ঢাকা, রবিবার   ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বাগতিপাড়ার আব্দুস সামাদ মৃত থেকে জীবিত হতে চান!

নাটোর প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১৮:০৩, ৭ মার্চ ২০২০

নাটোরের বাগাতিপাড়া  উপজেলা সদরের লক্ষণহাটি এলাকার আব্দুস সামাদ জীবিত থাকলেও সরকারের তালিকায় তিনি একজন মৃত ব্যক্তি। নিজেকে জীবিত করার আবেদন জানিয়ে গত কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন দপ্তরে ধর্না দিয়ে চলেছেন। পেশায় একজন কৃষক আব্দুস সামাদ। বাগাতিপাড়া পৌরসভাধীন লক্ষণহাটি এলাকার মো. এলবাস আলী ও মোছা. আয়েশা বেগমের ছেলে। সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবন কাটাচ্ছেন তিনি। কিন্তু সরকারী খাতায় তিনি এখন মৃত।
 
আব্দুস সামাদ বলেন, তিনি ২০০৮ সালে জাতীয় পরিচয়পত্র পেয়েছেন। কিন্তু গত পাঁচ বছর আগে জানতে পারেন সরকারী খাতায় তিনি মৃত। বিষয়টি পৌর মেয়রসহ উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানালে তারা নির্বাচন অফিসে যোগাযোগ করতে বলেন। তাদের পরমর্শে উপজেলা নির্বাচন অফিসে গেলে তারা শর্ট টাইমে বিষয়টি সংশোধন করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। কিন্তু গত পাঁচ বছরে মৃত থেকে জীবিত হতে পারিনি। বিষয়টি সংশোধন হয়েছে মনে করে গত উপজেলা নির্বাচনের সময় ভোট দিতে গেলে আবারও ভোট দিতে না দিয়ে আমাকে বলা হয় আমি মৃত। স্বশরীরে জীবন্ত মানুষকে মৃত বলায় বিস্মিত হতে হয়। 

জাতীয় পরিচয় পত্র দেখানোর পরও তাকে মৃত বলে ভোট প্রদান করতে দেয়া হয়নি। বিষয়টি উপজেলা নির্বাচন অফিসারকে তাৎক্ষণিকভাবে আবারও অবহিত করলে তিনিও শর্ট টাইমে সংশোধনের আশ্বাস দেন। শর্ট টাইম কতদিনে হয় তা তারাই বলতে পারেন। গত শুক্রবার উপজেলায় স্মার্ট কার্ড নিতে গিয়ে দীর্ঘক্ষন লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে ফিরে আসতে হয়েছে। সেখান থেকেও জানানো হয়েছে আমি মৃত। 

আব্দুস সামাদের ছেলে স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মী ফজলুর রহমান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, তার বাবা জীবিত থাকার পরও সরকারী খাতায় মৃত দেখানো হচ্ছে কেন? তিনি দেশের সচেতন নাগরিক হিসেবে বিগত নির্বাচনগুলোতে তার ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেননি। একইভাবে স্মার্ট কার্ড না দিয়ে বঞ্ছিত করা হয়েছে। তার বাবা মৃত থেকে জীবিত হতে বিভিন্ন দপ্তরে মৌখিকসহ লিখিত আবেদন করেও জীবিত হতে পারিনি গত প্রায় পাঁচ বছর ধরে। তিনি বিষয়টি সমাধানে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ সহ সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন। 

বাগাতিপাড়া পৌরসভার প্যানেল মেয়র ইউসুফ আলী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, প্রায় এক বছর আগে আব্দুস সামাদের মৃত থাকার বিষয়টি জানতে পারেন। আব্দুস সামাদ তার ওয়ার্ডের ভোটার হওয়ায় তাকে তিনি খুব ভালভাবে চেনেন ও জানেন। তার  বিষয়টি নিয়ে তিনিও বহু চেষ্টা করেছেন । কিন্তু সুফল না হওয়ায় কষ্ট পাচ্ছেন। এজন্য তিনি সামাদ সহ তার পরিবারের কাছেও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। 

বাগাতিপাড়া উপজেলা নির্বাচন অফিসার আমিনুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, প্রায় তিনমাস আগে  আব্দুস সামাদের একটি লিখিত আবেদন পাওয়ার পর ঢাকায় পাঠানো হয়েছে বিষয়টি সংশোধনের জন্য। ঢাকা থেকে সংশোধন হয়ে আসলে তিনি সামাদকে বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারবেন।

কেআই/আরকে


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি