ঢাকা, রবিবার   ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

সোনালী ব্যাংকের রশিদ সংকট : যাত্রীরা দুর্ভোগের শিকার 

বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি 

প্রকাশিত : ১৯:২৮, ৭ মার্চ ২০২০

বেনাপোল চেকপোষ্ট সোনালী ব্যাংক বুথে ভ্রমণকর রশিদ বই না থাকার কারণে এ চেকপোষ্ট দিয়ে ভারতে গমনকারী পাসপোর্টযাত্রীরা চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোষ্ট দিয়ে প্রতিদিন ৭ হাজার থেকে ৮ হাজার পাসপোর্টযাত্রী ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে যাতায়াত করে থাকে।

এর মধ্যে প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা প্রায় ৫ হাজার যাত্রী বেনাপোল চেকপোষ্ট সোনালী ব্যাংক বুথ থেকে ৫০০ টাকা দিয়ে ভ্রমণকরের রশিদ সংগ্রহ করে ভারতে গমন করে থাকেন। ভ্রমণকরের রশিদ বই জাতীয় রাজস্ব বোর্ড থেকে সরবরাহ করা হয়ে থাকে। রশিদ বই সংকটের কথা দুই মাস আগে রাজস্ব বোর্ডকে জানানো হয়েছে। কিন্তু তারা এখন পর্যন্ত কোন পদক্ষেপ গ্রহন না করায় এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।
 
অনলাইনে ভ্রমণকর পরিশোধের সিষ্টেম চালু করা হলেও অধিকাংশ যাত্রীই বেনাপোল সোনালী ব্যাংক বুথ থেকেই ভ্রমণকর রশিদ নিয়ে থাকেন। বেনাপোল সোনালী ব্যাংক থেকে অন্য সময়ে ম্যানুয়াল পদ্ধতিকে ভ্রমণকর সংগ্রহে সমস্যা না হলেও বর্তমানে ব্যাংকে ভ্রমণকরের রশিদ বই না থাকার কারনে মহাবিপাকে পড়েছে পাসপোর্টযাত্রীরা। সারারাত বাস বা ট্রেনে ভ্রমণ করে আসার পর ক্লান্ত শরীরে বেনাপোল চেকপোষ্টে ভ্রমণকরের রশিদ সংগ্রহের জন্য ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। সবচেয়ে বেশী ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন রোগী ও শিশু যাত্রীরা। কেউ কেউ অসুস্থ্য হয়ে ফিরে যাচ্ছেন।

শনিবার (৭ মার্চ) সকাল ৭টা থেকে এ সংক্রান্ত একটি জরুরী নোটিশ টাঙ্গিয়ে দেওয়া হয়েছে বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনের সোনালী ব্যাংক বুথ শাখায়। নোটিশে বলা হয়েছে ভ্রমণকর (ট্রাভেল ট্যাক্স) রশিদ বই এর পর্যাপ্ত সরবরাহ না থাকায় শনিবার (৭মার্চ) হতে সোনালী ব্যাংক চেকপোস্ট বুথের মাধ্যমে ভারত ভ্রমণে ইচ্ছুক যাত্রীদেরকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক সরবরাহকৃত ম্যানুয়াল ভ্রমণকর রশিদ প্রদান করা সম্ভব হবে না। ভারত ভ্রমণকারী যাত্রীদের ট্রেজারী চালানে অথবা অনলাইনে ভ্রমণকর পরিশোধের জন্য পরামর্শ দেওয়া হলো।

ভারত ভ্রমনে যাওয়া সমর সাহা নামে এক পাসপোর্টযাত্রী বলেন, তিনি সকাল ৮ টার সময় বেনাপোল চেকপোষ্টে এসে পৌছেছেন। লাইনে দাঁড়িয়ে ভ্রমণকর রশিদ সংগ্রহ করতে তার দু‘ঘন্টা সময় লেগেছে। ব্যাংকের বুথে ভ্রমণকর রশিদ না থাকার কারনে টিআর চালানের মাধ্যমে ভ্রমণকর পরিশোধ করেছেন। এভাবে শতশত যাত্রীকে প্রতিদিন ভ্রমণকর সংগ্রহ করতে নানা ভাবে দুভোর্গের শিকার হতে হচ্ছে। 

ঢাকা থেকে আসা পাসপোর্টযাত্রী ফাতেমা আক্তার বলেন, ভারত ভ্রমণে যাওয়ার জন্য ভ্রমণকরের জন্য ব্যাংকে গেলে আমাদেরকে একটি করে ট্রেজারী চালান ধরিয়ে দিয়েছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। আমি মহিলা মানুষ। এতো কিছু বুঝি না। আবার একটি করে ট্রেজারী চালান দেওয়া হয়েছে সেটি আবার ফটোকপি করে নিতে হচ্ছে। কোথা থেকে ফটোকপি করবো আর কোথা থেকেই বা চালান লিখে নেবো তাও জানিনা। এ সংক্রান্ত কোন নোটিশও আগে থেকে জারি করা হয়নি। এমন আন্তর্জাতিক বন্দরে এ ধরনের সমস্যায় বড়ই বিব্র্রতকর অবস্থায় পড়লাম।

স্থানীয় বাসিন্দা নাহিদ হাসান শুভ জানান, এর আগে বেনাপোল চেকপোস্টে ভ্রমণকর দেওয়ার ব্যাপারে এ ধরনের কোন জটিলতা আমাদের চোখে পড়েনি। এমন বন্দরে এ ধরনের সমস্যা খুবই হতাশাজনক। যেখানে গড়ে প্রতিদিন ৭ থেকে ৮ হাজার যাত্রী যাতায়াত করে থাকে। সেখানে আগে থাকতে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ ছাড়া এ ধরনের কার্যক্রম এ বন্দরের সুনাম নষ্ট ছাড়া কিছুই না। সকাল থেকেই দেখছি যাত্রীরা চরম হতাশা নিয়ে এদিক সেদিক ছুটাছুটি করছে।

এ বিষয়ে বেনাপোল সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপক রাকিবুল হাসান জানান, অনলাইনে ভ্রমনকর সংগ্রহের ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। তবে আমাদের এখানে প্রিন্টার না থাকা ও অনলাইনে ম্যাসেজ দেখার কোন ব্যবস্থা না থাকার কারণে যাত্রীরা অনলাইনে ভ্রমনকর পরিশোধ করার প্রতি আগ্রহী হচ্ছেন না। গত কয়েকদিন ধরে ব্যাংকে ভ্রমনকর রশিদ বই না থাকার কারনে টিআর চালানের মাধ্যমে ভ্রমনকর নিতে হচ্ছে। টিআর চালানের মাধ্যমে ভ্রমণকর নিতে সময় লাগছে অনেক। এ জন্য তিনি দু:খ প্রকাশ করেন।

তিনি আরো বলেন, ভ্রমণকরের রশিদ বই জাতীয় রাজস্ব বোর্ড থেকে সরবরাহ করা হয়ে থাকে। রশিদ বই সংকটের কথা দুই মাস আগে রাজস্ব বোর্ডকে জানানো হয়েছে। কিন্তু তারা এখন পর্যন্ত কোন পদক্ষেপ গ্রহন করেননি। এ কারণে যাত্রীদের একটু কষ্ট ও সমস্যা হচ্ছে। ভ্রমণকর রশিদ বই এলে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। 

কেআই/আরকে


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি