ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

টাকার লোভে পাবনায় ৩ জনকে কুপিয়ে হত্যা করে মসজিদের ইমাম

পাবনা প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১৭:১২, ৭ জুন ২০২০ | আপডেট: ১৭:১৫, ৭ জুন ২০২০

পাবনার দিলালপুরে ভাড়া বাসায় একই পরিবারের ৩ জনকে খুনের ঘটনায় স্থানীয় মসজিদের ইমামকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তার নাম তানভীর হোসেন (২৫)। তাকে গ্রেফতারের পর হত্যাকাণ্ডের দায়ভার স্বীকার করে সে। 

জানা গেছে, দেড়বছর আগে নিহত নিঃসন্তান দম্পতির দুর্বলতার সুযোগ নেয় ইমাম তানভীর। মূলত টাকা-পয়সা ও স্বর্ণালংকারের লোভে এই দম্পতি ও তাদের পালিত মেয়েকে নৃশংসভাবে হত্যা করে ঘাতক তানভীর। 

লাশ উদ্ধারের ২৪ ঘন্টার মধ্যে এই লোমহর্ষক হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। গ্রেফতার হওয়া তানভীর নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার হরিপুর গ্রামের মৃত হাতেম আলীর ছেলে।

রোববার (৭ জুন) দুপুরে পাবনা পুলিশ লাইন মিলনায়তনে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান,পুলিশ সুপার শেখ রফিকুল ইসলাম। 

পুলিশ সুপার শেখ রফিকুল ইসলাম জানান,অবসরপ্রাপ্ত রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের কর্মকর্তা আব্দুল জব্বার ও তার স্ত্রী ছুম্মা খাতুন নি:সন্তান ছিলেন। মা-বাবা ডাক শুনতে শিশু সানজিদা নামের একটি মেয়কে পালক নেয় এই দম্পতি। এরই মধ্যে দেড় বছর আগে বাড়ির পাশে ফায়ার সার্ভিস মসজিদের ইমাম তানভীর সঙ্গে পরিচয় হয় তাদের। তানভিরের ব্যবহারে সন্তুষ্ট হয়ে তাকে সন্তান হিসেবে আপন করে নেন এই দম্পতি। তানভীরও তাদের বাবা-মা হিসেবে ডাকতে থাকেন। এরপর তাদের পরিবারের ব্যাংক,পোস্ট অফিসে টাকা লেনদেনসহ সকল কাজে তানভীরকে সাথে নিয়ে করতেন আব্দুল জব্বার। 

এরপর থেকে জব্বারের টাকা পয়সা ও স্বর্ণালংকারের দিকে লোভ জন্মায় তার। পরিকল্পনা করতে থাকে হত্যাকান্ডের। গত ২৯ মে মসজিদ থেকে ছুটি নিয়ে গ্রামের বাড়ি নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার হরিপুর গ্রামে চলে যায় তানভীর। ছুটি শেষ হওয়ার আগেই ৩১ মে পাবনা ফিরে আসে সে। ওইদিন রাতে ব্যাংক কর্মকর্তা আব্দুল জব্বারের বাড়িতে অবস্থান নেয় তানভীর। তারপর ঘটায় এই লোমহর্ষক ঘটনা।

ঘটনার দিন রাত ২টার দিকে ঘুমন্ত অবস্থায় আব্দুল জব্বার,তার স্ত্রী ছুম্মা খাতুন ও মেয়ে সানজিদা (১২) কে কুপিয়ে ও কাঠের বাটাম দিয়ে আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে। পরে ঠাণ্ডা মাথায় বাথরুমে গিয়ে শরীরে ও কাপড়ে রক্ত ধুয়ে গোসল করে। তারপর নগদ ২ লাখ টাকা, এক লাখ ভারতীয় রুপি ও স্বর্ণের গহনা লুট করে বাড়ীর গেটে তালা লাগিয়ে চলে যায়। তখন তার ইমামতি মসজিদে ফজরের আজান হচ্ছিল।

গত শুক্রবার (৫ জুন) দুপুরে ওই বাড়ি থেকে তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। আর ঘটনার রহস্য উদঘাটনে মাঠে নামে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাসের নেতৃত্বে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক টিম। অবশেষে তথ্য প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা শনিবার (০৬ জুন) রাতে নওগাঁর নিজ বাড়ি থেকে তানভীরকে গ্রেপ্তার করে। নৃশংস হত্যাকান্ডে জড়িত তানভীরের শাস্তি নিশ্চিতে সব ধরণের আইনগত প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হবে বলে জানান পুলিশ সুপার।

প্রেস ব্রিফিংয়ে অন্যান্যের মধ্যে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস, শামীমা আক্তার, সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইবনে মিজান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) খন্দকার রবিউল আরাফাত লেলিন, সদর থানার ওসি নাছিম আহম্মেদ, ডিবি পুলিশের ওসি ফরিদ হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
কেআই/
 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি