ঢাকা, সোমবার   ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

আম্পানে চুয়াডাঙ্গার আমচাষিদের ক্ষতি প্রায় ৩২ কোটি টাকা

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১৩:০৯, ২৯ মে ২০২০

ঘূর্ণিঝড় আম্পানে চুয়াডাঙ্গার আমবাগাগের মালিকরা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এছাড়া সময় মতো সব আম বিক্রি করতে পারবেন কী-না তা নিয়েও রয়েছে শঙ্কা। পরপর দু’টি ঝড়ে ভয়াবহ সংকটের মুখে আমচাষিদের ধারণা, এ মৌসুমে আম বিক্রি করে সারাবছরের বাগান পরিচর্যা ও শ্রমিকের মজুরি উঠে আসবে না। 

চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, গত মৌসুমে জেলাতে ১ হাজার ৯৫০ হেক্টর জমিতে আম বাগান ছিলো। চলতি মৌসুমে আছে ১ হাজার ৯৮০ হেক্টর। এ হিসেবে এবারে ৩০ হেক্টর জমিতে আমের নতুন বাগান হয়েছে। এসব বাগান থেকে ফলন হবে ২৯ হাজার ৭০০ মেট্রিক টন আম। পাইকারি ১ হাজার ২০০ টাকা মণ হিসাবে ৮৯ কোটি ১০ লাখ টাকায় বিক্রি হওয়ার কথা ছিল। তবে সাম্প্রতিক ঝড়ে ১০ হাজার ৫৮৪ মেট্টিক টন আমের ক্ষতি হয়েছে। যার মূল্য ৩১ কোটি ৭৫ লাখ ২০ হাজার টাকা।

চুয়াডাঙ্গার আম ব্যবসায়ী সমিতি সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম বলেন, ‘চুয়াডাঙ্গায় এবার ফলন ভাল হয়েছে। করোনার কারণে বাজারজাত করা নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় আছি। তবে আমাদের এলাকার হিমসাগর, ল্যাংড়া, বোম্বাই, আম্রপালিসহ অনেক ভালো ভালো জাতের আম ফলে। এসব আম খুবই সুস্বাদু, দেশ-বিদেশে এর খ্যাতি আছে। তবে পরপর দুটি ঝড়ে আমের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ মৌসুমে আম বিক্রি করে সারা বছরের বাগান পরিচর্যা ও শ্রমিকের মজুরি উঠবে কিনা সংশয়ে আছি।’ 

আম বর্গাচাষি জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘চুয়াডাঙ্গায় উৎপাদিত আম জেলার চাহিদা মিটিয়ে ঢাকা, চট্টগ্রাম, বরিশাল, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন মোকামে রপ্তানি করে থাকি। কিন্তু করোনার কারণে আমাদের এই আমগুলো বাজারজাত করার জন্য কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসকের সার্বিক সহযোগিতা প্রয়োজন।’

আরেক বর্গাচাষি রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘গত কয়েকদিন আগে বয়ে যাওয়া আম্পান ও কাল বৈশাখী ঝড়ে প্রচুর আম ঝরে গেছে। এতে আমরা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছি। অবশিষ্ট যে আমগুলো গাছে আছে, এর সঠিক বাজারজাতকরণ দরকার। এর জন্য সরকারের কাছে দাবি সহযোগিতার জানাচ্ছি।’

চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক আলী হাসান বলেন, ‘চুয়াডাঙ্গার হিমসাগর আম বিখ্যাত। আমচাষি ও ব্যবসায়ীরা যাতে সঠিক দামে আম বিক্রি করতে পারেন সেজন্য জেলা প্রশাসনকে সাথে নিয়ে আমরা একসঙ্গে কাজ করছি। এ জেলা থেকে বিভিন্ন মোকামে আম পাঠাতে বা বিক্রি করতে কোনো ধরনের সমস্যা যাতে না হয় সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখছি।’

তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন মোকাম থেকে যেসব ব্যবসায়ী চুয়াডাঙ্গায় আম কিনতে আসবেন তাদের নির্বিঘ্নে আসা, থাকা, খাওয়া এবং নিয়ে যাওয়া পর্যন্ত সবকিছুর দেখভাল করার জন্য আমরা প্রস্তুত আছি।’ 

ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত আমসহ সকল প্রান্তিক চাষিকে কৃষি প্রণোদনার আওতায় নিয়ে আসার জন্য সরকার ইতোমধ্যেই কাজ শুরু করেছে বলেও জানান তিনি।

এ জেলার হিমসাগরসহ বিভিন্ন জাতের আমের চাহিদা রয়েছে দেশ-বিদেশে। করোনার কারণে আম বিক্রি নিয়ে চাষিরা দুশ্চিন্তা করলেও ন্যায্যমূল্য ও মোকামে পাঠানোর ব্যাপারে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে জেলা প্রশাসন ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। এ দাবিসহ ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের কৃষি প্রণোদনা দেওয়ার প্রত্যাশা করছেন এখানকার আমচাষিরা।

এআই//


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি