ঢাকা, বুধবার   ২৭ নভেম্বর ২০২৪

কক্সবাজারে বেড়াতে গিয়ে বিপাকে ২৫ হাজার পর্যটক

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০০:৫০, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

অবিরাম ভারি বর্ষণে এক প্রকার তলিয়ে গেছে কক্সবাজার। জলাবদ্ধতায় দুর্ভোগ পোহাচ্ছে পর্যটন শহর কক্সবাজারের প্রচুরসংখ্যক বাসিন্দা। সেই সঙ্গে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বেড়াতে এসে বিপাকে পড়েছেন অন্তত ২৫ হাজার পর্যটক। বৃষ্টির পানিতে রাস্তাঘাট সয়লাব হওয়ায় অনেক পর্যটক হোটেল কক্ষে আটকা পড়েছেন।

এ ছাড়া বৃষ্টিতে কক্সবাজারের ৯টি উপজেলার অন্তত ২০টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে হাজার হাজার মানুষ।

গত বুধবার থেকে কক্সবাজারে বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। পর্যটন শহরটিতে পানি নিষ্কাশনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থাবিহীন অপরিকল্পিত রাস্তাঘাট করায় সামান্য বৃষ্টিতেই সয়লাব হয়ে পড়ে রাস্তা ও অলিগলি। শহরটির প্রধান সড়ক ও সাগর পারের কলাতলী এলাকা সামান্য বৃষ্টিতেই তলিয়ে যায়। এমন অবস্থায় শহরের বাসিন্দারা যেমনি বাসা-বাড়ির বাইরে যাতায়াত করতে পারছে না, তেমনি পর্যটকরাও মারাত্মক ভোগান্তির মুখে পড়েছেন।

কক্সবাজারে সাম্প্রতিককালের সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে গতকাল বৃহস্পতিবার। কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ তোফায়েল হোসেন জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টা থেকে শুক্রবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত ৫০১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

চলতি মৌসুমে এটি এক দিনে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের রেকর্ড। এর আগে ২০১৫ সালের ২৪ জুন এক দিনে ৪৬৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছিল।

ভারি বর্ষণে কক্সবাজার শহরের কমপক্ষে ২০টি সড়ক ও উপসড়কসহ গলি হাঁটু এবং কোমর পানিতে তলিয়ে গেছে। বর্ষণের পানিতে দফায় দফায় কোমর পানিতে ডুবে গেছে সাগরপারের কলাতলী সড়কটি। এ সড়কেই বেশির ভাগ আবাসিক হোটেলে ওঠেন পর্যটক। সড়ক পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় হোটেলকক্ষেই আটকা পড়ে অনেক ভ্রমণপিপাসু মানুষ।

সাগরপারের হোটেল মিডিয়া ইন্টারন্যাশনালের মহাব্যবস্থাপক মোশাররফ হোসেন কালের কণ্ঠকে জানান, হোটেলটির ২৫টি কক্ষে ৫০-৬০ জন পর্যটক রয়েছেন। টানা বর্ষণের কারণে হোটেলের সামনের রাস্তাটি জলাবদ্ধ থাকায় অনেক পর্যটক কক্ষেই সময় কাটাতে বাধ্য হয়েছেন।

তিনি জানান, সাগরপারের হোটেল-মোটেল জোনে পানি নিষ্কাশনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় একটুখানি বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। রাজধানী ঢাকা থেকে বেড়াতে আসা কাজী শাহাবুদ্দিন নামের একজন পর্যটক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘একদম অপরিকল্পিত একটি পর্যটন শহর এটি। একটুখানি বৃষ্টি হলেই হোটেল থেকেও বের হওয়া যায় না। এখানে পানি নিষ্কাশনেরও তেমন ব্যবস্থা নেই।’

কক্সবাজার হোটেল-মোটেল-গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সাপ্তাহিক দুই দিনের ছুটির দিনের প্রথম দিন শুক্রবার হওয়ায় অনেক পর্যটক এসেছেন। তাদের অনেকেই আবার ফিরেও গেছেন। এখনো কমপক্ষে ২৫ হাজার পর্যটক অবস্থান করছেন কক্সবাজারের হোটেলগুলোতে।’ 

তিনি জানান, এসব পর্যটকের বেশির ভাগই হোটেল কক্ষে আটকাবস্থায় সময় পার করছেন। তার অন্যতম কারণ হচ্ছে পরিকল্পনাহীন উন্নয়ন। এখানে সড়ক উন্নয়ন করা হয়েছে কিন্তু পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা রাখা হয়নি।

এদিকে মৌসুমের সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাতের কারণে দুই দিন ধরে কক্সবাজার শহর ছাড়াও জেলার ৯টি উপজেলার লাখ লাখ মানুষ দুর্ভোগের শিকার। মৌসুমি বায়ুর প্রবাহে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে সেন্ট মার্টিনসহ দ্বীপাঞ্চল ও উপকূলীয় এলাকায়। বৃষ্টির পানিতে উখিয়া, টেকনাফ, রামু, কক্সবাজার সদর, রামু, চকরিয়া, পেকুয়া, মহেশখালী ও কুতুবদিয়ার মানুষ অবর্ণনীয় কষ্টে রয়েছে।

কেআই//

 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি