নড়াইলে ৩ জন নিহতের ঘটনায় বিক্ষোভ-ঝাড়ুমিছিল
প্রকাশিত : ২২:০৫, ১১ জুন ২০২০
নড়াইলে তিনজন হত্যার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির দাবিতে ঝাড়ুমিছিল ও বিক্ষোভ। ছবি: একুশে টেলিভিশন
নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের গন্ডব গ্রামে প্রতিপক্ষের হামলায় আপন চাচা-ভাতিজাসহ তিনজন নিহত হয়েছে। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এই হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের শাস্তির দাবিতে ঝাড়ুমিছিল ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১১ জুন) দুপুরে নড়াইল সদর হাসপাতাল চত্বর থেকে লাশ ঘাড়ে নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরে এসে শেষ হয়। এই বিক্ষোভ কর্মসূচিতে নিহতদের পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনসহ গন্ডব এবং চালিঘাট গ্রামের প্রায় এক হাজার নারী-পুরুষ অংশ নেয়।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কাশিপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান, মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা, আব্দুল আলিম প্রমুখ। বিক্ষোভ থেকে এই হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারপূর্বক যথাযথ শাস্তির দাবি তুলে বিভিন্ন শ্লোগান দেওয়া হয়। কর্মসূচি শেষে জেলা প্রশাসক আনজুমান আরার কাছে স্মারকলিপি দেয়া হয়।
এ ব্যাপারে লোহাগড়া থানার ওসি সৈয়দ আশিকুর রহমান বলেন, তিনজন হত্যার ঘটনায় এ পর্যন্ত ১২ জনকে আটক করা হয়েছে। এছাড়া এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এই ঘটনায় কোন মামলা দায়ের হয়নি বলে তিনি উল্লেখ করেন।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গত বুধবার (১০ জুন) দুপুরে লোহাগড়ার গন্ডব গ্রামে প্রতিপক্ষের হামলায় আপন চাচা-ভাতিজাসহ একই গ্রুপের তিনজন নিহত হন। এদের কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ হামলায় অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন- চাচা মোকতার মোল্যা (৬০) ও ভাতিজা আমিনুর রহমান হাবিল (৫৫) এবং রফিকুল ইসলাম (৩০)।
জানা যায়, নিহতদের বাড়ি গন্ডব গ্রামে। এরা সবাই কাশিপুর ইউনিয়নের গন্ডব গ্রামের সাবেক মেম্বার মিরাজ মোল্যার সমর্থক। ওই গ্রামের বাসিন্দা জেলা পরিষদ সদস্য সুলতান মাহমুদ বিপ্লব গ্রুপের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে মিরাজ মোল্যা গ্রুপের দ্বন্দ্ব-সংঘাত চলে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত বুধবার দুপুরে মিরাজ মোল্যা গ্রুপের খালিদ বাজারে যাওয়ার পথে গন্ডব গ্রামের বটতলায় তাকে হাতুড়িপেটাসহ মারধর করে প্রতিপক্ষ বিপ্লব গ্রুপের লোকজন। মিরাজ মোল্যা গ্রুপের লোকজন এ ঘটনার প্রতিবাদ করলে প্রতিপক্ষ বিপ্লব গ্রুপের লোকজন তাদের (মিরাজ) লোকজনের ওপর ধারালো অস্ত্র, লাঠি, ঢাল-সড়কিসহ হামলা চালায় বলে অভিযোগ রয়েছে।
এ ছাড়া এ হামলায় চাচা মোকতার মোল্যা, ভাতিজা আমিনুর রহমান হাবিল ও রফিকুল ইসলামসহ মিরাজ মোল্যা গ্রুপের অন্তত ১৫ জন আহত হন। আহতদের নড়াইল সদর হাসপাতালে আনা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মোকতার মোল্যা ও আমিনুর রহমান হাবিলকে মৃত ঘোষণা করেন। এছাড়া গুরুতর আহত রফিকুলকে যশোর নেয়ার পথে তিনি মারা যান। আহতদেরকে নড়াইল সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে, নিহতদের লাশ বৃহস্পতিবার (১১ জুন) আসর নামাজ বাদ গন্ডব গ্রামে দাফন করা হয়েছে।
এএইচ/
আরও পড়ুন