ঢাকা, মঙ্গলবার   ০৮ অক্টোবর ২০২৪

পাবনা শিল্পকলা একাডেমী ভবন 

দু`দফা মেয়াদ বাড়িয়েও শেষ হয়নি নির্মাণ কাজ 

পাবনা প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১৮:২৬, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২০

দু’দফা মেয়াদ বাড়িয়েও শেষ হয়নি পাবনা জেলা শিল্পকলা একাডেমীর ভবন নির্মাণ কাজ। ২০১৭ সালের মে মাসে কাজ শুরুর পর প্রকল্প সম্পন্ন হবার নির্ধারিত সময় ছিল ২০১৮ সালের জুনে। কিন্তু কাজ শেষ না হওয়ায় এখনও ভাড়া বাড়িতে সীমিত পরিসরে চলছে শিল্পকলা একাডেমীর কার্যক্রম। খুঁড়িয়ে চলছে প্রশিক্ষণ ও নিয়মিত সাংস্কৃতিক কার্যক্রম। মিলনায়তনের অভাবে খোলা মাঠে সাংস্কৃতিক আয়োজনে নানা প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হচ্ছে শিল্পকলা একাডেমী ও জেলার সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো। 

পাবনা গণপূর্ত বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, দরপত্র প্রক্রিয়া শেষে ২০১৭ সালের মে মাসে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রায় ১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে জেলা শহরের কাচারিপাড়া মহল্লায় চারতলা ভবনটির নির্মাণকাজ শুরু করে। নির্মাণের সময় নির্ধারণ ছিল ২০১৮ সালের জুন মাস পর্যন্ত। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না হলে সময় আরও এক বছর বাড়িয়ে ২০১৯ সালে জুন মাস পর্যন্ত করা হয়। এরপরও নির্মাণ শেষ হয়নি। ফলে দ্বিতীয় দফায় আবার ২০২০ সালে জুন মাস পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। ভবনটিতে একটি মিলনায়তন, প্রশিক্ষণ কক্ষ ও একাডেমির নিজস্ব কার্যালয় থাকবে। প্রকল্প ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় কাজ এগিয়ে নিতে আরও অর্থ বরাদ্দের আবেদন করেছে গণপূর্ত বিভাগ। গণপূর্ত বিভাগ সূত্রটি আরো জানান, ভবনটির নির্মাণকাজের দায়িত্ব পেয়েছে পাবনা সাজিন এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠানের মালিক শাহাদত হোসেন। তিনি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ‘বালিশ কেলেঙ্কারি’র ঘটনায় দুদকের করা মামলায় কারাগারে আছেন। 

সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু হেনা মোস্তফা কামাল সম্প্রতি পাবনা সফরে এসে নির্মাণাধীন শিল্পকলা একাডেমি পরিদর্শন করে নির্মাণকাজের ধীর গতিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ইচ্ছা ছিল নতুন শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে জাঁকজমকপূর্ণভাবে মুজিববর্ষ উদযাপন করা হবে। কিন্তু নির্মাণকাজের ধীরগতি সে ইচ্ছায় ব্যাঘাত তৈরি করেছে। এটা মেনে নেওয়ার মতো নয়। এ সময় নতুন করে বাড়ানো মেয়াদের মধ্যে নির্মাণকাজ শেষ না হলে ঠিকাদার ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
 
পাবনা জেলা শিল্পকলা একাডেমি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে জেলায় শিল্পকলা একাডেমির নিজস্ব কোনো কার্যালয় নেই। পাবনা জেলা পরিষদের কাছ থেকে মাসে আট হাজার টাকা ভাড়ায় তিনটি কক্ষ নিয়ে কার্যক্রম চলছে। বর্তমানে সংগীত, নৃত্য, নাট্যকলাসহ বেশ কয়েকটি বিভাগে শিক্ষার্থী আছে প্রায় ৩০০ জন। ভাড়া ভবনের তিন কক্ষের একটি দাপ্তরিক কাজে ব্যবহার করা হয়। বাকি দুটিতে চলে প্রশিক্ষণ। মাঝেমধ্যে প্রশিক্ষণের দুই কক্ষের একটি জেলা পরিষদ তাদের নিজস্ব কাজে ব্যবহার করে। এ কারণে অনেক সময় এক কক্ষেই সব বিভাগের প্রশিক্ষণ চালাতে হয়। 

পাবনা শিল্পকলা একাডেমির কর্মকর্তা মারুফা মঞ্জরি খান জানান, কক্ষ সংকটে মাঝে মধ্যে উঠানে বসে শিল্পকলা একাডেমির শিক্ষার্থীদের ক্লাস করতে হচ্ছে। এছাড়া শিল্পকলা একাডেমির নিজস্ব কর্মসূচিও থাকে। মিলনায়তনের অভাবে খোলামাঠে সেসব কর্মসূচি পালন করতে হয়। বিষয়টি বেশ কয়েকবার গণপূর্ত বিভাগকে জানানো হয়েছে। এরপরও ভবনটির নির্মাণ শেষ হচ্ছে না। 

পাবনা গণপূর্ত বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম খান বলেন, ভবনটির কাজ দ্রুত শেষ করতে চেষ্টার কোনো ত্রুটি নেই। প্রায় ৮০ শতাংশ কাজ ইতিমধ্যেই শেষ হয়েছে। বাকি কাজ  শেষ করতে বাড়তি বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। মাঝখানে কিছু জটিলতায় কাজে ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়েছিল। তবে এবার নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই কাজ শেষ হবে।

কেআই/আরকে
                   


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি