ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪

ফেসবুক লাইভে বাঁচার আকুতি, যুবকের মৃত্যু ঘিরে রহস্য

নওগাঁ প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১৪:০৪, ১৮ নভেম্বর ২০২৪

নওগাঁর পত্নীতলায় এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মৃত্যুর আগে সে ফেসবুক লাইভে ছাত্র জনতার কাছে বিচার চেয়েছিল। এরপর তার রহস্যজনক মৃত্যু হয়।

রোববার রাতে বাড়ি ফেরার পথে নাপিত পকুরা এলাকায় সুমনকে হত্যা করে গলায় দড়ি বেঁধে গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখে দুর্বৃত্তরা। 

পরবর্তীতে স্থানীয়রা উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্মরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

যুবক সুমন হোসেন নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলার বিলছাড়া গ্রামের মৃত ময়েন উদ্দিনের ছেলে। 

ওই এলাকার বাসিন্দা রুহুল আমিন ও রুবেল হোসেন জানান, রাতে আমরা চারজন এক জায়গায় বসে আড্ডা দিচ্ছিলাম। রাত ১০টার দিকে ফোন দিয়ে সুমন বলতেছে ‘ভাই আমাকে বাঁচা। কি সমস্যা তখন বলতেছে বুলবুল নামের একজন আমার থেকে দশ লাখ টাকা কেড়ে নিছে ও আমাকে মারার জন্য ধাবরাচ্ছে, লাঠি চাকু নিয়ে তার সাথে আর আট দশ জন আছে।’

ফোনে অনেকবার সে বলছে ‘বুলবুল আমাকে মারে ফেলে দিবে ভাই। আমাকে চাকু নিয়ে ধাবরাচ্ছে ভাই।  আমি ধান বাড়ির ভিতরে শুয়ে থেকে ফোন দিছি। যে ভাবেই হোক আমাকে বাঁচা।’ 

এরপর রাত সাড়ে ১০টার নাপিত পকুরা নামক স্থানে গিয়ে কাঠাঁল গাছে রশি দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় তাকে পাই আমরা। তারপর হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার সুমনকে মৃত ঘোষণা করেন।

পত্নীতলা উপজেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য মারুফ মোস্তফা বলেন, সুমন নজিপুর সরকারি কলেজ ডিগ্রি ৪র্থ বর্ষের ছাত্র ছিলেন। মৃত্যুর আগে সে ফেসবুক লাইভে ছাত্র জনতার কাছে বিচার চেয়েছিল। এই স্টেটমেন্ট দেওয়ার পর তার রহস্যজনক মৃত্যু হয়। এই হত্যাকান্ডে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি চাই।

পত্নীতলা থানার ওসি শাহ মোঃ এনায়েতুর রহমান বলেন, সকালে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে।

সুমন নজিপুর মসজিদ মার্কেটে কম্পিউটার ও ফটোকপির দোকান করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। গত প্রায় ১২ ঘণ্টা আগে ‘সুমন হোসেন’ নামে একটি ফেসবুক আইডি থেকে করা লাইভে কিছু কথা বলতে শোনা যায়। পাঁচ মিনিট ৪৬ সেকেন্ডের ওই অডিওতে অভিযোগ করা হয়, বুলবুল নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে সুদের বিনিময়ে ৭০ হাজার টাকা ধার করেন সুমন। সঙ্গে ফাঁকা ব্যাংক চেক ও স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয়া হয়। কিন্তু পরে বুলবুল তার কাছ থেকে ১০ লাখ ৪৫ হাজার টাকা পান বলে চাপ দিতে থাকেন। 

এর এক পর্যায়ে গত রাতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে ১০ লাখ টাকা নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে তাকে ধাওয়া করা হয়। ওই রেকর্ডে দাবি করা হয় তার মৃত্যু জন্য বুলবুল নামে ওই ব্যক্তিই দায়ী।

তবে ওসি জানান, ওই ফেসবুক আইডিটি আসলেই সুমনের কিনা কিংবা লাইভের অডিও’র ওই ব্যক্তিটিকে তা ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে। বুলবুল নামে কোনো ব্যক্তির সঙ্গে সুমনের আসলেই কোনো আর্থিক লেনদেন ছিল কিনা তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। এসবের সত্যতা বের হলেই আসল রহস্য উন্মোচন হবে।

এএইচ


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি