ঢাকা, বুধবার   ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪

মায়ের প্রেমিক ও ছেলে মিলে পিতাকে খুন, অতঃপর... 

বগুড়া প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১৯:০২, ২৯ মে ২০২০

আটককৃত মায়ের প্রেমিক ও ছেলে এবং উদ্ধারকৃত পিতার কঙ্কাল।-ছবি একুশে টেলিভিশন।

আটককৃত মায়ের প্রেমিক ও ছেলে এবং উদ্ধারকৃত পিতার কঙ্কাল।-ছবি একুশে টেলিভিশন।

বগুড়ার সোনাতলায় নৃশংস এক খুনের ঘটনার রহস্য উদঘাটন করেছে জেলা পুলিশ। শুক্রবার (২৯ মে) বেলা ১১টার দিকে উপজেলার রানীরপাড়া এলাকায় রেললাইনের পাশে ধানক্ষেতে পুঁতে রাখা রফিকুলের মরদেহের কঙ্কাল উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় আটক করা হয় মৃত রফিকুলের স্ত্রী রেহেনা, মহিদুল, রেহেনার ভাগ্নে শাকিল ও ছেলে জসিমকে।

জানা যায়, ২০১৯ সালের ১ জুলাই সোনাতলা থানায় একটি হারানোর জিডি করা হয়েছিল (জিডি নং ২৫)। সেখানে জুন মাসের ১৫ তারিখ থেকে সোনাতলা সদর ইউনিয়নের রানীরপাড়া গ্রামের পেশায় কৃষক রফিকুল ইসলাম (৪৭) নামক এক ব্যক্তি নিখোঁজ আছে মর্মে জানানো হয়েছিল। জিডিটি করেছিলেন নিখোঁজ ব্যক্তির ভাই শফিকুল। যদিও তার স্ত্রী এবং তিনটি সন্তান ছিল বহাল তবিয়তে। কিন্তু তারা কেউই জিডি করেনি।

ঘটনার এক বছর পেরিয়ে গেলেও কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না রফিকুল ইসলামের। কিন্তু হাল ছাড়েনি সোনাতলা থানার পুলিশ। ঘটনার প্রায় এক বছর পর গত বৃহস্পতিবার রাতে তেকানি চুকাইনগরের শাকিল (২২) নামে এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়। তার কাছ থেকে উক্ত ঘটনার কিছুটা ইঙ্গিত পাওয়া গেলে আটক করা হয় নিখোঁজ ব্যক্তির স্ত্রী রেহানা এবং ছেলে জসিমকে। এরপর স্ত্রীর গোপন প্রেমিক মুহিদুলকে। 

জানা গেছে, মুহিদুল মৃত রফিকুলের প্রতিবেশী। নিবিড় জিজ্ঞাসাবাদে তারা একপর্যায়ে স্বীকার করে যে মুহিদুল, রফিকুলের বউ রেহানা, ছেলে জসিম এবং রেহানার বোনের ছেলে শাকিল মিলে রফিকুলকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে। শুধু হত্যা করেই ক্ষান্ত হয়নি, তার লাশ বস্তায় ভরে বাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে সোনাতলা রেললাইনের পাশে প্রায় তিনফুট গর্ত করে পুঁতে রাখে।

হত্যার কারণ অনুসন্ধানে জানা যায়, পরকীয়া প্রেমের পথের বাধা সরাতেই রফিকুলকে মেরে ফেলার প্ল্যান করে রেহানা এবং মুহিদুল। বাবার নামে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে ছেলেকে মানসিক ব্ল্যাকমেইল করে পক্ষে নিয়ে এসে পিতৃহত্যার মতো ঘৃণ্য কাজে জড়িত করে মা রেহানা। আর ঘটনাচক্রে জড়িয়ে যায় শাকিল। 

ঘটনার দিন মুহিদুল এবং জসিম ঘুমের বড়ি এনে রাতের খাবারের সাথে মিশিয়ে রফিকুলকে খাইয়ে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন করে গলা টিপে হত্যা করে। হত্যাকাণ্ডে চারজনই সক্রিয়ভাবে অংশ নেয়। এরপর শাকিল, মুহিদুল এবং জসিম লাশ ঘাড়ে করে রেললাইনের পাশে নিয়ে পুঁতে রাখে।

আজ পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা (পিপিএম বার) উপস্থিতিতে পানির মধ্যে মাটি খুড়ে রফিকুলের গলিত মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় একটি হত্যা-মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলেও জানায় পুলিশ।

এনএস/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি