈরি করেছিলেন নেত্রকোনার সর্বজনপরিচিত মিষ্টি ব্যাবসায়ী গয়ানাথ ঘোষ। তার মিষ্টির দোকানে ব্যতিক্রমী বালিশ মিষ্টি পেয়ে যায় বিশেষ খ্যাতি। বালিশের আকৃতি হওয়ায় গয়ানাথ আদর করে এই মিষ্টির নাম দেন বালিশ।

মিষ্টিটি তৈরি হয় দুধ, ছানা, চিনি ও ময়দা দিয়ে। প্রথমে ছানার সঙ্গে সামান্য ময়দা মিশিয়ে মণ্ড তৈরি করা হয়। এরপর বানানো হয় বিভিন্ন আকারের বালিশ। পরে তা ভাজা হয় চিনির গরম রসে। এরপর ঠাণ্ডা করেও চিনির রসে ডুবিয়ে রাখা হয় অনেকক্ষণ। এক সময় তা রসে টইটম্বুর হয়ে যায়। বিক্রির সময় বালিশের ওপর দেওয়া হয় ক্ষীরের প্রলেপ বা দুধের মালাই।

খুব বেশি খাদক না হলে এ মিষ্টি শেষ করা মোটেই সম্ভব নয়। তবে বর্তমানে ক্রেতাদের চাহিদার ওপর বিবেচনা করে ছোট-বড় আকারে তৈরি করা হচ্ছে এই মিষ্টি। নেত্রকোনায় গয়ানাথের দোকান ছাড়াও অনেক দোকানেই এখন এই মিষ্টি পাওয়া যায়। বিশ টাকা থেকে শুরু করে একহাজার টাকা পর্যন্ত একটি মিষ্টির দাম রয়েছে বলে জানাান এখানকার কারিগরও ক্রেতারা।

নেত্রকোনায় যে কোন অনুষ্ঠান হলে সবার আগে চলে আসে বালিশ মিষ্টির নাম। বিশেষ করে জন্মদিন কিংবা বিয়ে হলে তো কোনও কথাই নেই। বালিশ মিষ্টি অবশ্যই থাকতে হবে। গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে এই মিষ্টির ছড়াছড়ি থাকে।

অন্যান্য সামাজিক বা অফিস-আদালতের অনুষ্ঠানেও প্রাধান্য পায় বালিশ মিষ্টি। আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে বেড়াতে গেলেও অনেকে সঙ্গে করে নিয়ে যান বালিশ। বন্ধুদের বাজিতেও ওঠে আসে বালিশের নাম। অফিসের বড় কর্তা বা স্যারকে ‘ম্যানেজ’ করতেও বালিশ মিষ্টির জুড়ি নেই।

বালিশ মিষ্টি নিয়ে এলাকাটিতে একটি রীতি প্রচলিত আছে। সেখানে কোনও বিয়েতে বর তার শ্বশুরবাড়িতে বালিশ মিষ্টি না নিয়ে গেলে তা রীতিবিরুদ্ধ হয়।

এমএম/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি