কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় গৃহবধূকে অকথ্য নির্যাতন
প্রকাশিত : ২০:২১, ২৭ মে ২০২০ | আপডেট: ২০:২১, ২৭ মে ২০২০
কর্তিত সেই চুল- ছবি একুশে টেলিভিশন।
অসামাজিক কাজ করে অর্থ উর্পাজনের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় অকথ্য-অবর্ণনীয় নির্যাতনের শিকার হয়েছেন জেসমিন আরা নামে এক গৃহবধূ। তার গোপনাঙ্গে মরিচেরগুড়ো দিয়ে ও মাথার চুল কেটে নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে স্বামী আব্দুর রফিকের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার (২৬ মে) নওগাঁর সাপাহার উপজেলার হাঁপানিয়া বেলডাঙ্গা গ্রামে ঘটে এই বর্বর ঘটনা।
জানা যায়, নিজ বাড়িতে গৃহবন্দি করে গত দুইদিন ধরে তার উপর অমানুষিক নির্যাতন চালানো হচ্ছিল। খবর পেয়ে মঙ্গলবার দুপুরে রফিকের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ওই গৃহবধূকে উদ্বার করা হয়। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে আব্দুর রফিক ও তার মাসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা পালিয়ে যায়।
এই ঘটনায় আজ বুধবার বিকেলে ভিকটিমের পিতা ইসলাম হোসেন বাদী হয়ে রফিক ও রফিকের মা রাজিয়া বিবিকে আসামি করে থানায় একটি মামলা দাযের করেছে। বর্তমানে ওই গৃহবধূ উপজেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসীর একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ওই গ্রামের জাহান আলীর ছেলে আব্দুর রফিক প্রায় দেড় বছর আগে পাশের চাপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার সাহেবগঞ্জ গ্রামের ইসলাম হোসেনের মেয়ে জেসমিন আরাকে বিয়ে করেন। বিযের পর থেকেই অভাবের সংসারে নানা অজুহাতে তাদের মধ্যে কলহ বিবাদ চলে আসছিল।
চিকিৎসাধীন জেসমিন আরা বলেন, আমার স্বামী বিযের পর থেকে নানাভাবে আমাকে অসামাজিক কাজে নামাতে চাপ দিয়ে আসছিল। আমি বরাবর ওই বিষয়টিকে অসম্মতি দিয়ে আসছিলাম। এর জের ধরে ঈদের দিন সোমবার রাতে আব্দুর রফিক আবারো অসামাজিক কাজ করে অর্থ উপার্জন করার জন্য আমার উপর চাপ প্রয়োগ করে। এতে আমি রাজি না হওয়ায় আমার উপর নেমে আসে অমানবিক নির্যাতন। প্রথমে আমার স্বামী আমার মাথার চুল ধরে মাটিতে ফেলে দেয় এবং কেচি দিয়ে আমার সমস্ত মাথার চুল কেটে ফেলে। এরপর চলে শারীরিক নির্যাতন। এক পর্যায়ে পাষাণ্ড স্বামী ও শাশুড়ী রাজিয়া বিবি আমার গোপনাঙ্গে মরিচের গুড়ো ঢেলে দেয়। এতে অসহ্য যন্ত্রনায় চিৎকার করতে লাগলে রফিক আমার মুখে কাপড় গুজে দিয়ে মুখ বন্ধ করে দেয়। সমস্ত রাত এবং পরের দিন তাকে বাড়ি হতে বের হতে না দিয়ে বাসায় গৃহবন্দি করে রাখে।
গত মঙ্গলবার বিষয়টি গ্রামে জানাজানি হলে এবং গ্রামের লোকজনের মুখে জানতে পেরে ওইদিন দুপুর ২টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে জেসমিন আরাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে দেন।
বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে সাপাহার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল হাই বলেন, এটি অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক ঘটনা। বিষয়টি জানার পর পুলিশ পাঠিয়ে ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করে প্রথমে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পরে তার অভিভাবকদের খবর দিয়ে থানায় ডেকে মামলা নেওয়া হয়েছে। খুব শিঘ্রই আসামিদের গ্রেফতার করা হবে।
এনএস/
আরও পড়ুন