ঢাকা, মঙ্গলবার   ০৫ নভেম্বর ২০২৪

ঝড়ো বাতাসে ফুসছে তেঁতুলিয়া, আশ্রয় কেন্দ্রে অনাগ্রহ চরবাসীর 

বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১০:৫২, ২০ মে ২০২০ | আপডেট: ১১:৩৪, ২০ মে ২০২০

সুপার সাইক্লোন আম্পানের প্রভাবে গতরাত থেকে আজ বুধবার সকাল পর্যন্ত উত্তর-উত্তর পূর্ব কোন থেকে পটুয়াখালীর বাউফলের চরাঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকায় ঝড়ো বাতাস আর থেমে থেমে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। অন্যদিকে, সর্বোচ্চ সতর্কতা দিয়েও আশ্রয়ে কেন্দ্রে যেতে গড়িমসি করছে চরবাসীরা।  

এদিকে বৃদ্ধি পাচ্ছে তেঁতুলিয়া নদীর পানি প্রবাহের চাপও। ইতিমধ্যে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেতর কথা জানানো হয়েছে স্থানীয়দের। এর আগে মঙ্গলবার বিকাল পর্যন্ত আকাশ কিছুটা থমথমে আর ভ্যাপসা গরম ছাড়া ঘূর্ণিঝড় আম্পানের তেমন কোন প্রভাব লক্ষ্য করা যায়নি। 

আবাহাওয়া অধিদপ্তরের সতর্কতা সংকেতের কারণে চর ও নিম্নাঞ্চলের মানুষের জরুরি অবস্থান নেওয়ার সুবিধার্থে ইতিমধ্যে উপজেলার দেঁড় শতাধিক আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে। করোনা পরিস্থিতির কারণে পূর্বের তুলনায় বাড়ানো হয়েছে আশ্রয় কেন্দ্রের এই সংখ্যা। 

এদিকে চলতি শতাব্দিতে বঙ্গোপসাগরে এটিই প্রথম সুপার সাইক্লোন ও ২০০৭ সালের সিডরের চেয়েও শক্তিশালী উল্লেখ করে সাইরেন বাজিয়ে ও মাইকিং করে সতর্ক করা হচ্ছে সর্বসাধারণকে। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করে উপজেলাবাসীকে নিকটস্থ সাইক্লোন শেল্টারে আশ্রয় নিতে এবং জরুরি প্রয়োজনে কন্ট্রোল রুমে ০১৭১০-০০৬২১৬, ০১৭৪৯-৪৯৬৯৫৫ নম্বরে যোগাযোগ রেখে সার্বক্ষণিক পরিস্থিতি জানাতে সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ করছেন উপজেলা প্রশাসন।

দুর্যোগ মোকাবেলায় করণীয় নির্ধারণে উপজেলা চেয়ারম্যান মোতালেব হাওলাদারের সভাপতিত্বে গতকাল পর্যন্ত উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে একাধিকবার জরুরি বৈঠক করা হয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তত রাখা হয়েছে ১০টি মেডিকেল ও ৩টি স্বেচ্ছাসেবক টিম। প্রস্তত রয়েছে ফায়ার সার্বিসের লোকজন। 

ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার জন্য চেয়াম্যান-মেম্বদের সঙ্গে সমন্বয় করে ১৫ ইউনিয়নে ট্যাগ অফিসার নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে,  পর্যাপ্ত আশ্রয় কেন্দ্র না থাকায় উপজেলার মূলভূখণ্ড বিচ্ছিন্ন চন্দ্রদ্বীপের প্রায় ২০ হাজার মানুষ ও ১৫ সহশ্রাধিক গবাদি পশু ঝুঁকিতে রয়েছে দাবি করছেন নবগঠিত ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. এনামুল হক আলকাস মোল্লা। 

তিনি বলেন,  ‘তেঁতুলিয়ার বুক চিরে জেড়ে ওঠা এই চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নে মোট ৫টি স্কুল কাম সাইক্লোন শেল্টার থাকলেও তিনটির অবস্থাই জরাজীর্ণ। বিগত সিডর-আইলাতে এখানে ফসলহানিসহ বিপুল সংখ্যক প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। ১৩ কিলোমিটারের বেড়িবাঁধের অধিকাংশস্থানই বিলীন হয়েছে। আম্পান আঘাত হাললে এখানে প্রচুর ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।’ 

চন্দ্রদ্বীপের ৭৩ নং চরমিয়াজান সরকারি প্রাইমারি স্কুল এলাকার ইমরান নামে মাধ্যমিকের এক শিক্ষার্থী জানান, আজ বুধবার সকালে ওই এলাকায় বাতাসের গতিবেগ বেড়েছে। থেমে থেমে হচ্ছে বৃষ্টিপাত। মাইকিংয় করে চরবাসীকে  স্কুল কাম সাইক্লোন সেল্টারে আশ্রয় নিতে বলা হলেও সকাল পর্যন্ত কেউ সেখানে দেখা যায়নি। কেন যেন মানুষ কোনই ভ্রুক্ষেপ করছেন না। 

তবে তেঁতুলিয়া নদীর পানি প্রবাহের চাপ বৃদ্ধি আর ক্রমশ উত্তাল হওয়ায় কালাইয়া, চরওয়াডেল, বগির খাল, চর রায়সাহেবসহ বিভিন্ন নিরাপদ স্থানে ফিরছে জেলেরা। সকালে সুযোগমতো বিভিন্ন এলাকায় মরিচ, ফ্যালন, মুগডালের মতো ফসল রক্ষায় কৃষক-কৃষাণীর ব্যস্তাতাও চোখে পড়েছে। 

এআই//


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি