ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২১ নভেম্বর ২০২৪

নওগাঁয় কালবৈশাখী ঝড়ে ফসলের ক্ষয়ক্ষতি,হতাহত ২

নওগাঁ প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ২০:৩২, ২৭ মে ২০২০

নওগাঁয় দ্বিতীয় দফায় কালবৈশাখী ঝড় ও শিলা বৃষ্টিতে ইরি বোরো ধানসহ ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ের প্রভাবে বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙ্গে জেলার বেশ কয়েটি উপজেলার বিদ্যুৎ সরবরাহ বিপর্যয় ঘটে। পাকা ধান পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় অনেক কৃষকের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এদিকে বুধবার বিকেলে বজ্রপাতে ধামইরহাট উপজেলার ওমরপুর গ্রামে আবু ইশা (২২) নামে এক যুবক নিহত হয়েছে। একই ঘটনায় তার বড় বোন মনিষা বেগম(২৭) আহত হয়েছেন। মনিষাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

গত সোমাবার সন্ধ্যায় প্রথম দফায় জেলার মান্দা,নিয়ামতপুর,পোরশা,সাপাহার ও বদলগাছী উপজেলা এলাকায় ব্যাপক ক্ষতি হয়। এই ঝড়ে কাচাঁ ঘর-বাড়ি বিধস্থসহ অসংখ্য বাড়ি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের টিনের চালা উড়ে যায়। সেই সঙ্গে চলতি বছরের মৌসুমী ফল আমের ব্যপক ক্ষতি হয়। এর ১২ ঘন্টা পর  মঙ্গলবার রাতে দীর্ঘ সময় ধরে জেলার মহাদেবপুর,পত্নীতলা,ধামইরহাট,আত্রাই,রানীনগর ও সদর উপজেলার অধিকাংশ এলাকায় কালবৈশাখী ঝড় ও বিভিন্ন এলাকায় শিলাবৃষ্টি হয়। প্রচন্ড ঝড়ের কারণে এসব এলাকার হাজার হাজার গাছপালা উপুড়ে পড়ে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ধামইরহাট উপজেলা। মঙ্গলবার রাতে ও বুধবার বিকেলে এই উপজেলার উপর দিয়ে প্রচন্ড বেগে ঝড় বয়ে গেছে। ঝড়ের তান্ডবে এসময় উপজেলা সদরের ক্যান্টিন চত্বর, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বড় বড় গাছ বিদ্যুতের তারে উপড়ে পড়ে। 

এছাড়া রাস্তাঘাট ও ব্যক্তি মালিকানা বাগানে শত শত গাছ পড়ে যায়। ঝড়ের সাথে প্রচন্ড বৃষ্টি বর্ষণ হয়। এতে নিচু এলাকার পাকা ইরি বোরো ধান পানিতে তলিয়ে যায়। এতে অনেক কৃষক ক্ষতির সম্মুখীন হন। এছাড়া ঝড়ের কারণে আম ও লিচু গাছ থেকে ঝরে পড়ে। ঝড় বৃষ্টির কারণে বিদ্যুতের তারের উপর গাছ পড়ে এবং আবিলাম নামকস্থানে বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙ্গে উপজেলার অধিকাংশ এলাকা বিদ্যুৎবিহীন অবস্থা বিরাজ করছে। 

এদিকে বুধবার বিকেলে আবু ইশা (২২) নামে এক যুবক ভগ্নিপতির বাড়ি ওমরপুর গ্রামে বেড়াতে গিয়ে বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই মারা যায়। এসময় তার বড় বোন মনিষা বেগম আহত হয়। নিহত যুবক উপজেলার বিহারীপুর গ্রামের আবুল কালামের ছেলে। ওইদিন আবু ইশা ভগ্নিপতি আব্দুল কাদেরের বাড়িতে বেড়াতে যায়। এসময় ঝড় উঠলে সে ও তার বোন মাঠ থেকে গরু নিয়ে আসার সময় এই ঘটনা ঘটে।

এব্যাপারে ধামইরহাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো.সেলিম রেজা বলেন,উপজেলা পূর্বাঞ্চল বিশেষ করে ধামইরহাট পৌরসভা,ধামইরহাট ও জাহানপুর ইউনিয়নে ঝড় ও শিলাবৃষ্টিপাত হয়। এতে প্রায় ৭ হেক্টর জমির ধান শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতি হয়। এছাড়া ২ হেক্টর নিচু জমির ধান পানিতে তলিয়ে যায়। অনেক বাগানের আম ও লিচু ঝড়ে পড়ে গেছে।

এদিকে আত্রাই উপজেলার বান্দাইখাড়া টেকনিক্যাল কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও অধ্যক্ষ আব্দুর রহমান রিজভী জানান, করোনা ভাইরাসের থাবায় এমনিতে কলেজে দীর্ঘদিন যাবত পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। তার উপর আবার কাল বৈশাখী তান্ডবে কলেজের পুরাতন ভবনের টিনের ছাউনি উড়ে গিয়ে বৃষ্টির পানিতে কলেজের ডিজিটাল হাজিরা ডিভাইস, সিসি ক্যামেরা ও কম্পিউটার নষ্ট হয়ে গেছে। আত্রাই উপজেলার এই প্রত্যন্ত এলাকার যুব সমাজে গুণগত কারিগরি শিক্ষা বিস্তারে বান্দাইখাড়া টেকনিক্যাল কলেজ অগ্রণী ভুমিকা পালন করে আসছে। এই প্রতিষ্ঠানটি ডিজিটাল কলেজ হিসেবে জেলার শ্রেষ্ঠ পদক পেয়েছে। 

এদিকে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিপ্তরের উপ-পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম জানান জেলার উপর দিয়ে দ্বিতীয় দফায় কালবৈশাখী ঝড় বয়ে যায়। এসময় প্রচরি শিলা বৃষ্টিও হয়েছে। এতে ধান কাটার অপেক্ষায় বেশ কিছু জমির বোরো ধান নষ্ঠ হয়েছে.গাছ-পালা উপড়ে গেছে। তবে তাৎক্ষণিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমান নিরুপন করা যায়নি।
কেআই/
 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি